খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬

বর্তমান ইসির অধীনে নির্বাচনে যাওয়া মানে আত্মহত্যা করা: রিজভী

গেজেট ডেস্ক 

রিজভী

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া মানে আত্মহত্যা করা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সোমবার বিকালে ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে আগামী ২২ ও ২৩ নভেম্বর ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান ইসি যে সরকারের পথরেখা অনুসারে চলবে তার প্রমাণ তারা (ইসি) নিজেরাই দিচ্ছে। সরকারের সাজানো প্রশাসনের কোনো রদবদল করবে না বলে তারা জানিয়েছে। এটি হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন একদলীয় বাকশালী নির্বাচন। এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের অর্থই হলো নির্বাচনি আত্মহত্যা।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেই এই নির্বাচন কমিশনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, এটাই তো বাস্তব সত্য। কারণ প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশনারদের রক্ত পরীক্ষা করে তাদের কমিশনে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই ইসি কী করে গ্যারান্টি দিতে পারে, এখানে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হবে? এটি হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন একদলীয় বাকশালী নির্বাচন।

নির্বাচনের মাঠ খালি করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাজা’দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘দলের যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপুসহ ১৪ জন নেতা এবং রংপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকু, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন, জেলা যুব দলের সহসভাপতি তারেক হাসান সোহাগ, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জহির আলম নয়নকে ‘মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায়ে সাজা’ প্রদানের নিন্দা জানাচ্ছি।

দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ২০১৩ সালে হাইকোর্টে সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়ে বাতিল করার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যে আপিল করা হয়েছিল গতকাল (রোববার) তা ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ করা হয়েছে। আপিলকারী দল রায়টিকে ‘ন্যায় ভ্রষ্ট’ বলে উল্লেখ করে তাদের সুবিচার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ করেছে।

তিনি বলেন, সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ন্যায়ভ্রষ্ট রায় প্রদানের মাধ্যমে তাদের সুবিচার থেকে বঞ্চিত করার দৃষ্টান্ত নতুন নয় বলেই দেশবাসী এই রায়ে বিস্মিত না হলেও সুবিচার লাভে শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগে যুক্ত ব্যক্তিগণের রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক বক্তব্য এবং ক্ষমতাসীন সরকারের ইচ্ছাপূরণে সহায়তার ঘটনায় হতাশ হয়ে পড়ছে। যে রাজনৈতিক দলের বিস্তৃতি সারা দেশে দৃশ্যমান। জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকারের প্রায় সব স্তরে প্রতিনিধিত্বশীল থাকার প্রমাণিত দৃষ্টান্তের অধিকারী। তবে, নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পাশাপাশি নাম গোত্রহীন অপরিচিত দলকে নিবন্ধন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার দৃষ্টান্ত সুবিচারের প্রমাণ বহন করে না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ক্ষমতাসীন সরকারের বিরোধিতা করা যে কোনো রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং সেই অধিকারের সুরক্ষা বিচার বিভাগের কাছেই প্রাপ্য। এর ব্যতিক্রম গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থি এবং অগ্রহণযোগ্য।

‘এসব ফরমায়েশি রায় সুপরিকল্পিত। নির্বাচনের আগে মাঠ ফাঁকা করার জন্য বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের শুধু মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারই নয়, পুরোনো মামলায় সাজা দেওয়ার হিড়িক শুরু হয়েছে। সজীব তরুণ এসব নেতাদের যদি সাজা দিয়ে আটকিয়ে রাখা যায় তাহলে শেখ হাসিনার মসনদ টিকে থাকবে বহুদিন, এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসব নেতাদের সাজা দেওয়া হয়েছে’—যোগ করেন রিজভী।

কারাগারে বিরোধী নেতাদের ডিভিশন প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে’ জানিয়ে রিজভী আরও বলেন, ‘কারাগারে বিরোধীদলের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ও সাবেক এমপি জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকনকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়া হচ্ছে না। সংসদ সদস্য ছিলেন তাদের ডিভিশন দেওয়া হয় না। কিন্তু আমি জানি, আমাদের তো প্রায়ই এই সরকারের আমলে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ডিভিশন দেওয়া হয়েছে… শুধু ক্ষমতাসীন দলের কানেকশনের কারণে। আর দেশের সুপরিচিত রাজনীতিবিদ ও এমপিদের ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের ডিভিশন দেওয়া হয়নি, তাদের অমানবিক পরিবেশে মেঝেতে থাকতে দেওয়া হয়েছে। এই শীতে মেঝের ঠান্ডায় তারা চরম শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগে ভুগছেন। আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কারাকর্তৃপক্ষ এখনো তাদের ডিভিশন দিচ্ছে না।

সারাদেশে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, প্রাপ্ত তথ্যনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের মোট গ্রেপ্তার ৪৮০ জনের অধিক নেতাকর্মী, মোট মামলা ১৭টি, মোট আসামি ১৯৯০ জনের অধিক, মোট আহত ৮০ জনের অধিক নেতাকর্মী। এ ছাড়া ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের আগে-পরে অদ্যাবধি মোট গ্রেপ্তার ১৪২০০ জনের বেশি নেতাকর্মী, মোট মামলা ৩৩১টির বেশি, মোট আহত ৪৩১৩ জনের অধিক নেতাকর্মী এবং মৃত্যু ১৫ জন (সাংবাদিক একজন)।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!