খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  অ্যান্টিগা টেস্ট: ৪৫০ রানে ইনিংস ঘোষণা ওয়েস্ট ইন্ডিজের, দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ৪০/২

বাগেরহাটে এক মাসে ১২২ শতাংশ বেড়েছে করোনা সংক্রমণ

বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাটে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। গেল এক মাসে (মে মাসে) জেলার ৯ উপজেলায় ২‘শ ৫২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। যেখানে ২০২০ সালের মে থেকে ৩০ এপ্রিল অর্থ্যাৎ ১২ মাসে পর্যন্ত এক হাজার ৩‘শ ৬২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। সেই হিসেবে গেল ১২ মাসের তুলনায় এই মাসে আক্রান্তের হার বেড়েছে একশ ২২ শতাংশ।

এই সময়ে মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েছে এই ২’শ ২৭ শতাংশ। করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর এই উর্দ্ধোমুখী সংক্রমণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। সংক্রমণ ঠেকাতে নানা পদক্ষেপের পাশাপাশি কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির।

বাগেরহাট সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের মে মাসের প্রথম দিকে বাগেরহাটে করোনা শনাক্ত হয়। এরপর থেকে বাড়তে থাকে শনাক্ত ও মৃত্যুর হার। ২০২০ সালের মে মাস থেকে ২০২১ সালের ০১ জুন পর্যন্ত বাগেরহাট জেলায় ১ হাজার ৬‘শ ১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ৪২ জন। সুস্থ্য হয়েছেন এক হাজার ৬’শ ৬২ জন। শনোক্তের দিক দিয়ে সব থেকে উপরের দিকে রয়েছে বাগেরহাট সদর উপজেলা। এই উপজেলায় এ পর্যন্ত ৬‘শ ৬৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর পরেই রয়েছে ফকিরহাট। এই উপজেলা ২’শ ৩৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সব থেকে বিপদজনক অবস্থায় রয়েছে মোংলা উপজেলা। এখন পর্যন্ত বন্দর নগরীর এই উপজেলায় ১৮৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে গেল এক সপ্তাহে ৬৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় শনাক্ত হয়েছে ৩৩ জনের। এ কারণে এই উপজেলায় আট দিনের কঠোর বিধি নিষেধ জারি করেছে প্রশাসন।

মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার বলেন, ঈদের পরে হঠাৎ করে মোংলা উপজেলায় করোনা সংক্রমনের হার বেড়ে যায়। সংক্রমণ ঠেকাতে উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে সংক্রমিত কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করেছি। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েণ করা হয়েছে। মাস্ক পরিধান, জরুরি পরিবহন ব্যতীত অন্য যানবাহন বন্ধ, ঔষধ, জরুরি কৃষিপণ্য ব্যতীত সকল দোকানপাট বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এর বাইরে সকাল ০৬ টা হতে বিকেল ০৩ টা পর্যন্ত কাঁচাবাজার, মুদিবাজার, মাংস, মাছ ও ফলের দোকান খোলা রাখা যাবে। হোটেল রেস্টুরেন্ট খোলা থাকলেও বসে খাওয়া যাবে না, পার্সেল নেয়া যাবে।

তিনি আরও বলেন, বন্দর কেন্দ্রিক সংক্রমণ রোধে মোংলা পোর্ট এলাকার লাইটার জাহাজ, বড় জাহাজ লঞ্চ হতে কেউ পৌর এলাকায় নামতে বা প্রবেশ করতে পারবে না। প্রয়োজনে জাহাজে বাজার বা খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেয়ার ব্যবস্থা করবে মোংলা পোর্ট পৌরসভা। নদী পারাপারের ক্ষেত্রে এক সাথে এক নৌকা বা ট্রলারে সর্বোচ্চ ১৬ জনকে পার হতে পারবে। তবে অবশ্যই মাস্ক পরে নৌকা বা ট্রলারে উঠতে হবে। সর্বোপরি আমরা চেষ্টা করছি যাতে সংক্রমনের হার কম থাকে।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির বলেন, গেল মাসে বাগেরহাটে করোনা সংক্রমণ পূর্বের তুলনায় বেশ বেড়ে গেছে। সংক্রমণের ঊর্ধ্বোগতি ঠেকাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনার পাশাপাশি আমরা নানা উদ্যোগ নিয়েছি। সেই সাথে জনগণকে সচেতন করতে মাইকিং এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। তবে আমরা যত চেষ্টা করি না কেন জনগণকে সচেতন হতে হবে। নিজের স্বাস্থ্য ও জীবনের প্রতি নিজেকে খেয়াল রাখতে হবে।সর্বোপরি করোনা সংক্রমন রোধে সকলকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার অনুরোধ জানান স্বাস্থ্য বিভাগের এই কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেন, বাগেরহাটের মানুষের মধ্যে করোনা ভাইরাসের এন্টিবডি তৈরির জন্য আমরা যথেষ্ট চেষ্টা করেছি। এ পর্যন্ত আমরা ৭টি ধাপে ৯৯ হাজার ডোজ টিকা পেয়েছি। এর মধ্যে ৫৪ হাজার ৪‘শ৮৪ জন প্রথম ডোজ এবং ৪০ হাজার ৭‘শ ৫৪ জনকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। টিকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে আরও মানুষকে টিকা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

 

খুলনা গেজেট/এমএইচবি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!