খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড
  অ্যান্টিগা টেস্ট: তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ২৬৯/৯, পিছিয়ে ১৮১ রানে

ফের তেরখাদার ভূমি অফিসে দালালদের দৌরাত্ম

রাসেল আহমেদ,তেরখাদা

সরকার পরিবর্তনের পর কিছুদিন দালালদের উৎপাত বন্ধ ছিল। সম্প্রতি ফের তেরখাদা ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও বারাসাত ইউনিয়ন ভূমি অফিসে শুরু হয়েছে সেই সব চিহ্নিত দালালসহ নতুন নতুন দালালদের দৌরাত্ম। কেউ রাজনৈতিক নেতা,কেউ সাংবাদিক,কেউ সমাজ সেবক আবার কেউ সচেতন মহলের প্রতিনিধি ইত্যাদি লেবাস দালালেরা সেবা প্রত্যাশীদের পকেট কাটছে। সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চিহ্নিত দালাল ও নতুন দালালরা দুই ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চেয়ার-টেবিলে বসেই কাজ সারেন। দালালদের জিম্মিদশায় আর্থিক ক্ষতি ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত সেবা গ্রহীতারা।

সরেজমিন ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে,উপজেলাসহ তেরখাদা ও বারাসাতসইউনিয়ন ভূমি অফিসে শ’খানেক দালালের সক্রিয় সিন্ডিকেট।এরা নানাভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে উপজেলার সকল এলাকার ভূমিসংক্রান্ত কাজকর্ম। এসব দালালদের কাছে জিম্মি সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ।দালালদের প্রতিহত করা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। একজন ব্যক্তির কাজ ভূমি অফিসে থাকতেই পারে। কিন্তু একজন ব্যক্তির কাছে যখন একাধিক খারিজ ও মিস কেস ফাইলের তদ্বির থাকে তখনই তাকে দালাল বলে। কয়েক দিন ধরে বেশ কয়েকবার উপজেলা ভূমি অফিস,তেরখাদা ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও বারাসাত ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে দালালদের এমন উৎপাতের চিত্র দেখা গেছে। ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজের মূল্য তালিকা সম্বলিত সাইনবোর্ড ও কাগজ সরবরাহের নির্ধারিত সময়ের উল্লেখ শুধু লোক দেখানো। তালিকার মূল্যের ৫০-৬০ গুণ বেশি টাকা আর মাসের পর মাস পেছনে ঘুরে ভুক্তভোগীরা কাজ আদায় করেন। কোন কোন ক্ষেত্রে শতগুণ বেশি টাকা দিয়েও কেউ কেউ হয়রানির শিকার হন। এসব যেন দেখার কেউ নেই।

অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে ভূমি অফিসের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, হয়রানি ও ঘুষ বাণিজ্যের ভয়াবহ চিত্র। দালাল পরিবেষ্টিত ইউনিয়ন ভূমি অফিস গুলোতে দালালদের কাছে কোন কাজই অসাধ্য নয়। জমির বৈধ মালিক যেই হোক, চাহিদা মতো টাকা এবং দাগ খতিয়ান নম্বর দিলেই তা হয়ে যায় অন্যের। আবার বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও ঘুষের রেটে হেরফের হলে প্রকৃত ভূমি মালিকদের হতে হয় হয়রানির শিকার।ভূমি অফিসে এসব দালালের উৎপাতে অতিষ্ঠ এলাকার সাধারণ মানুষ।

উপজেলা সদর এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘ভাই কী আর করবো,এ অফিস গুলোতে দালাল ছাড়া কোনো কাজই হয় না।’নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই লোক আরও বলেন, ‘ভূমি সংক্রান্ত সমস্যার জন্য অফিসের কর্তা বাবুদের কাছে যেতে চাইলেও দালালরা যেতে দেয় না।কাজ করে দেওয়ার আশ্বাসে দালালরা হাতিয়ে নেয় মোটা অঙ্কের টাকা।’

দেখা গেছে, ভূমি অফিস বা সরকারি কোনো দপ্তরের কর্মচারী না হলেও দালালরা তেরখাদা ও বারাসাত ইউনিয়ন ভূমি অফিসে প্রতিনিয়তই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এরা এখন ভূমি অফিসের অঘোষিত কর্মচারী! এদের অত্যাচারে ভূমি অফিসে আসা জমির মালিকরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। দালাল ছাড়া কোনো ভুক্তভোগী ভূমি অফিসের ধারের কাছেও যেতে পারেন না। দালালরা নির্নিষ্ট সময়ে জমির খতিয়ান,ভূমিসংক্রান্ত মামলাসহ ভূমির বিভিন্ন সমস্যা দ্রুত সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাসে ভূমি অফিসের প্রকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম ভাঙিয়ে সেবা প্রত্যাশীদের প্রলোভনে ফেলে আদায় করে মোটা অঙ্কের টাকা।এ ছাড়াও ভূমি অফিসের একশ্রেণির কর্মচারীর সঙ্গে এসব দালালের দারুণ সখ্যতা।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দালালের উৎপাত তেরখাদা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে।ভুক্তভোগীরা দুর্নীতি দমন কমিশন বা যৌথবাহিনীর তদন্ত দাবি করে বলেন,ছদ্মবেশে অনুসন্ধান চালালে হাতে নাতে আটাক করতে পারবেন দালালদের।

এ ব্যাপারে তারকাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফা বেগম নেলী বলেন,ভূমি অফিসকে দালাল ও হয়রানিমুক্ত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। নতুন এসিল্যান্ড যোগদান করেছে দ্রুতই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!