১৬ জুলাই সন্ধ্যায় একাডেমি অফ ফাইন আর্টস-এ বাংলাদেশের পঞ্চাশ বছর উপলক্ষে পাঁচ পাঁচটি বই প্রকাশ করলো কলকাতার ভিরাসত আর্ট পাবলিকেশন। পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে এমন বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট লেখকদের জমায়েত অনুষ্ঠানটিকে সার্থক করে তুলেছিল।
অনুষ্ঠানে বইগুলোর আবরণ উন্মোচন করলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ডক্টর পবিত্র সরকার ও কলকাতার বাংলাদেশের উপরাষ্ট্রদূত আন্দালিব ইলিয়াস ।
অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক ডক্টর নজরুল ইসলাম, শিক্ষাবিদ ডক্টর সুবীর মৈত্র এবং মুক্তিযোদ্ধা ও সাংসদ মীর মোস্তাক আহমেদ। সম্মানীয় অতিথিরা বইগুলির সম্পর্কে বিদগ্ধ আলোচনা করেন। শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার ভারত ও বাংলাদেশের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের কথা বলেন এবং বেসরকারি উদ্যোগে এরকম বই প্রকাশের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান। উপ রাষ্ট্রদূত আন্দালিব ইলিয়াস ভারত এবং বাংলাদেশ, বিশেষ করে এই দুই বাংলার সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক আদান-প্রদান বৃদ্ধির ওপরে আশা প্রকাশ করে এধরনের প্রয়াসকে দুই দেশের মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য বিনিময়ের সেতু হিসেবে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে লেখকদের মধ্যেও বহু বিশিষ্ট এবং খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ আতিউর রহমান, ঔপন্যাসিক নলিনী বেরা ও স্বপ্নময় চক্রবর্তী গবেষক সুমন গুণ, পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় গল্পকার তাপস রায়, দেবাঞ্জন চক্রবর্তী, কল্যান গঙ্গোপাধ্যায়, অনিন্দিতা গোস্বামী প্রমূখ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ‘লুমিনারিস অফ চট্টগ্রাম’ নামে একটি অনুবাদগ্রন্থ সহ ‘কালের প্রবাহে বাংলাদেশ’, ‘বাংলাদেশের জনযুদ্ধ’, ‘শেখ মুজিবের বাংলাদেশ’ ও ‘দেশভাগের গল্পগাছা’ নামের বাংলা গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক মোস্তফা হোসেইন রচিত বাংলাদেশের জনযুদ্ধ বইটি সম্পর্কে ডক্টর নজরুল ইসলাম বিশদে আলোচনা করেন। দেশভাগের গল্পগাছা বইটির সম্পাদক তাপস রায় দুই বাংলার বিশিষ্ট লেখক সমন্বয় এই বইটির উৎকর্ষ আলোচনা করেন।
মিহির মৈত্রের লেখা শেখ মুজিবের বাংলাদেশ বইটিকে নিয়ে পার্থ রায় বিস্তৃত আলোচনা করে জানান মুক্তিযুদ্ধ শেষে ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাসের কাউন্সিলর মিহির মৈত্র ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনীতির ভেতরকার কথা থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক পরিবর্তন সাংস্কৃতিক বিবর্তন এবং সমাজে তার প্রভাব নির্মোহ ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে নিজের চোখে দেখে যুক্তিপূর্ণভাবে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন। সেই সঙ্গে এই বইয়ের বঙ্গবন্ধুর হত্যা সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য সহ সেই সময়ের আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়াসের ইতিবৃত্ত নতুনতর তথ্যের মাধ্যমে তুলে ধরার প্রসঙ্গটিও তিনি উল্লেখ করেন।
সবশেষে ‘কালের প্রবাহে বাংলাদেশ’ নামের গ্রন্থটির অন্যতম লেখক বিশিষ্ট অর্থনীতিবীদ ডঃ আতিউর রহমান এই বইটিতে তাঁর লেখা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের কারণসমূহ সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করেন। অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল গার্গী চক্রবর্তীর কন্ঠে ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটির মধ্য দিয়ে। গানটিতে পরিপূর্ণ প্রেক্ষাগৃহের সকলেই প্রায় কন্ঠমেলান।
কয়েকদিনের মধ্যেই বইগুলো বিভিন্ন পুস্তক বিপণীতে পাওয়া যাবে বলে জানা গেল।
খুলনা গেজেট / আ হ আ