যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার আস্তায়খোলা গ্রামের মো: শরীফুল ইসলাম হত্যা মামালায় ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে এ মামলার পলাতক আসামি জিয়াকে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং অবশিষ্ট ৬ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো, জিয়াউর রহমান জিয়া (পলাতক), আব্দুল্লাহ (পলাতক) ইকবাল (পলাতক), আলম, কামাল ও নাঈম। এদের মধ্যে জিয়া ব্যতীত বাকী সকলকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বিভাগীয় (জেলা ও দায়রা ) জজ আদালতের বিচারক মোঃ নজরুল ইসলাম হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ঘটনাটি ২০১৫ সালের ৯ জুনের। ঐ দিন সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে এনামুল ও শরীফুল বাড়ির কাজ দেখাশুনা করার জন্য ধলগ্রামের দিকে যাচ্ছিল। তাদের কাছে নগদ এক লাখ ২৫ হাজার টাকা ছিল। পথিমধ্যে তকব্বর নামে এক আসামি তাদের গতিরোধ করে। পাশে অবস্থানরত অন্য সন্ত্রাসীরা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে ওই আসামির বাড়ি নিয়ে যায়। দেশীয় তৈরি অস্ত্র রাম দা ও লোহার রড়সহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের শরীরের বিভিন্নস্থানে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা।
আস্তায়খোলা গ্রামের নাইম লোহার রড দিয়ে শরীফুল ইসলামকে হত্যার উদ্দেশে মাথার পিছনে পরপর কয়েকটি আঘাত করে। তাদের ডাক চিৎকারে আশপাশের মানুষ ও বড় ভাই শাহ আলম ঘটনাস্থলে আসলে তাদের ওপরও আক্রমণ করে দুর্বৃত্তরা। আসামিরা এনামুল ও শরীফুলের নিকট থেকে নগদ এক লাখ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে বীরদর্পে চলে যায়। তাদের দু’জনকে নিয়ে যশোরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শরীফুলের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হলে ঘটনার পরেরদিন তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ব্যাপারে ঘটনার দিন নিহতের চাচাতো ভাই মো: শাহ আলম বাদী হয়ে ১২ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলো, ইকবাল হোসেন, আব্দুল্লাহ, জিয়াউর রহমান, আলম, কামাল, আলম, রুবেল, আবু তালেব, আবু বক্কার, হাসমত, তকব্বর ও নাইম।
মামলা দায়েরের পর পুলিশ তকব্বর ও নাইমকে রিমান্ডে নেয়। তারা দু’জন হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় ও উল্লেখিত আসমিদের নাম বলে তারা।
মূলত পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও ধলগ্রামের জের ধরে প্রায় উল্লেখিত আসামিরা বাদী ও তার পরিবারের ক্ষতি করবে প্রায় এ রকম হুমকি দিত বলে এজাহার ও চার্জশিটে উল্লেখ আছে। তার জের ধরে এ ঘটনার সূত্রপাত। তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাঘারপাড়া উপজেলার নারকেল বাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ শরজিৎ কুমার ঘোষ ১২ জনকে আসামি করে একই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
খুলনা গেজেট/এনএম