খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ পৌষ, ১৪৩১ | ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’ আজ

বাঘারপাড়ায় রেহেনা হত্যার রহস্য উৎঘাটন, হত্যাকারী মিন্টুর স্বীকারোক্তি

যশোর প্রতিনিধি

যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার আরজি বল্যামুখ এলাকার বালিয়াডাঙ্গা বামনহাটির নির্জন কাঁচা রাস্তার পাশে রেহেনা খুনের রহস্য উৎঘাটন করেছে পিবিআই। রেহেনা হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে খুলনার তেরখাদা উপজেলার কুশলার চর গ্রামে শ্বশুর শাহজাহান মোল্লার বাড়ি থেকে মিন্টু মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়। আটক মিন্টু (২৮) নড়াইল জেলা সদরের সিঙ্গিয়া গ্রামের খাজা মোল্লার ছেলে।

তাকে আদালতে হাজির করা হলে রেহেনা হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে আদালতে। টাকা নিয়ে বিরোধের জেরধরে প্রেমিক নয়ন পরিকল্পিত ভাবে রেহানাকে হত্যা করে। এ হত্যাকান্ডের সাথে তারা তিনজন জড়িত বলে জানিয়েছেন মিন্টু মোল্লা।

সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শম্পা বসুর কাছে জবানবন্দিতে মিন্টু মোল্লা জানায়, সে ভাংড়ির ব্যবসা করে। তার আপন মামাত ভাই নয়ন। নয়ন বিদেশ থেকে ৫ মাস আগে বাড়িতে এসেছে। নয়নের সাথে ঝিনাইদহ চরপাড়ার রেহানার সাথে প্রেম ছিল। নয়ন ও রেহানা গাজিপুরে ছিল। গত মার্চ মাসে নয়ন ও ইমামুল তার ইঞ্জিন চালিত ভ্যান নিয়ে মাগুরার আড়পাড়া যায়। আড়পাড়া যেয়ে নয়ন রেহানাকে ফোন দিলে সে আড়পাড়া আসে। এরপর তারা একসাথে ভ্যানে সীমাখালি হয়ে বাঘারপাড়ার বালিয়াডাঙ্গা বাজারে নেমে যায়। রেহানা ও নয়ন গলা জড়িয়ে ধরে নির্জনস্থানে চলে যায়। এরপর নয়ন রেহানার গলা চেপে ধরলে সে মাটিতে পড়ে যায়। রেহানার মুখ চেপে ধরে ইমামুল। মিন্টু তার পা ধরলে নয়ন চাকু দিয়ে গলা কেটে রেহেনাকে হত্যা করে। নয়ন রেহানার মোবাইল ফোন নিয়ে নেয় ও লাশ ফেলে রেখে চলে যায়। নয়ন নিহত রেহানার মোবাইল ফোন মিন্টুকে ব্যবহার করতে দিয়েছিলো। মোবাইলের সূত্র ধরে পুলিশ তাকে আটক করেছে বলে সে জানিয়েছে।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ঝিনাইদাহ হরিনাকুন্ডু থানার চরপাড়া গ্রামের মফিজুল ইসলামে মেয়ে রেহানার ১০বছর আগে নড়াইল সদরের সিঙ্গিয়া গ্রামের মিরাজের সাথে বিয়ে হয়। মিরাজ মানসিক রোগী হলে রেহানা তার পিতার বাড়ি চলে যায়। এরমধ্যে রেহানার চাচাতো দেবর নয়নের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। দুজনেই বিদেশে যায় ও কয়েক বছর পরে দেশে ফিরে আসে।

সর্বশেষ গত ২১ মার্চ দুপুরে বাঘারপাড়া পুলিশের ফোন পেয়ে থানায় যেয়ে স্বজনেরা রেহানার লাশ শনাক্ত করে। নয়ন ও তার সহযোগীরা রেহানাকে গলা কেটে হত্যার করে বালিয়াডাঙ্গা-বামনহাটি কাঁচা রাস্তার পাশের একটি পতিত জমিতে ফেলে রেখে যায়। এ ব্যাপারে নিহতে মা শাহিদা বেগম বাদী হয়ে অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ ও পরে পিবিআই তদন্তের দায়িত্ব পায়। তদন্তকালে নিহত রেহানার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের সন্ধানে নামে পুলিশ। একপর্যায়ে তারা এ ফোনটি খুলনার তেরখাদার কুশলারচর গ্রামে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে নিশ্চিত হয়। এরপর মঙ্গলবার পিবিআই সদস্যরা অভিযান চালিয়ে মিন্টু মোল্লার শ্বশুর বাড়ি থেকে তাকে আটক ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করে। বুধবার আটক মিন্টু মোল্লাকে যশোর আদালতে সোপর্দ করা হলে হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ওই জবানবন্দি দিয়েছে।

খুলনা গেজেট/এআইএন




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!