খুলনা, বাংলাদেশ | ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৪ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  হত্যা মামলায় মমতাজ ৪ দিনের রিমান্ডে

বাংলায় লেখায় ব্যাংক থেকে মোস্তফা জব্বারের চেক প্রত্যাখান!

গে‌জেট ডেস্ক

চেকে মাসের নাম বাংলায় লেখার পর ব্যাংক থেকে প্রত্যাখানকে ‘ভাষার অপমান’ হিসেবে নিয়ে আত্মহত্যার ইচ্ছা জেগেছিল ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তফা জব্বারের মনে। পরে নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, ‘কোন দেশে আছি?’

ঘটনাটি বৃহস্পতিবারের। টাকা তুলতে চেক দিয়ে একজনকে ব্যাংকে পাঠান মন্ত্রী। কিন্তু টাকা তুলতে ব্যর্থ হলেন সেই চেক বাহক। ব্যাংক জানাল, চেকের পাতায় তারিখ লেখা হয়েছে বাংলায়।

সেই কথা মন্ত্রীর কানে আসতেই নিজের ভ্যারিফায়েড অ্যাকাউন্টে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মোস্তফা জব্বার। তিনি লিখেছেন, ‘মন চাইছত আত্মহত্যা ক‌রি। এক‌টি চেকে আ‌মি ডিসেম্বর বাংলায় লিখেছি বলে কাউন্টার থেকে চেক‌টি ফেরৎ দিয়েছে। কোন দেশে আ‌ছি?’

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় মন্ত্রীর সঙ্গে। তবে ব্যাংকের নাম জানাতে চাইলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমি ব্যাংকের নাম বলব না। কারণ, ব্যাংক একটা ভুল করেছে। সেই ভুলের জন্য অ্যাকচুয়েলি ব্যাংকের নাম সামনে আনার দরকার নেই। আমার যে ব্যবস্থা নেয়ার সে আমি নিয়েছি। এবং যথারীতি আমার চেক তারা অনার করে টাকা যে প্রাপক ছিল তাকে দিয়ে দিয়েছে।’

তাহলে সমস্যা কোথায় ছিল- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘ওরা (ব্যাংক) যে জায়গাটির মধ্যে ভুল করেছিল, সেই জায়গাটি হচ্ছে, ওদের নিজস্ব প্রসিডিওর যে চেকে তারিখের জায়গাতে বাংলায় যদি কোনো মাসের নাম লেখা হয়, ওটা ওরা প্রসেস করে না। পরবর্তীকালে আমি যখন কথা বলেছি, একেবারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পর্যন্ত কথা বলার প্রেক্ষিতে ওরা তাদের ভুলটা বুঝতে পেরেছে এবং সেটা সংশোধন করে নিয়েছে।’

ডিসেম্বর বোঝাতে সংখ্যায় ‘১২’ লেখা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘না, ১২ লিখি নাই, আমি ডিসেম্বর লিখেছিলাম। ২ ডিসেম্বর ২১। ২ আর ২১ লিখেছিলাম সংখ্যায় আর ডিসেম্বর লিখেছিলাম কথায়।’

চেকের প্রথম পৃষ্ঠায় কথায় তারিখ লেখার সুযোগ কী আছে?-এমন প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা জব্বার বলেন, ‘আসলে দেখেন, সংখ্যা লেখা অথবা অংক লেখা, এরকম কোনো বাধ্যবাধকতা কোনো চেকের ক্ষেত্রে নেই। ধরেন, আমি ইংরেজিতে 02 December 2021 অথবা 21 লিখতাম, তাহলে সেটার ক্ষেত্রেও কোনো আপত্তি ওদের ছিল না। আসলে এটা মানসিকতার বিষয়।’

‘চেকের সবই বাংলায় লিখেছি। ওখানে একটাও ইংরেজি শব্দ নেই’ দাবি করে মোস্তফা জব্বার বলেন, ‘আমি কনফার্ম করেছি, ব্যাংকের বিধি-বিধান, নিয়ম-কানুন- বাংলা লেখার ক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু কাউন্টারে যে লোক ছিলেন, অথবা শাখার যে ব্যবস্থাপনা ছিল অথবা তাদের যে প্রসিডিওর আছে, নিজেরা যেটা তৈরি করেছে সেখানে তাদের গলদটা ছিল। এই গলদটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হয়েছে।’

চেক ফিরিয়ে দেয়ার পরেও কোনো পরিবর্তন করা হয়নি বলে দাবি করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি চেকের ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন করিনি। কিন্তু অবশেষে সেটাকে তারা অনার করেছেন। এবং প্রাপক, যে টাকা পাওয়ার কথা তিনি পেয়ে গেছেন।’

তবে এমন ঘটনার কোনো পুনরাবৃত্তি চান মন্ত্রী। তিনি চান সাধারণ মানুষও যেন বাংলায় লিখে, তার প্রাপ্য সেবাটা বুঝে পান।

তিনি বলেন, ‘যথাযথ কর্তৃপক্ষ মানেই তো ব্যাংক, আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্ট যারা আছেন তাদের সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করব। আমার ধারণা, এই ক্ষেত্রে কেউ দ্বিমত পোষণ করবেন না।

‘ইভেন আমি যে ব্যাংক, তাদের এমডি (ব্যাবস্থাপনা পরিচালক) পর্যায়ে কথা বলেছি। ওনিও দ্বিমত পোষণ করেননি এবং দুঃখপ্রকাশ করেছেন যে এ ধরনের আচরণ আমাদের কাউন্টার থেকে করা উচিত হয়নি। কোনো অবস্থাতেই আমরা বাংলা ভাষার বিপক্ষে না। সেটা আমরা হতেও চাই না। সেক্ষেত্রে যতটুকু ভুল করা হয়েছে, ওইটা একটা পার্টিকুলার শাখায় হয়েছে।’

নাম বলতে না চাইলেও ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী দাবি করেছেন, ওই ব্যাংকের সঙ্গে তার অতীত অভিজ্ঞতা ভালো ছিল।

তিনি বলেন, ‘ওদের হেড অফিসে আমার ব্যাংকিং হয়। সেক্ষেত্রে আমার কখনই কোনো প্রবলেম হয়নি। একটা শাখা অফিসে বিয়ারার চেক নিয়ে গিয়েছিল, সেখানে এই প্রবলেম হয়েছে।’

যেদিন থেকে তিনি ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করেছেন, সেদিন থেকেই চেকের মধ্যে পুরোটা বাংলায় লিখে আসছেন বলেও জানান মোস্তফা জব্বার। তিনি বলেন, ‘আমি কোনোদিন ইংরেজি লিখেছি, আমার মনে পড়ে না।’

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!