বৃহস্পতিবার আধাঘণ্টা দেরিতে শুরু হওয়া ডারবান টেস্ট প্রথম দিনে আলোক স্বল্পতায় খেলা হয় সব মিলিয়ে ৭৭ ওভার। আজ শুক্রবার ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে ৩ ওভার পরেই নতুন বল হাতে পান বাংলাদেশি পেসাররা। এরপর পেস, সুইং আর ধারাবাহিক লাইন-লেন্থে খালেদ, এবাদত, তাসকিনরা নাভিশ্বাস তুলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের।
তাতে সাফল্যও এসেছে দ্রুত। কম যাননি স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। ফিরিয়েছেন গলার কাটা হয়ে থাকা টেম্বা বাভুমাকে। এতে সকালের সেশনে প্রোটিয়াদের ৪ উইকেট তুলে নিয়ে দাপট বাংলাদেশ দলের। দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশন শেষে ৮ উইকেট হারানো স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৩১৪ রান। লিজাড উইলিয়ামস ৬ এবং সিমন হারমার ৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় সেশনের খেলা শুরু করবেন।
৪ উইকেট হারিয়ে ২৩৩ রান নিয়ে আজ দ্বিতীয় দিন শুরু করে প্রোটিয়ারা। যেখানে বাভুমা ৫৩ আর কাইল ভেরেইনা ২৭ রানে অপরাজিত থেকে ব্যাটিংয়ে নামেন। দুই জনের অবিচ্ছেদ্য ৫৩ রানের জুটিকে আজ অবশ্য বেশি বাড়তে দেয়নি সফরকারীরা। নতুন বল হাতে নিয়েই নিজের দ্বিতীয় ওভার ও দিনের ষষ্ঠ ওভারে জোড়া আঘাত হানেন পেসার খালেদ আহমেদ। ফেরান ভেরেইনা আর নতুন ব্যাটসম্যান উইয়ান মাল্ডারকে।
খালেদের করা ওভারের দ্বিতীয় বলটি গুড লেংথ থেকে একটু সামনে পিচ করে ভেতরে ঢোকে। ডিফেন্স ফাঁকি দিয়ে বল লাগে ব্যাটসম্যান ভেরেইনার প্যাডে। আবেদনে আঙুল তুলতে খুব একটা সময় নেননি আম্পায়ার। যদিও রিভিউ নিয়েছিলেন ভেরেইনা। তবে লাভ হয়নি তাতে। ৮১ বলে ২৮ রান করে আউট ভেরেইনা। বাভুমার সঙ্গে জুটির সমাপ্তি ৬৫ রানে।
পরের বলেই মাল্ডারকে একই পথে ফেরান খালেদ। তবে এই উইকেটের সমান কৃতিত্ব পাবেন ফিল্ডার মাহনুদুল হাসান জয়। মাল্ডারকে অফ স্টাম্পের বাইরে লেংথ বল করেন খালেদ। পিচ করে বলটি বেরিয়ে যাচ্ছিল। শেষ মুহূর্তে ব্যাটসম্যান ব্যাট চালিয়ে দেন জায়গায় দাঁড়িয়ে। বল ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় পেছনে। গুলির বেগে আসা বল তৃতীয় স্লিপে বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুই হাতে তালুবন্দি করেন জয়। মুল্ডার ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই।
এরপর নতুন ব্যাটসম্যান কেশভ মহারাজকে নিয়ে সপ্তম উইকেট জুটি জমিয়ে তোলেন বাভুমা। ছুটতে থাকেন নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতকের দিকে। এই স্বাদ অবশ্য তাকে পেতে দেননি মিরাজ। গলার কাটা হয়ে বিঁধে থাকা বাভুমাকে ফেরান ৯৩ রানে। মিরাজের অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা ডেলিভারিটি টার্ন করে অনেকটা। শেষ মুহূর্তে ব্যাট পেতে দিয়ে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করলেও কাজ হয়নি। বল বিশাল বাঁক খেয়ে বাভুমার পায়ে লেগে আঘাত করে স্টাম্পে। ৭ রানের এক্ষেপে পুড়ে বাভুমা ফেরেন ১২ চারে ১৯০ বলে ৯৩ রান করে।
৫৩ রানের জুটি ভাঙার পর এবাদত হোসেনের করা পরের ওভারে ফেরেন মহারাজ। আউট হওয়া বলটি ফুল লেংথ বল সিমে পিচ করে ভেতরে ঢোকে একটু। মহারাজ ব্যাট চালাতে একটু দেরি করে ফেলেন। বল তার ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে আঘাত দেয় স্টাম্পে ৪০ বলে ১৯ রান করে শেষ মহারাজের লড়াই।
দ্রুত এই দুই উইকেট হারানোয় পর দলের হাল ধরার চেষ্টায় আছেন দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান লিজাড আর হারমারের। অবিচ্ছেদ্য ১৬ রানের জুটি নিয়ে মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে গেছেন তারা। ৩১৪ রানে ৮ উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রিকায় রান বাড়িতে নিতে লিজাড উইলিয়ামস ৬ এবং সিমন হারমার ৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় সেশনের খেলা শুরু করবেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই