বাগেরহাটের চিতলমারীতে জমি দখলকারীদের হামলায় এক পরিবারের নারীসহ অন্তত ছয় জন আহত হয়েছেন। সোমবার ভোরে চিতলমারী উপজেলার কালীগঞ্জ বাজারস্থ পিপড়াডাঙ্গা এলাকার হেলাল সরদারের নেতৃত্বে জাহিদুল ইসলাম মোল্লার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও জমি দখল নিতে আসলে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ খবর পেয়ে চিতলমারী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দখলকারীদের ছত্র ভঙ্গ করে দেয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
আহতরা হলেন, কালীগঞ্জ বাজারস্থ পিপড়াডাঙ্গা এলাকার মৃত জোহর আলী মোল্লার স্ত্রী আলেয়া বেগম, ছেলে জাহিদুল ইসলাম মোল্লা, জাহিদুলের স্ত্রী রীনা বেগম, জাহিদুলের ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম, বোন রুমিচা বেগম, বোন জামাই ইরান সরদার।এছাড়া এসময় জমি দখল করতে আসা হেলাল সরদারের পক্ষের শামীম নামের একজন আহত হন।
আহতদের উদ্ধার করে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে স্থানীয়রা। আহতদের মধ্যে জাহিদুল মোল্লার অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেছে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আলেয়া বেগম বলেন, ‘ভোরে ফজরের নামাজ পরে বাইরে বের হয়ে দেখি আমাদের জমিতে হেলাল সরদার ও উকিল মোল্লার নেতৃত্বে ২০-৩০ জন লোক বসতঘর জমি দখল করতে আসে। এসময় দুই ছেলে, মেয়ে, ছেলের বউসহ আমরা বাঁধা দিতে গেলে তারা আমাদের উপর হামলা চালায়। তাদের মধ্যে একজনের হাতে থাকা একটি বোতলের মুখে আগুন ধরিয়ে আমাদের ঘরের উপর ছুড়ে মারে। এতে ঘরের সামনে থাকা খড়ের গাঁদায় (কুটোর পালা) আগুন ধরে যায়। আমাদের টিনের চালের উপর ইট ছুড়ে মারে এবং আমাদের ঘরে হামলা চালায়।আমার ছেলের দোকান ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে দোকানে থাকা বেশকিছু নগদ টাকা নিয়ে যায়। আমি এর বিচার চাই।’
আহত জাহিদুলের ছোট ভাই ছাত্রলীগ নেতা অহিদ বলেন, ‘পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হেলাল সরদার ও উকিল মোল্লার নেতৃত্বে বড় ভাই জাহিদুলকে হত্যার উদ্দেশ্যে কয়েকটি কোপ দেয়। আমার ভাইয়ের অবস্থা খুব খারাপ। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসেছি বাঁচবে কিনা জানিনা। এছাড়া হামলার সময় তারা আমাদের বাড়ি ও দোকানেও তান্ডব চালিয়ে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুটে নিয়ে যায়। আমরা এর বিচার চাই।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য হেলাল সরদার ও উকিল মোল্লার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ মামুন হাসান বলেন, ‘সকাল ৯টার দিকে বেশ কয়েকজন কাটাফাটা রোগী আসেন হাসপাতালে। এদের মধ্যে কয়েকজনকে এখানে ভর্তি করা হয়েছে। পিপড়াডাঙ্গা এলাকার জাহিদুল মোল্লা নামের একজনের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। জাহিদুলের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কোপের দাগ রয়েছে।’
চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শরিফুল হক বলেন, ‘মুঠোফোনের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। আবারও কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করেছি। উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছে। কেউ লিখিত অভিযোগ করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
খুলনা গেজেট/এনএম