ইউরোপের দ্বীপ রাষ্ট্র মাল্টায় দক্ষ ও অর্ধ-দক্ষ বিভিন্ন বাংলাদেশি পেশাজীবীদের কর্মসংস্থানের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরে সম্মত হয়েছে ঢাকা ও ভাল্লেত্তা। খুব দ্রুতই একটি খসড়া সমঝোতা স্মারক মাল্টা সরকারের বিবেচনার জন্য পাঠানো হবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) মাল্টার রাষ্ট্রপতি ড. জর্জ ভেল্লার কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেন রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ। এ সময় রাষ্ট্রদূত শ্রমবাজার সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকের বিষয়টি মাল্টার রাষ্ট্রপতিকে জানান।
রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ মাল্টার রাষ্ট্রপতিকে জানান, মাল্টায় দক্ষ ও অর্ধ-দক্ষ বিভিন্ন পেশাজীবীদের কর্মসংস্থানের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ। অচিরেই একটি খসড়া সমঝোতা স্মারক তার সরকারের বিবেচনার জন্য প্রেরণ করা হবে। চুক্তিটি স্বাক্ষর হলে বাংলাদেশ যেমন মাল্টার ক্রমবর্ধমান শ্রমিকের চাহিদা পূরণে সহায়তা করতে পারবে, তেমনি অবৈধ অভিবাসনের প্রক্রিয়াটিও বন্ধ করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আলোচনার শুরুতে জর্জ ভেল্লার বাংলাদেশ ও মাল্টার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে জানান যে, এই সম্পর্ক আরও ফলপ্রসূ ও মজবুত করা সম্ভব। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান, অভিবাসনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
আলোচনায় মাল্টার রাষ্ট্রপতি বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট নিরসনে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকা ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম অর্থনৈতিক ভিত্তি বিনির্মাণে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পে মাল্টার কারিগরি সহায়তা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের প্রস্তাব করেন।
এছাড়া উপকূলীয় অঞ্চলে পানির লবণাক্ততা দূরীকরণে প্রকল্প গ্রহণ, শিক্ষা সহযোগিতা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়। সামগ্রিকভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পর্যালোচনা ও ভবিষ্যৎ কৌশল নির্ধারণের জন্য নিয়মিত পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে আলোচনার বিষয়ে ঐক্যমতের বিষয়ে অবহিত করেন রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রপতি সাম্প্রতিককালে মাল্টা থেকে অনিয়মিত হয়ে পড়া বাংলাদেশিদের ফেরত নিতে বাংলাদেশ সরকারের আন্তরিক পদক্ষেপে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। বাংলাদেশি পেশাজীবীরা অধিকহারে নিয়মিতভাবে বৈধ কাজের অনুমতি নিয়ে মাল্টায় কর্মসংস্থানের সুযোগ গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান বিষয়ে রাষ্ট্রপতি ভেল্লা গণহত্যা ও নির্যাতনের শিকার মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, এতে বিদ্যমান সীমাবদ্ধতার মধ্যেও মানবতা রক্ষায় বাংলাদেশের দৃঢ় প্রতিজ্ঞার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। পাশাপাশি তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে মর্মে মত প্রকাশ করে ব্যক্তিগত হতাশা ব্যক্ত করেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই