বরগুনায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুর রশিদ মিয়াকে (৭০) মারধর করা হয়েছে। রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
তাকে মারধর করেছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ফারুক মোল্লার ছেলে শাওন মোল্লা। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, একটি মাঠের পাশে পাঞ্জাবি-পাজামা, টুপি ও চশমা পরা আব্দুর রশিদ মিয়াকে শাওন উত্তেজিতভাবে নানা বিষয়ে প্রশ্ন করেন। এক পর্যায়ে শাওন তার চোখের চশমাটি ছুড়ে মাটিতে ফেলে দেন এবং পরে থাপ্পড় দিয়ে মাথার টুপিও ফেলে দেন। দুয়েকজন শাওনকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও তাদেরকে ঘটনাস্থল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ বলেন, রোববার সকাল ১১টার দিকে আমি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাই। সেখানে ফারুক মোল্লার ছেলে শাওন মোল্লাসহ আরও অনেক উপস্থিত ছিল। শাওন আমাকে ডেকে বাইরে নিয়ে যায়। এরপর আমাকে গালাগাল ও মারধর করে। আমি এই ঘটনায় আইনি পদক্ষেপে নেবো।
বরগুনা জেলা বিএনপির একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ফারুক মোল্লাসহ বেশ কয়েকজন নেতার কাছ থেকে আব্দুর রশিদ মিয়া টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। তা ছাড়া, তার সুপারিশে কয়েকজন বিএনপির নেতার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে শাওন মোল্লা বলেন, আমাদের দলের ভাইস-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মনিকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করার বিষয়ে তার কাছে জানতে চাই। পরে তার সঙ্গে আমার বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তাকে আমি মারধর করি। এ ছাড়া তিনি মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় আমার বাবার নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা নিয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের দালাল হিসেবে পরিচিত।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব মৃধা বলেন, তিনি যদি কোনো অপরাধ করে থাকেন, সেটার জন্য আইন আছে। কিন্তু এভাবে মারধরের বিষয়টি দুঃখজনক।
বরগুনা জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম বলেন, মারধর করা হয়েছে বলে শুনেছি। একজন বৃদ্ধ মানুষকে মারধরের বিষয়টি ভালো হয়নি।
খুলনা গেজেট/কেডি