খুলনা, বাংলাদেশ | ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতার : ড. ইউনূস
  জুলাই-আগস্টে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশে সময় লাগবে : উপদেষ্টা আসিফ

নামছে বন‌্যার পানি, বাড়ছে রোগবালাই

গেজেট ডেস্ক

দেশের ১১ জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। পানি নামতে শুরু করেছে বেশির ভাগ এলাকায়, তবে শুরু হয়েছে নতুন দুর্ভোগ। দুর্গত এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে পানিবাহিত নানা রোগবালাই। তবে মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট সর্বত্র। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বাড়িঘর, রাস্তাঘাটে ভেসে উঠছে ময়লা-আবর্জনা। ছড়িয়ে পড়ছে দুর্গন্ধ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আক্রান্তদের বেশির ভাগই শিশু। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে অনেকে। পাশাপাশি বহির্বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছে অনেক রোগী। গতকাল চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা গেছে, ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে ভর্তি আছে ৬০ জন। এর মধ্যে ১৬ জন পুরুষ, ২০ জন নারী এবং ২৪টি শিশু। চৌদ্দগ্রাম করপাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হোসনা আক্তার বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় চৌদ্দগ্রামে বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করার সময় দেখেছি, প্লাবিত অনেক এলাকার পানি ময়লা। এখন আমার অ্যালার্জি সমস্যা দেখা দিয়েছে। ডাক্তার বলেছেন, বন্যার পানিতে নামার কারণে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।

হাসপাতালে ভর্তি নূরজাহান আক্তার নামের এক নারী বলেন, ‘সাত দিনের বেশি সময় ধরে বন্যার পানিতে ঘরবন্দি ছিলাম। আমার শিশুকন্যা গত মঙ্গলবার দুপুর থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। পানি অতিক্রম করে আজ তাকে নিয়ে এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের কোনো ওষুধই পাওয়া যাচ্ছে না।’

এদিকে জানা গেছে, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা দুর্গম হওয়ায় সেখানে ত্রাণের সংকট রয়েছে। বন্যাকবলিত প্রতিটি এলাকায় রয়েছে নৌযানের সংকট। মনোহরগঞ্জ ও নাঙ্গলকোটের প্রত্যন্ত এলাকায় পানি সাঁতরে ত্রাণ সরবরাহ করতে দেখা গেছে স্বেচ্ছাসেবকদের।

লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুর জেলায় প্রায় সাত দিন ধরে বন্যার পানিতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ১০ লক্ষাধিক মানুষ। জেলায় খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। সরকারি-বেসরকারিভাবে পাওয়া ত্রাণে খাদ্যসংকট দূর হচ্ছে না। বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ। পানি ধীরগতিতে কমতে শুরু করলেও দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছে বন্যার্তরা। গতকাল বন্যাকবলিত সদর উপজেলার দিঘলী-মান্দারী এলাকা ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

সদরের পশ্চিম জামিরতলি গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রহিম ও জয়নাল আবেদিন বলেন, পুরো এলাকা তিন-চার ফুট পানিতে নিমজ্জিত। প্রতিটি টিউবওয়েল পানির নিচে। টিউবওয়েলে চাপ দিলেই ময়লা পানি উঠে আসে। বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকেই বাজার থেকে পানি কিনে খাচ্ছে। আবার ত্রাণের সঙ্গে দেওয়া পানিও অপ্রতুল।

নোয়াখালী : নোয়াখালীতে গতকাল সারা দিন রোদ থাকলেও বৃষ্টির পানি না কমায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। পানি নামার অন্যতম পয়েন্ট কবিরহাট উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়নে অবৈধ বাঁধ থাকায় বন্যা ও অতিবৃষ্টির পানি নামছে না।

বন্যায় মৃত্যু ৫০ ছাড়িয়েছে

এদিকে ১১ জেলায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে বন্যার সর্বশেষ পরিস্থিতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে গত বুধবার পর্যন্ত বন্যায় মৃতের সংখ্যা ছিল ৩১। তবে গতকাল দুপুর ১টা পর্যন্ত সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫২ জনে। অর্থাৎ এক দিনের ব্যবধানে মৃত্যু বেড়েছে ২১ জনের।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সর্বোচ্চ ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে ফেনীতে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!