ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে দাপুটে জয়ের পর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ফিরতেই যেন মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে স্বাগতিক মেয়েদের হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দিলো সফরকারী আয়ারল্যান্ড।
চায়ের দেশ সিলেটে টানা দুই ম্যাচ হেরে আগেই সিরিজ খুইয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। আজ হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়ানোর ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নেমে নিগার সুলতানা জ্যোতিদের শুরুটা ইতিবাচক হলেও শেষটা ছিল হতাশার। বড় স্কোরের আশা জাগিয়েও নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৩ রানে থামে বাংলাদেশ।
নাগালে থাকা টার্গেট তাড়া করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে একটা সময় জয় থেকে প্রায় ছিটকেই যাচ্ছিল আয়ারল্যান্ড। তবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ম্যাচটিতে শেষ হাসি হেসেছে আইরিশ মেয়েরাই।
শেষ ১২ বলে আয়ারল্যান্ডের জয়ের জন্য দরকার ছিল ২১ রান। উইকেট হাতে আছে তখনো ৬টি। ইনিংসের ১৯ তম ওভারে মাত্র ৬ রান খরচ করে একটি উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচটা জমিয়ে দেন টাইগ্রেস স্পিনার নাহিদা আক্তার। বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনাও বাড়ছিল তাতে। শেষ ৬ বলে ১৫ রানের লক্ষ্যমাত্রা। মেয়েদের টি-টোয়েন্টিতে মোটেও সহজ টার্গেট বলা চলে না।
শেষ ওভারে বল হাতে তুলে নিয়েছিলেন স্বর্ণা আক্তার। প্রথম বলেই সিঙ্গেল নিতে গিয়ে রান আউটের ফাঁদে পড়লেন আর্লিন কেলি। ওভারের দ্বিতীয় বলে ডাবলস নিয়ে স্ট্রাইক নিজের কাছেই রাখেন ডেলানি। পরের তিন বলে টানা তিনটি চার হাঁকিয়ে বাংলাদেশের সব আশা শেষ করে দেন আইরিশ এই ব্যাটার। ডেথ ওভারে স্বর্ণার বাজে বোলিং ছাড়াও দৃষ্টিকটু ফিল্ডিং আর জ্যোতির ক্যাপ্টেন্সিও হারের জন্য কম দায়ী না।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে আয়ারল্যান্ডের মাটিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। এবার ঘরের মাটিতে ধবলধোলাই হলো জ্যোতিরা। এ নিয়ে চলতি বছর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ঘরের মাটিতে তৃতীয় হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় পড়ল বাংলাদেশের মেয়েরা।
এর আগে ভারতের বিপক্ষে (৫-০) এবং অস্ট্রেলিয়ার মেয়েদের সঙ্গে (৩-০) ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল জ্যোতির দল। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশের মেয়েদের তিনটি ধবলধোলাইয়ের সবকটিই হলো এ বছর।
এর আগে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করার আমন্ত্রণ পেয়েছিল বাংলাদেশ। শুরুটা মন্দ ছিল না টাইগ্রেসদের। উদ্বোধনী জুটিতে ৩৩ রান যোগ করেন দুই ওপেনার সোবহানা ও মুরশিদা। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের শেষ বলেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১২ বলে ১২ রান করে প্রেন্ডারগাস্টের বলে আউট হন মুরশিদা।
ওয়ান ডাউনে নামা শারমিনকে নিয়ে দারুণ জুটি গড়েন সোবহানা। মাত্র ৫৮ বলে ৭১ রান যোগ করে এই জুটি। ফলে বড় স্কোরের সুবাস পাচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শারমিনের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। ৩৩ বলে ৪ চারে ৩৪ রান করে ম্যাগুয়েরের শিকারে পরিণত হন টপঅর্ডার এই ব্যাটার। এরপর সোবহানা মোস্তারিও আর বেশিক্ষণ টেকেননি। টাইগ্রেস এই ওপেনারকেও ফেরান ম্যাগুয়ের। ৪৩ বলে ৬ চারে ৪৫ রান করেন তিনি।
এরপর আর সেভাবে জুটি গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। উল্টো মুড়িমুড়কির মতো উইকেট হারিয়েছে কেবল। শেষ ২৮ বলে ৪ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৬ রান তুলতে পেরেছিল টাইগ্রেসরা। স্বর্ণা ৬ বলে ৪, অধিনায়ক নিগার সুলতানা ১৬ বলে ৮ ও নাহিদা ১ রান করে আউট হন। প্রেন্ডারগাস্ট ২২ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন। এ ছাড়া ম্যাগুয়ের ২ উইকেট শিকার করেন।
খুলনা গেজেট/এএজে