বাগেরহাটে সন্ত্রাসী হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা আনারুল শেখ নিহতের এক মাস পার হলেও, ধরা ছোয়ার বাইরে রয়েছে মূল আসামীরা। এতদিনেও মূল আসামীরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন পরিবারের সদস্যরা। অতিদ্রুত আসামীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন হত্যার শিকার আওয়ামী লীগ নেতার স্বজনরা।
এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্যকে হারিয়ে নিস্ব হয়ে পড়েছে পরিবারটি। চরম আর্থিক সংকটে দিন কাটছে স্ত্রী-সন্তানদের। পেটের টানে বাড়ির সামনে রেখে যাওয়া নিহত স্বামীর মুদি দোকান চালাচ্ছেন স্ত্রী মাহফুজা বেগম। তিনি বলেন, আমার স্বামীর আয়ে-ই আমাদের সংসার চলত। সেই তাকেই হত্যা করে আমাদের নিস্ব করে ফেলেছে সন্ত্রাসীরা। আমরা এখন না খেয়ে মরার উপর মত অবস্থা। সে একটি ছোট মুদি দোকান রেখে গেছিল, মোটামুটি সেই দোকানে এখন আমি বসি। ওই দোকান থেকে যা আসে, তাই দিয়ে খেয়ে না খেয়ে আমাদের সংসার চলে।
তিনি আরও বলেন, আমার সন্তানদের যারা এতিম করেছে, আমাকে যারা বিধবা করেছে, আমি তাদের সকলের ফাসি চাই।
নিহতের বড় ভাই কামরুল শেখ বলেন, ১৩ জন আসামীর মধ্যে পুলিশ তিনজন আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে। এখনও মূল আসামী সোহেল হাওলাদার ওরফে কালা সোহেল, রাকা, মনি মল্লিক ওরফে বলদ মনি, গনেশসহ মূল আসামীরা গ্রেপ্তার হয়নি। তারা এখনও নিয়মিত ফেসবুক চালিয়ে বেড়াচ্ছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল আসামীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
নিহতের ছোট ভাই বাচ্চু শেখ বলেন, যারা প্রকাশ্যে আমার ভাইকে হত্যা করল, তারা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আমাদের একটাই অনুরোধ আসামীদের গ্রেপ্তার করা হোক।
শনিবার (১৭ জুন) ঘের সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সন্ত্রাসী হামলায় বাগেরহাট পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আনারুল শেখ (৫৫)নিহত হয়। দুই দিন পরে নিহতের স্ত্রী মাফুজা বেগম বাদী হয়ে পৌর যুবলীগের সদস্য সোহেল হাওলাদার ওরফে কালা সোহেলকে প্রধান আসামীসহ ১৩জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় কালাম বয়াতী, আবু বকর সিদ্দিক ওরফে নিবাশ ও ঢাকা থেকে মোঃ হৃদয় নামের এক আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে।
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম জানান, আনারুল হত্যা মামলায় এজাহার নামীয় তিন আসামীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
খুলনা গেজেট/ বিএম শহিদ