খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬

বন্দি রেখে ১৮ মাস নির্যাতন চলানো হয় আকলিমার ওপর

গেজেট ডেস্ক

ধারাল সুচ, খুনতি, পেন্সিল, কলমের খোঁচা ও ছ্যাকা পর্যন্ত দিয়েছে। শরীরের বিভিন্ন অংশে চড়, লাথি, বেত্রাঘাত ছিল নিত্য দিনের ঘটনা। এমন কোনো নির্যাতন নেই যা আকলিমাকে গৃহকর্তী লিপি করেননি। এ ছাড়া শিশুটিকে ঠিক মতো খাবারও দেওয়া হয়নি। যা দেওয়া হতো তা বাসি ও পচা খাবার। এসব কারণে অসুস্থ হয়ে যায় আকলিমা। এখন তার চিকিৎসা চলছে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে। এমনটাই জানাচ্ছিলেন নির্মম নির্যাতনের শিকার শিশু আকলিমার দাদি মনোয়ারা বেগম। 

নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের বিছানায় ছটফট করছে ১১ বছরের শিশু আকলিমা। দীর্ঘ আঠারো মাস বাসায় বন্দী রেখে তার ওপর চালানো হয়েছে নির্মম নির্যাতন। এমনকি ঠিকমতো তাকে খেতেও দেওয়া হতো না। যে কারণে সে হয়ে গেছে রোগাক্রান্ত ও অস্থিচর্মসার।

দাদি মনোয়ারা বেগম জানান, বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর থেকে মাগুরা সদরের বাহারবাগ গ্রামে তাদের কাছেই ছিল আকলিমা। পড়ত স্থানীয় একটি মাদরাসায়। ১৮ মাস আগে বাহারবাগের প্রতিবেশী বাবু ও তার স্ত্রী লিপি খাতুন আকলিমাকে তাদের ঢাকার বাসায় কাজের প্রস্তাব দেয়। মাসিক ১ হাজার টাকা পারিশ্রমিকের সঙ্গে থাকা-খাওয়া। রাজি হয়ে যান আকলিমার দাদা-দাদি। পরে বাবু ও লিপি দম্পতি আকলিমাকে প্রথমে নিয়ে আসে মাগুরা শহরের কলেজ পাড়ার বাসায়। পরে নিয়ে যায় ঢাকার মিরপুর-২ এর একটি ভাড়া বাসায়। সেখানেই বাবুর স্ত্রী লিপি গত আঠারো মাস ধরে নির্যাতন চালিয়েছে।

জানা গেছে, পারিবারিক এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আকলিমাসহ অভিযুক্ত লিপি খাতুন ও তার স্বামী বুধবার (২২ ডিসেম্বর) মাগুরায় আসে। স্বজনরা বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) আকলিমার সঙ্গে দেখা করতে যায়। আকলিমা খুব অসুস্থ দেখে একই দিন বিকেলে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে আকলিমার কাছ থেকে জানতে পারে তাকে নির্যাতনের কথা। ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে সদর থানা পুলিশ মাগুরা শহরের কলেজ পাড়ায় গৃহকর্তা মাসুদুর রহমান বাবুর নিজ বাসা থেকে লিপি খাতুনকে আটক করে। তবে বাবু পলাতক রয়েছেন। তিনি ঢাকায় একটি ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরত। মাসুদুর রহমান ও লিপি খাতুনের বিরুদ্ধে মাগুরা সদর থানায় আকলিমার দাদা তজলু শেখ মামলা করেছেন।

মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রফিকুল আহসান জানান, শিশুটির শরীরে একাধিক নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে। কিছু চিহ্ন গরম কিছুর ছ্যাকা। সবচেয়ে বড় কথা দীর্ঘদিনের অপুষ্টিতে তার শরীর কঙ্কালসার হয়ে গেছে। তাকে সব ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত লিপির স্বামী বাবুর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেন।

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম বলেন, শিশুটির দাদা তজলু শেখের মামলার ভিত্তিতে বাবুর স্ত্রী লিপি খাতুনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বাবুকে আটকের চেষ্টা চলছে।

খুলনা গেজেট/ এস আই




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!