রংপুরে পুলিশের একজন উপপরিদর্শক ও তাঁর মেয়ে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন হওয়ার পর দুজনের স্যালুট বিনিময়ের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়েছে। এই বাবা ও মেয়েকে দেখে অনেকে আবেগে ভেসেছেন। ওই পরিবারটির খুশি ছুঁয়ে যাচ্ছে অনেককেই। দুজনের পদমর্যাদার ওপরে রক্তের বন্ধনের উষ্ণতা হৃদয় ছুঁয়েছে সবার।
ফেসবুকে হাজারো মানুষের শুভকামনা, ভালোবাসা আর অভিনন্দন বার্তায় ভেসে যাচ্ছে ছবির নিচে কমেন্ট ঘর। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে একজন লিখেছেন, ‘অস্থির পরিস্থিতির মাঝে এই একটা ছবি শান্তির পরশ বুলিয়ে দেয়।’
একজন লিখেছেন, ‘গর্বিত পিতার গর্বিত কন্যা।’ একজন বলেছেন, ‘অসাধারণ, খুব ভালো লাগল।’
ছবির দুজন হলেন রংপুরের গঙ্গাচড়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুস সালাম ও সেনাবাহিনীতে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত তাঁর মেয়ে ক্যাপ্টেন শাহনাজ পারভীন। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার চন্দ্রখানা এলাকায় আবদুস সালামের বাড়ি। বর্তমানে চাকরির সুবাদে পরিবারকে নিয়ে তিনি রংপুরে বসবাস করেন।
পরিবার সূত্র জানায়, আবদুস সালামের তিন মেয়ে। বড় মেয়ে হলেন শাহনাজ পারভীন। তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজের ৪৩তম ব্যাচের (সেশন ২০১৩-২০১৪) শিক্ষার্থী ছিলেন। ইন্টার্ন শেষ করে সম্প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ক্যাপ্টেন পদে নিয়োগ পেয়েছেন। দ্বিতীয় মেয়ে উম্মে সালমাও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। তিনি পড়ছেন তৃতীয় বর্ষে। সবার ছোট স্মৃতিমণি এসএসসি পরীক্ষার্থী। বড় মেয়ের সাফল্য উদ্যাপনে বাবা-মেয়ে পরস্পরের মধ্যে স্যালুট বিনিময় করেন।
রংপুরের পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার লিখেছেন, ‘সন্তানের কাছে ধৈর্য, কষ্ট সহিষ্ণু ও নৈতিক আদর্শের প্রতীক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারলেই এ ধরনের অসাধারণ মুহূর্তের উদ্ভব হয়।’
ফেসবুকের মাধ্যমে এত দ্রুত বাবা-মেয়ের অভিবাদন বিনিময়ের ছবি যে ভাইরাল হবে, তা আবদুস সালাম ভাবতে পারেননি। তিনি চারদিক থেকে ফোন পাচ্ছেন। তিনি বলেন, এমন ছবি ফেসবুকে দেওয়ার পর ফোনে শুধু শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন শুনতে হয়েছে। চিকিৎসক মেয়ের এ কৃতিত্বের জন্য তিনি তাঁর স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের অবদানের কথা জানালেন জোর দিয়ে।
এদিকে নিজ সহকর্মীর সন্তানের সেনাবাহিনীতে উচ্চ পদে চাকরিপ্রাপ্তির সংবাদে আনন্দিত পুলিশ সদস্যরাও। গঙ্গাচড়া মডেল থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, ‘আমরা সবাই আনন্দিত।’ রংপুর জেলা পুলিশের ফেসবুক পেজে পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার বাবা ও মেয়েকে অভিনন্দন জনিয়ে লিখেছেন, ‘সন্তানের কাছে ধৈর্য, কষ্ট সহিষ্ণু ও নৈতিক আদর্শের প্রতীক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারলেই এ ধরনের অসাধারণ মুহূর্তের উদ্ভব হয়।’
আবদুস সালাম ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। চাকরির সুবাদে রাঙামাটি, খুলনা, ঢাকা, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও রংপুরে বিভিন্ন সময়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। আড়াই বছর ধরে তিনি রংপুরে কর্মরত আছেন।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি