খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  অ্যান্টিগা টেস্ট: প্রথম দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তুলল ২৫০, বাংলাদেশ পেল ৫ উইকেট

যেসব পণ্যে পড়তে পারে বাজেটের উত্তাপ

গেজেট ডেস্ক

আগামী ১ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেটের সম্ভাব্য আকার হতে যাচ্ছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। যেখানে আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। আর দেশের জিডিপির আকার ৫০ লাখ ৬ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা করা হচ্ছে। মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫ থেকে ৬ দশমিক ৬ শতাংশের মধ্যে আটকে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে অর্থমন্ত্রীর।

বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ কোটি টাকা। যেখানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।

আইএমএফের শর্ত পূরণ ও জনস্বার্থে কিংবা দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় আগামী ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেটে বিভিন্ন ধরনের পণ্যে শুল্ক ও কর আরোপ কিংবা ছাড়ের প্রস্তাবনা আসতে পারে। এসব কারণে সার্বিকভাবে অনেক পণ্যের দাম বাড়তে পারে। তবে কিছু পণ্যের দাম কমতেও পারে।

যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে

মাংস : এবারের বাজেটে মাংস ও মাংসজাত পণ্যকে নিত্যপণ্যের ক্যাটাগরিতে আনার প্রস্তাব আসতে পারে। এর উদ্দেশ্য নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাওয়া পণ্যটির দাম কমিয়ে আনা। এ পণ্যের উৎসে অগ্রিম আয়কর ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করা হতে পারে। অগ্রিম আয়কর কমালে মাংসের দাম কমতে পারে।

দেশীয় বৈদ্যুতিক এলইডি বাল্ব ও সুইস-সকেট : কমতে পারে দেশীয় বৈদ্যুতিক এলইডি বাল্ব ও সুইস-সকেটের দাম। দেশীয় উৎপাদনকে আরও উৎসাহিত করতে আমদানি শুল্ক ও সম্পূরক শুল্ক ২০-২৫ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। আসন্ন বাজেটে ওই ১০-৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব আসছে বাজেটে। সে হিসাবে দেশীয় এলইডি বাল্ব ও সুইস-সকেট মিলতে পারে তুলনামূলক কম দামে।

মিষ্টি জাতীয় পণ্য : দাম কমার তালিকায় আরও রয়েছে মিষ্টি। কারণ মিষ্টির ওপর ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হচ্ছে। এর সঙ্গে মিষ্টি জাতীয় আরও কিছু প্যাকেটজাত পণ্যেও ভ্যাট কমানো হচ্ছে।

অভিজাত বিদেশি পোশাক : আসন্ন বাজেটে অভিজাত বিদেশি কাপড় আমদানির ওপর শুল্ক কমানো বা অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে। ফলে বিলাসবহুল কাপড়ের শুল্ক যদি কমানো হয়, তাহলে কম দামে পাওয়া এসব পোশাক।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, এসব পণ্যে শুল্ক-কর ২০-২৫ কমিয়ে ৫ থেকে ১০ করা হতে পারে।

ই-কমার্সের ডেলিভারি চার্জ : বর্তমানে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের বিক্রয়ের উপর ৫ শতাংশ হারে মূল্য সংযোজন কর (মূসক), ডেলিভারি চার্জের উপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট, বাড়ি ভাড়ার উপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রদান করতে হয়। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি মেনে নিয়ে বিক্রয়ের উপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে। ফলে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো ভ্যাট অব্যাহতি পেলে কমবে ডেলিভারি চার্জ।

এছাড়া বাজেটে শুল্ক ছাড়ের কারণে কমতে পারে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত কৃষি যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রপাতি তৈরির সরঞ্জামের দাম।

দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের

দামি গাড়ি : আগামী অর্থবছরের বাজেটে দামি গাড়ির ওপর নতুন করে আরোপ হতে পারে। ফলে বাজেটে দামি গাড়ি আরও দামি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০০১ সিসি থেকে ৩০০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ি আমদানিতে এখন ২০০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বসে। যেটা বাড়িয়ে ২৫০ শতাংশ এবং ৩০০১ থেকে ৪০০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ৩৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করে ৫০০ শতাংশ করা হতে পারে।

২০০০ সিসির বেশি ইঞ্জিন ক্ষমতাবিশিষ্ট গাড়ি সাধারণত জিপগাড়ি হয়। এখন দেশে বিপুলসংখ্যক জিপগাড়ি কিংবা এসইউভি মডেলের গাড়ি আসছে। জনপ্রিয় হচ্ছে জিপগাড়ির ব্যবহার। টয়োটা, মিতসুবিশি, নিশান, টাটাসহ নানা খ্যাতনামা কোম্পানির গাড়ির ব্যবহার বাড়ছে।

নির্মাণ সামগ্রী : গত এক বছরে রড, সিমেন্ট, ইট ও অন্যান্য পণ্যের দাম ২০ শতাংশের বেশি বেড়ে গেছে। এতে অনেক প্রকল্পের কাজ ৫০-৬০ শতাংশ সম্পন্ন হয়ে থেমে আছে। দেশে ক্রমাগত নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়তে থাকার মধ্যেই সিমেন্টের কিছু পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়তে পারে আগামী বাজেটে।

ভূমি ও ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন : রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও চট্টগ্রাম ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (সিডিএ) এলাকায় জমি নিবন্ধনের ট্যাক্স বিদ্যমান ৩ শতাংশ ও ৪ শতাংশ থেকে বেড়ে যথাক্রমে ৪ শতাংশ ও ৫ শতাংশ হতে পারে। এছাড়া ফ্ল্যাট বিক্রিতে বিদ্যমান গেইন ট্যাক্স বাড়তে পারে। ফলে আগামী অর্থবছর থেকে উভয় ক্ষেত্রে বাড়তি খরচ গুণতে হবে।

সিগারেট : বাড়তি বাজেট বরাদ্দ করতে হবে ধূমপায়ীদের। কারণ বাজেটে সব ধরনের সিগারেটের দাম বাড়ানো হচ্ছে। নিম্নস্তরের এক প্যাকেট (২০ শলাকার) সিগারেটের (যেমন-হলিউড, ডার্বি) দাম ৯০ টাকা, মধ্যম স্তরের (স্টার, নেভি) ১৩৪, উচ্চস্তরের (গোল্ডলিফ) ২২৬ এবং অতি উচ্চস্তরের (বেনসন, মালবোরো) সিগারেটের দাম ৩০০ টাকা করা হচ্ছে। পাশাপাশি বাড়ানো হচ্ছে জর্দা-গুলের দামও। তবে বিড়ির দাম অপরিবর্তিত থাকবে।

বাসমতি চাল : ধনীদের চাল হিসেবে খ্যাতি পাওয়া বাসমতি চাল আমদানিতে ভ্যাট বসানো হচ্ছে। এতে চালের দাম বাড়তে পারে। এতে বিরিয়ানি কিংবা কাচ্চির দামও বাড়তে পারে।

কাজুবাদাম : সুস্বাস্থ্যের জন্য কাজুবাদাম অনেকের কাছেই জনপ্রিয়। দেশে বাদাম চাষকে উৎসাহিত করতে কাজুবাদাম আমদানিতে শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৩ শতাংশ করা হচ্ছে। তাই আমদানি করা কাজুবাদামের দাম বাড়তে পারে।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!