সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ১০-৩০ টাকা কমলেও এবার বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। সংকটের অজুহাত দেখিয়ে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগির দাম ফের ২০০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। তবে পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৮০-১২০ টাকা ওপাশাপাশি আলুর দাম কমেছে কেজিপ্রতি ৫ টাকা। সঙ্গে কমেছে ডিমের দামও।
বৃহস্পতিবার (০৪ ডিসেম্বর) খুলনা মহানগরী ও জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯৫-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা সাত দিন আগেও ১৮৫-১৯০ টাকা ছিল। তবে কমতে শুরু করেছে ডিমের দাম। খুচরা বাজারে সাত দিনের ব্যবধানে প্রতি হালি (৪ পিস) ডিমের দাম ২ টাকা কমে ৪২-৪৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, শীতে খামারে মুরগির রোগব্যাধি বেড়েছে। অনেক মুরগি মারা গেছে। যে কারণে সরবরাহ কমেছে। এছাড়া খামার পর্যায় থেকে দাম বাড়ানোর কারণে খুচরা বাজারে দাম বাড়ছে।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা, যা সাতদিন আগেও ৯০-১০০ টাকা ছিল।
প্রতিকেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-১১০ টাকা, যা আগে ১০০-১৩০ টাকা ছিল। খুলনা বড় বাজারের খুচরা বিক্রেতারা আশিকুর রহমান জানান, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। দেশি পেঁয়াজ পুরোদমে বাজারে এসেছে। সঙ্গে আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহও বেড়েছে। যে কারণে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা, যা গত সপ্তাহেও ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা কেজি, যা আগে ২৬০ টাকা ছিল। এছাড়া প্রতিকেজি আমদানিকরা আদা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা, যা সাত দিন আগেও ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
খুলনার সন্ধ্যা বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মিজানুর রহমান, সোহেল রানা বলেন, বাজারে বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম কমেছে। তবে যে হারে বেড়েছিল সে হারে এখনও দাম কমেনে। ভড়া মৌসুমে প্রতিকেজি পেঁয়াজ এখনও ৯০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। আদা ও রসুন কিনতে ২০০ টাকার উপরে খরচ করতে হচ্ছে। নতুন আলুতে বাজার ভরপুর। তারপরও ৫৫ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বিক্রেতারা সব সময় সুযোগ পেলেই কারসাজি করে। দাম বাড়িয়ে কয়েকদিন ভোক্তার পকেট কাটে। আবার পণ্যমূল্য কিছুটা কমিয়েও অতি মুনাফা করে এসব দেখার যেন কেউ নেই।
শীত মৌসুমে বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়লেও ক্রেতার বাড়তি দরেই কিনতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার খুলনার খুচরা বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০। এছাড়া প্রতিকেজি বেগুন কিনতে ক্রেতার গুনতে হচ্ছে ৫০-৭০।
সঙ্গে প্রতিকেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা এবং ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা। পাশাপাশি প্রতিকেজি কাঁচা টমেটো ৩০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০-৮০ টাকা, পটোল ৭০-৮০ টাকা, বরবটি ১০০-১২০ টাকা ও পেঁপে ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া স্থানভেদে কাঁচামরিচ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০-৯০ টাকা, ঝিঙা ৭০-৮০, কচুর লতি ৬০-৮০ টাকা, গাজর ৫০-৬০ টাকা, শসা ৬০-৭০ টাকা ও কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।
গল্লামারী বাজারের সবজি কিনতে আসা শহিদুল হক বলেন, শীতে বাজারে সব ধরনের সবজিতে ভরপুর। বিক্রেতারা ঝুড়ি বোঝাই করে সাজিয়ে রেখেছে। কিন্তু হাত দেওয়া যাচ্ছে না। দাম অনেক বেশি। এখন একটি ফুলকপি ৫০ টাকা দিয়ে কিনে খেতে হচ্ছে। যেখানে মৌসুমের শুরুতে এ সবজির দাম ২০-২৫ টাকা থাকে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল জাতীয় গণমাধ্যমকে বলেন, পণ্যের দাম ভোক্তা সহনীয় করতে প্রতিদিন বাজারে তদারকি করা হচ্ছে। এতে কিছু পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। বাকি যে সব পণ্যের দাম বেশি আশা করা হচ্ছে সেগুলোর দামও কমে আসবে।
খুলনা গেজেট/কেডি