খুলনা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দুরে রূপসা নদীর ওপারে বটিয়াঘাটা উপজেলা অংশের ভান্ডারকোট ইউনিয়নের শিয়ালীডাঙ্গা, হালিয়া ও নােয়াইলতলার স্থায়ী বাসিন্দা দীর্ঘদিন স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত। যাতায়াতে দুর্গম ও জনবহুল এলাকাবাসীর স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসাস্থল স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্র। তবে প্রায় দুই যুগ সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি স্থানান্তরিত হওয়া স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত হচ্ছেন শিয়ালডাঙ্গা, নোয়াইলতলা, হালিয়া, চান্দামারি, বুজবুনিয়া, গৌরম্ভা ও শ্রীরম্ভা এলাকার বিপুল জনগোষ্ঠি। স্বাস্থ্যসেবা পেতে বটিয়াঘাটার শিয়ালীডাঙ্গার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি সরকার নির্ধারিত স্থানে পুনঃস্থাপনের দাবিতে আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। খুলনা জিলা স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক মোঃ আমানত হালদার ও সমাজসেবক আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তারা বলেন, শিয়ালীডাঙ্গা গ্রামের বিশিষ্ট সমাজসেবক শেখ আফসার উদ্দিন আহমেদ, নবজান মােল্লা, সেকেন্দার আলী, ইয়াসিন সেখ, কওছার আলী সেখ ১৯৬১ সালে দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করেন। এলাকার হতদরিদ্র, দিনমজুর, কৃষক, জেলেরা চিকিৎসা সেবা নিয়ে সুস্থভাবে জীবন-যাপন করতো। পার্শ্ববর্তী বাগেরহাট জেলার রামপাল, ফকিরহাট, মোংলা উপজেলার অসুস্থ্য লােকজন শিয়ালীডাঙ্গা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা নিতেন। কিন্তু ১৯৯৮ সালে অর্থ আত্মসাত ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত করার লক্ষ্যে একদল স্বার্থানেষী ও কুচক্রীমহল শিয়ালীডাঙ্গা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি শিয়ালীডাঙ্গা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র নামে একই ইউনিয়নের লক্ষীখােলা গ্রামে নিয়ে যায়। সেখানে ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি স্থাপিত হয়। যার ফলে শিয়ালীডাঙ্গা, হালিয়া ও নােয়াইনতলা গ্রামের সেই হতদরিদ্র, দিনমজুর, কৃষক, জেলে ও সর্বসাধারণ লােকজন চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। ফলে এলাকাবাসীকে দূর-দূরান্তে যেয়ে চিকিৎসেবা নিতে হয়। এতে গরীব মানুষেরা কষ্ট ও আর্থিক ক্ষতির সন্মুখীন হচ্ছে। বিনাচিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছেন অনেকেই।
সহস্রাধিক বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোররা মানববন্ধনে অংশ নেন।
বক্তারা আরও বলেন, চারিদিকে নদী বেষ্ঠিত অত্র এলাকায় পঁচিশ সহস্রাধিক মানুষের বসবাস। নিকটবর্তী কোন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র
থাকার কারণে গর্ভবতী মা-বােন ও অসুস্থ্য লােকদের চিকিৎসার অভাবে জীবন দিতে হয়।
অন্যদিকে, লক্ষীখােলার যেখানে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছে সেখান প্রায় দেড় থেকে দুই কিলােমিটার দূরে টালিয়ামারা গ্রামে আরও একটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। ফলে একই এলাকার লােকজন চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে, আর শিয়ালডাঙ্গা, নোয়াইলতলা, হালিয়া, চান্দামারি, বুজবুনিয়া, গৌরম্ভা ও শ্রীরম্ভা এলাকার বিপুল জনগোষ্ঠি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি মূল জায়গায় পুুুনঃস্থাপনের দাবি এলাকাবাসীর।
খুলনা গেজেট/এআইএন