খুলনা, বাংলাদেশ | ২০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী : রায় কবে জানা যাবে আজ

বাংলাদেশিদের তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি বিজেপি সভাপতির

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা বলেছেন, ঝাড়খণ্ডে বিজেপি ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের তাড়িয়ে দেওয়া হবে। এমনকি সেখানে স্থানীয় নারীদের বিয়ে করা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ও তাদের সন্তানদের দেওয়া আদিবাসী অধিকারও কেড়ে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি।

শনিবার ঝাড়খণ্ডের পালামৌতে এক জনসভায় জেপি নাড্ডা এসব হুমকি দিয়েছেন। রাজ্যের ক্ষমতাসীন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-কংগ্রেস জোটের দুর্বল শাসনের সুযোগে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা সেখানে বসতি গড়ছেন বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।

নাড্ডা বলেন, রাজ্যের আসন্ন নির্বাচনে বিজেপি জয় পেলে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ব্যক্তি, তাদের পরিবার ও সন্তানদের আদিবাসী অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তিনি। একই সঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় এলে রাজ্য থেকে তাদের তাড়িয়ে দেবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

জনতার উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতায় জেপি নাড্ডা বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ডে বিজেপি ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বাবা ও আদিবাসী মায়ের সন্তানরা আদিবাসী অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন। এই রাজ্যে আর অনুপ্রবেশ চলতে দেওয়া হবে না।’’

ঝাড়খণ্ডের জেএমএম নেতৃত্বাধীন সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বিজেপির কেন্দ্রীয় এই সভাপতি বলেন, ‘‘দুর্নীতিবাজ এবং চোররা রাজ্যের বর্তমান জেএমএম-নেতৃত্বাধীন সরকারের অংশ। ঝাড়খণ্ডে ব্যাপক উন্নয়নের জন্য ‘‘একক-ইঞ্জিনের সরকারের’’ বদলে বিজেপির নেতৃত্বে ‘‘ডাবল-ইঞ্জিন সরকার’’ ফেরাতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান নাড্ডা।

ঝাড়খণ্ডে আগামী ১৩ ও ২০ নভেম্বর দুই দফায় ৮১ আসনের বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনের আগে রাজ্যের রাজনীতিতে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয় নিয়ে ব্যাপক উত্তাপ ছড়িয়েছে।

গত রোববার ঝাড়খণ্ডে বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করার সময় ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মাসখানেকের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ থেকে ঝাড়খণ্ডে অবৈধ অনুপ্রবেশের বিষয়টি তুলে ধরেন। এর জবাবে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন এক নির্বাচনী জনসভায় বলেন, ‘‘তারা সব অদ্ভুত কথাবার্তা বলেন। আপনারা হিন্দু-মুসলমান, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের কথা বলেন।’’

‘‘… আমি জানতে চাই বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের কোনও গোপন সমঝোতা হয়েছে কি না? বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিমান আপনারা এখানে কেন নামতে দিলেন? কী হিসাবে আপনারা তাকে এখানে আশ্রয় দিয়ে রেখেছেন, তার জবাব আমাকে দিন।’’ শুধু শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয় পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেই ক্ষান্ত হননি সরেন। তিনি ঝাড়খণ্ডে উৎপাদিত আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ বাংলাদেশে রপ্তানি করা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

এছাড়া ঝাড়খণ্ডের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে প্রথমবারের মতো গত সোমবার ঝাড়খণ্ডে যান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে তিনি ক্ষমতাসীন জোটের দিকে সরাসরি আঙ্গুল তুলে বলেন, রাজ্য যে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীতে ভরে গেছে, সে জন্য জোটের তিনটি দলই দায়ী।

‘‘ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, কংগ্রেস আর আরজেডি তুষ্টিকরণের রাজনীতিকে চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এই তিনটি দল আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে এখানকার সামাজিক কাঠামো যাতে ভেঙে পড়ে। তিনটি দলই অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থক। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ভোট পাওয়ার আশায় তারা তাদের ঝাড়খণ্ডের সব জায়গায় প্রতিস্থাপন করছে।’’

সূত্র: এএনআই, টাইমস অব ইন্ডিয়া

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!