খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  অ্যান্টিগা টেস্ট: তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ২৬৯/৯, পিছিয়ে ১৮১ রানে

বশেমুরবিপ্রবিতে অনলাইন ক্লাসও বন্ধ, হতাশাগ্রস্থ শিক্ষার্থীরা

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ন্যায় ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়৷ সেশনজট এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো এইসময়ে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার৷ কিন্তু আপগ্রেডেশনর দাবিতে গত ৬ এপ্রিল থেকে সকল ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি। আর এই ক্লাস না হওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন বশেমুরবিপ্রবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ৬ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া শিক্ষকদের আন্দোলনের ফলে ৩৪টি বিভাগেরই অনলাইন ক্লাস বন্ধ রয়েছে। আর করোনার কারণে প্রায় এক বছর পিছিয়ে থাকা অবস্থায় শিক্ষকদের এমন সিদ্ধান্ত তাদের ক্রমশ হতাশাগ্রস্ত করে তুলছে। কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থী মুকুল আহমেদ রনি বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে অনলাইন ক্লাস কিছুটা হলেও ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার সম্ভাবনা তৈরি করেছিলো। কিন্তু বর্তমানে অনলাইন ক্লাসও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছি।”

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শীষ মোহাম্মাদ তানিম বলেন, “আমাদের ২০২০ সালে অনার্স শেষ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু করোনার কারণে দীর্ঘ সেশনজটের মধ্যে পড়ে গেছি। আমাদের বিভাগের শিক্ষকবৃন্দের আন্তরিক চেষ্টা ও শিক্ষার্থীদের আগ্রহে আমরা ২য় সেমিস্টারের অনলাইন ক্লাস শুরু করেছিলাম। এক সপ্তাহ বেশ ভালোভাবে  ক্লাস চললেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের কর্মসূচির কারণে আমাদের শিক্ষকগণ ক্লাস নেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। এই অবস্থায় আমরা আবারও দু:শ্চিন্তায় পড়েছি। আমাদের অনেক সহপাঠী পড়াশোনা পুরোপুরি বাদ দিয়ে জীবিকা নির্বাহের জন্য অন্য কোনো কাজ বেছে নিবে কিনা তা চিন্তা ভাবনা করা শুরু করেছে।”

ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান মাহমুদ বলেন, “করোণাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও সরকার কোনভাবেই শিক্ষকদের ১ মাসের বেতনও বন্ধ রাখেনি। এমন পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র আপগ্রেডেশনের জন্য অনলাইন ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত খুব ঘৃণ্য এক সিদ্ধান্ত বলে আমি মনে করি। ক্লাস না হলে পরীক্ষা হবে না, আমরা বছরের পর বছর সেশনজটে পড়ে যাব। জীবন থেকে সময় গুলা হারিয়ে যাবে।”

তবে শিক্ষার্থীরা হতাশ হয়ে পড়লেও প্রকৃতপক্ষে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন না বলে দাবি করেছেন বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো: কামরুজ্জামান। ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা এর আগে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেও সমাধান না পেয়ে এধরণের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। তবে এই সিদ্ধান্তের জন্য শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন না। আন্দোলন শেষে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে বর্তমান ক্ষতি সমন্বয় করা হবে।”

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ.কিউ.এম মাহবুব বলেন, “আপগ্রেডেশনের জন্য রিজেন্ট বোর্ডের মিটিং প্রয়োজন। আগামী ২৪ এপ্রিল রিজেন্ট বোর্ডের মিটিং হবে। আমি শিক্ষক সমিতিকে বলেছিলাম ক্লাসে ফিরে যেতে এবং ২৪ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে। কিন্তু শিক্ষক সমিতি তাদের সিদ্ধান্তে অনড়।”

এসময় উপচার্য আরও বলেন, “একজন আদর্শ শিক্ষকের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে শিক্ষা প্রদান করা, তাদের উন্নয়নে কাজ করা। কিন্তু যারা নিজেদের দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে তারা আদর্শ শিক্ষক কিনা এ বিষয়ে আমি সন্দিহান।”

খুলনা গেজেট/এমএইচবি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!