বাগেরহাটে জমতে শুরু করেছে পশুর হাট। শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকাল থেকেই জেলার হাটগুলোতে দেশী-বিদেশী নানা জাতের গরুর পাশাপাশি ছাগল ও মহিষ বিক্রি চলছে। তবে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি মানছেন না ক্রেতা বিক্রেতাসহ দর্শনার্থীরা। জরিমানার পরেও পশুরহাটে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা যাচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা বেগম।
বিকেলে বাগেরহাট জেলার সব থেকে বড় পশুর হাট ফকিহাটের বেতাগায় প্রচুর গরু ও মানুষের ভীড় দেখা যায়। ক্রয়-বিক্রয়ও ছিল ভাল। বড় বড় গরুর পাশাপাশি ছাগল, মহিষও ছিল হাটে। কেউ ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন, আবার কেউ বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে আসছেন গরু। কেউ আবার অপেক্ষা কাঙ্খিত দামে আদরের পশু বিক্রির জন্য। উপজেলা প্রশাসন ও ইজারাদারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে মাইকিং করা হচ্ছে। তারপরও কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানছে না ।
হাটে গরু বিক্রি করতে আসা গৃহস্থ মোঃ ইব্রাহিম শেখ বলেন, ছয় ও সাত মন ওজনের দুটি ষাড় নিয়ে এসেছি। ক্রেতারা গরু দেখলেও, উপযুক্ত দাম বলছেন না। উপযুক্ত দাম পেলে বিক্রি করে দিব।
বেতাগা বাজারে শরণখোলা থেকে ৪৭ গরু নিয়ে এসেছেন ব্যাপারি আব্দুর রহিম। তিনি বলেন, বাচ্চা ও ষাড় মিলে ৪৭টি গরু নিয়ে হাটে এসেছি। ১৫টির মত বিক্রি করেছি। সামান্য লাভ হয়েছে। কিন্তু সবগুলো যদি আজকে বিক্রি করে যেতে পারি, তাহলে ভাল আয় হবে। না হলে শ্রমিকদের বেতন দিয়ে একটু কষ্ট হয়ে যাবে।
ব্যপারি ইকবাল মোড়ল বলেন, ৬টা গরু নিয়ে এসেছি। চারটা বিক্রি করেছি। তবে ছোট গরুর চাহিদা অনেক বেশি।
গরু ক্রেতা বাবুল মোল্লা বলেন, হাটে আসলাম। অনেকক্ষন ঘুরে কালো রংয়ের একটি গরু ক্রয় করেছি। বিক্রেতারা অনেক বেশি দাম চায়, দরাদরি করে কিনতে হয়।
তিনটি গরু নিয়ে মাস্ক ছাড়াই দাঁড়িয়ে আছেন হালিম নামের এক ব্যবসায়ী। মাস্ক পড়েননি কেন, জানতে চাইলে বলেন মাস্ক আছে পকেটে। দুই কিশোরসহ গরু ক্রয় করতে এসেছেন মুজিবুর রহমান নামের ষাটোর্ধ্য এক বৃদ্ধ। বৃদ্ধের মুখে মাস্ক থাকলেও, কিশোরদের মুখে ছিল না মাস্ক। মাস্ক না পড়ার কারণ হিসেবে মুজিবুর রহমান বলেন, বছরে একবারই কোরবানি আসে। এই সময় এত নিয়ম কানুন দিলে বাচ্চারা আনন্দ করবে কিভাবে? তবে মাস্ক পড়া ও হাত ধোয়ার বিষয়ে হাটের ইজারাদার ও প্রশাসনের কঠোর অবস্থান ছিল।
বেতাগা হাটের ইজারাদার আনন্দ দাসের পক্ষে ভাই অসীত দাস বলেন, কোরবানি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত প্রথম হাটেই প্রায় ১০ হাজার গরু উঠেছে। বিক্রিও হয়েছে বেশ ভাল। আমরা স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত ও মাস্ক পড়ানোর জন্য অনেক চেষ্টা করছি। তেব কেউ মানছেন, আবার কেউ মানছেন না। আসলে অনেক লোকের সমাগম হলে একটু কষ্টসাধ্য ব্যাপার সবকিছু মানানো।
ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা বেগম বলেন, ফকিরহাটে দুটি স্থায়ী পশুর হাট রয়েছে। দুটি হাটই আজ চালু হয়েছে। প্রতিটি হাটে আসা মানুষের জন্য বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। সেই সাথে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। দুই ধরণের স্বেচ্ছাসেবকরা হাতধোয়া ও মাস্ক পরিধান নিশ্চিতে কাজ করছে। এরপরেও কিছু মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করায়, আমরা কিছু মানুষকে জরিমানাও করেছি। সর্বোপরি মানুষ সচেতন না হলে, পশুর হাটে স্বাস্থবিধি নিশ্চিত করা খুবই কঠিন বিষয়।
খুলনা গেজেট/ টি আই