খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৬শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়ালের দশ দিনের রিমান্ড আবেদন
  শহিদ আবু সাঈদ হত্যা মামলা : তদন্তে মিলেছে ৩০ জনের সম্পৃক্ততা মিলেছে
  এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু

ফের অস্থির চালের বাজার, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ৫-৭ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় ফের অস্থির হয়ে উঠেছে চালের বাজার। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি চালের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে সাত টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। মোটা চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ৬ টাকা ও চিকন চালের দাম ৬ থেকে ৭ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে চালের বাজারে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। তবে ব্যবসায়িরা বলছেন ধানের দাম বাড়ায় বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় চালের দাম বেড়েছে।

ব্যবসায়িরা জানিয়েছেন, গত ঈদের ছুটির পর থেকে মিলাররা সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করছে। এছাড়া অনেক ব্যবসায়ি ধান কিনে গুদামে মজুদ রাখার কারণে বাজারে চালের সংকট দেখা দেওয়ায় চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ৬ টাকা এবং চিকন চালের দাম কেজিতে ৬ থেকে ৭ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।

বুধবার (২৫ জুন) সকালে সুলতানপুর বড়বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রকার ভেদে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা বেড়েছে। খুচরা বাজারে মোটা জাতের একটি চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা ও অপরটি ৫৪ টাকা। এক সপ্তাহ আগে যার দাম ছিল ৪৮ ও ৫০ টাকা কেজি। একইভাবে ২৮ জাতের ৫৮ টাকার চাল ৬০ টাকা ও ৬০ টাকার চাল ৬৫ টাকা, ৫৬ টাকার রত্না চাল ৬০ টাকা এবং ৬৬/৬৭ টাকার মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৭২ টাকা কেজি। এছাড়া ৮০ টাকা কেজির বাশমতি বিক্রি হচ্ছে ৮৪/৮৫ টাকা।

এদিকে বাজারে হঠাৎ করে চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন ক্রেতারা। তারা দ্রুত সরকারকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

সুলতানপুর বড়বাজারে খুচরা চাল কিনতে আসা শহরের মুনজিতপুর এলাকার প্রবির কুমার ঢালী জানান, কোন কারণ ছাড়াই মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে প্রতিটি চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা বেড়েছে। এভাবে চালের দাম বাড়তে থাকলে আমাদের মত লোকের সংসার নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়বে। বাজারে দ্রব্যমূল্যের উপর কারো কোন নিয়ন্ত্রণ নেই জানিয়ে অযৌক্তিকভাবে হঠাৎ করে চালের দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

সুলতানপুর বাজারের খুচরা চাল ব্যবসায়ি নিউ ফাতেমা স্টোরের মালিক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা বাজারের পাইকারদের কাছ থেকে কেনা দাম থেকে ১ থেকে দেড় টাকা বেশিতে চাল বিক্রি করে থাকি। তবে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম বেশ বাড়তির দিকে। আগের তুলনায় কেজিতে ৪/৫ টাকা বেশি দামে আমাদের চাল কিনতে হচ্ছে। বাজারে চালের সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে। তবে সরবরাহ বাড়লে দাম কমতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাজারে চালের দাম বৃদ্ধির কারণ জানিয়ে বড় বাজারের চাল ব্যবসায়ি রাজু বলেন, ঈদের পর এখনো সব চালের মিল চালু হয়নি। যে গুলো চালু হয়েছে সে সব মিল মালিকরা বাজার চাল না দিয়ে সরকারি গুদামে দিচ্ছেন। যে কারণে বাজারের চালের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সরবরাহ বাড়লে দাম কমতে পারে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলীপুর এলাকার মিল মালিক আব্দুল গফুর সরদার জানান, সরকারি খাদ্য গুদামে ৩৬ টাকা কেজিতে ধান কেনা হচ্ছে। এছাড়া অনেক ব্যবসায়ি ধান কিনে গুদামে মজুদ রাখার কারণে বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ২১৫০ টাকা বস্তার ধান এখন কিনতে হচ্ছে ২৩৫০ টাকা থেকে ২৪০০ টাকায়। যে কারণে ধানের দাম বাড়ায় চালের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। ধানের সরবরাহ বাড়লে দাম কমতে পারে বলে জানান তিনি।

সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজারের চাউল ব্যবসায়ি সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন সাহা বলেন, গত একসপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে চালের দাম কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা যেসব মিলারদের কাছ থেকে পাইকারি রেটে চাল কিনতাম তারা ধানের দাম বৃদ্ধির কথা বলে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমরা মিলারদের কাছ থেকে মিল চেকে চাল কেনার পরে একটা মার্জিন লাভে তা বাজারে বিক্রি করে থাকি। দাম বৃদ্ধিতে আমাতের পাইকারদেও কোন হাত থাকে না।

চালের দাম বৃদ্ধির কারণ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, মিলারদের ভাষ্য অনুযায়ি ২১৫০ টাকা বস্তার ধান এখন কিনতে হচ্ছে ২৩৫০ টাকা থেকে ২৪০০ টাকায়। ধানের দাম বাড়লে বাজারে চালের দামও বাড়ে। মিলারদের অতিরিক্ত দামে ধান কেনায় বেশি দামে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে। ধানের দাম যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে তাহলে চালের দাম কমার আদৌ কোন সম্ভাবনা নেই বলে জানান তিনি।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!