বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকার ভূমি দস্যু ও জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাবেক সেনা সদস্য মোঃ মোশাররফ হোসেন নামের এক ব্যক্তি। শনিবার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০১৭ সালে চিতলমারী উপজেলার চিতলমারী-আড়ুয়াবর্নি মৌজায় ফনিভূসন মন্ডলের মালিকানাধীন ৬৫ শতক জমি ক্রয় করে বসত ঘর নির্মান করে শান্তিতে বসবাস করছি। কিন্তু স্থানীয় প্রতারক ও জালিয়াত চক্রের হোতা গোলাম মোস্তফা লিন্টু সরদার, গোলাম ফারুক বুলু, মুন্সি দেলোয়ার হোসেন, মর্তুজা সরদার, হান্নান মুন্সি ও সেলিম মুন্সি আমাকে জমি থেকে উচ্ছেদের পায়তারা চালাচ্ছে। দেলোয়ার মুন্সি ও লিন্টুর লোকজন আমার বাড়ির চারপাশে রাত-বিরাতে ঘোরা ফেরা করে। আজে বাজে কথা বলে, বাড়িতে থাকা নারীদের উত্তক্ত করে। যাতে আমি বাড়ি ছেড়ে চলে যাই। কয়েকটি ভুয়া দলিল সৃষ্টি করে আমার জমি দখলের চেষ্টা করছে দেলোয়ার ও তার সহযোগিরা।
মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, চিতলমারী উপজেলার চিতলমারী-আড়ুয়াবর্নি মৌজায় আমার ক্রয়কৃত ৬৫ শতক জমির সিএস ও এসএ রেকর্ডীয় মূল মালিক ছিলেন দূর্গাচরণ। দূর্গাচরণ তার জীবদ্দশায় তার ওয়ারেশদের মাঝে দানপত্র দলিলের মাধ্যমে তার সকল সম্পত্তি বন্টন করে যান। সেই সূত্রে ফনিভূসন মন্ডল ৯৩ শতক জমির মালিক হন। যার মধ্য থেকে আমি ৬৫ শতক জমি ক্রয় করি। অন্যদিকে ফনিভূসনের চাচাতো ভাই মনিন্দ্রনাথ মন্ডল ১ একর ৮৫ শতক জমির মালিক হন। মনিন্দ্রনাথ মন্ডলও ১৯৭৪ সালে বিভিন্ন ক্রেতার কাছে তার সম্পূর্ণ জমি বিক্রি করেন। কিন্তু এই জাল জালিয়াত প্রতারক চক্রটি ১৯৮৪ সালে মনিন্দ্রনাথ মন্ডলকে দাতা সাজিয়ে খুলনা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে ৮টি জাল দলিল সৃষ্টি করেন। কিন্তু বিভিন্ন অফিসিয়াল তথ্যে দেখা যায় ১৯৬৩ সালের পর থেকে বাগেরহাট সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে দলিল সম্পন্ন হয়েছে। জালিয়াতি চক্রের সক্রিয় সদস্য দেলোয়ার হোসেন দিলুসহ তার সদস্যরা জালিয়াতির উদ্দেশ্যে খুলনা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে এই দলিল সম্পন্ন করেছে। আসলে তাদের ওই দলিলগুলো সম্পূর্ণ ভুয়া। এসব দলিলের বিরুদ্ধে আাদালতে মামলাও রয়েছে। আমরা এই জালিয়াত চক্রের হাত থেকে মুক্তি চাই।
মোশাররফের সাথে থাকা আব্দুর রহমান শেখ বলেন, গোলাম মোস্তফা লিন্টু সরদার, গোলাম ফারুক বুলু, মুন্সি দেলোয়ার হোসেন, শুধু মোশাররফের জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে বিষয়টি তা নয়েএই চক্রটি এলাকার অনেকের জমি জবর দখল করে ভোগ করছেন। অনেককেই হয়রানি করছেন তারা। এই প্রতারক চক্রটির হাত থেকে বাঁচাতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সংবাদ সম্মেলনকারীরা।
তিনি আরও বলেন, গোলাম মোস্তফা লিন্টু সরদার, গোলাম ফারুক বুলুসহ অন্যরা চিতলমারী বাজারের তাদের পূর্বসূরী সাত দাদার সম্পত্তি জবর দখল করে ভোগ করে আসছেন। ঝালকাঠি নিবাসি মৃত জোমাদ্দার বাবার আলীর ১ একর ৮৮ শতক সম্পত্তি জোর করে ভোগ করত। সেই জমি পরবর্তীতে মালিকদের ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছে। এই চক্রটির বিরুদ্বে সঠিক তদন্ত হলে মূল অপরাধি;রে মুখোশ খুলে যাবে বলে দাবি করেন তিনি।
অভিযুক্ত গোলাম মোস্তফা লিন্টু সরদার বলেন, আমি কারও জমি দখলের চেষ্টা করিনি। মোশাররফের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মামলা রয়েছে। মামলার রায়ে বোঝা যাবে, কে কাকে হয়রানি করছেন। কো কার জমি দখল করেছেন।