খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ পৌষ, ১৪৩১ | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট

বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, সহস্রাধিক পরিবার বিপাকে

বাগেরহাট প্রতিনিধি

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বৃদ্ধি পাওয়া নদ-নদীর পানিতে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জলমগ্ন হয়ে বিপাকে পড়েছে সহস্রাধিক পরিবার। এদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য নগদ অর্থ, খাদ্যসামগ্রী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ মে) সকালে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি ও থেমে বৃষ্টির ফলে জনজীবন বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। নদ-নদীর পানির উচ্চতা দুই থেকে আড়াইফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় বাগেরহাটের শরণখোলার ভোলা, বলেশ্বর, মোরেলগঞ্জের পানগুছি, ভৈরব নদীর পাশে বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা সহস্রাধিক পরিবার পানিতে প্লাবিত হয়।এছাড়াও শরণখোলার বগীগ্রামস্থ ঝুঁকিপূর্ণ দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এলাকায় পানি ছিল ছুই ছুই। তবে এর চেয়ে পানি বৃদ্ধি পেলে জনজীবনে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

অন্যদিকে পানগুছি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বর ও উপজেলা খাদ্যগুদাম চত্বরে এক থেকে দেড় ফুট পানি উঠেছে।বিপাকে পড়েছেন রোগী ও রোগীর স্বজনরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাযায়, দুপুর ১২টার দিকে পূর্ণ জোয়ারে দড়াটানা নদীর পানির লেভেল ছিল ২ দশমিক ৬০ মিটার। এই নদীর স্বাভাবিক সীমা হচ্ছে ২ দশমিক ৪৪ মিটার। অর্থাৎ নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। যারফলে জেলার বেশিরভাগ এলাকায় বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়। তবে ভাটা হওয়ার সাথে সাথে কিছু কিছু এলাকার পানি নামতে শুরু করেছে।

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পানগুছি নদীর তীরে বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা গ্রাম সানকিভাঙ্গা ও বদনী ভাঙ্গা গ্রামের আলী শেখ, মনির হোসেন, মুক্তা বেগম, লাল বড়ু বেগমসহ কয়েকজন বলেন, সকালের জোয়ারে গতকালের থেকে দুই থেকে তিনফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের অনেকের বাড়ি-ঘরে পানি উঠে গেছে। নদীর পানি ঠিকমত না টানার কারণে আমাদের বাড়ির পানিও টানছে না। পানি যদি এর থেকে বেশি হয় তাহলে বাড়িতে বসবাসের পরিস্থিতি থাকবে না। এছাড়াও আমাদের বাড়ির আসে পাশে কোন আশ্রয়কেন্দ্রও নাই।

শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদীর তীরবর্তী বগী, ভোলা নদীর তীরবর্তী শরণখোলার চরগ্রাম, পানিরঘাট, সোনাতলা এলাকায় অন্তত ৮শতাধিক পরিবার পানিবন্ধী হয়ে পড়েছেন। জোয়ারের পানি প্রবেশ করে আর না নামায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জোয়ারের পানি আরও বৃদ্ধি পেলে বাড়ি থেকে চলে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকবে না পরিবারগুলোর।

 

বাগেরহাটের ভৈরব নদীর পাশে মাঝিডাঙ্গা আশ্রয়কেন্দ্রসহ আশপাশের শতাধিক পরিবারের বাড়ি ঘরে পানি উঠে গেছে। মাঝিডাঙ্গা এলাকার সোহরাব হোসেন রতন বলেন, ভৈরব নদীর তীরে আমাদের এই গ্রাম। দীর্ঘদিন ধরে এখানে কোন বেড়িবাঁধ না থাকায় ঝড়জলচ্ছাসে আমাদের ডুবতে হয় পানিতে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পূর্ণ জোয়ারে নদ-নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করেছে। আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেষ দিয়েছি।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খোন্দকার রিজাউল করিম বলেন, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুয়ায়ী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় আমরা সবধরণের প্রস্তুতি গ্রহন করেছি। ঝুকিপূর্ণ উপজেলা গুলোতে শুকনো খাবার মজুদ রাখা হয়েছে। আশ্রয়ণকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতেও সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষের জন্য জেলার ৩৪৪টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলার ৭৫টি ইউনিয়নের প্রত্যেকটিতে ২৫ হাজার টাকা ও ৩টি পৌরসভায় ২ লাখ টাকা করে বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি উপজেলায় শিশু খাদ্যের জন্য ১ লাখ ও গো-খাদ্যের জন্য ১ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

খুলনা গেজেট/কেএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!