কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ভাষায় বলি,
“ফুল ফুটুক না ফুটুক
আজ বসন্ত! ”
পলল বিধৌত হরিৎ বনরাজি ঘেরা, বিচিত্র এক দেশ,- নাম বাংলাদেশ। ঋতু পরিক্রমায় মেঘ মেদুর বর্ষা, আবার গ্রীষ্মের রৌদ্রময় নিদাঘ দুপুর, শরতের শিশির সিক্ত ঘাস মাড়িয়ে আসে হেমন্ত। এরপর বুকে কফ জমানো প্রচন্ড শীত ; শৈত্য প্রবাহ নানা দিকে জড়োসড়ো প্রকৃতির মধ্যে এক নতুন শিহরণ জাগিয়ে আনন্দের দোলা দিয়ে, পৌষ- ফাগুনের দোল দোলানো, গান শুরু হয়। দক্ষিণা মলয়ে, আমের মুকুল ফোটে । পুরনো পাতা ঝরে যায়, নেবু ফুলের মন মাতাল করা গন্ধে, দশ দিক আমোদিত হয়! মনে জাগে শিহরণ ! ফাগুনের হাওয়া লাগায়,অদ্ভুত এক মাদকতা!
ছাতার মত বড় পাতার নিচে বসন্তের বাতায়নে কালো কোকিলটি কুহু কুহু তান ধরে। সদ্য যুবতী নারীর অনুরাগ প্রবণ মনে কি যেন দিশাহারা অদ্ভুত অন্বেষা, কাকে যেন খোঁজে! সর্বত্র মৌমাছির গুন গুনানি গান। কামিনী, পলাশ, কৃষ্ণচূড়ায় আগুনঝরা, দশদিক পাগল করা, এক অন্তরঙ্গ দৃশ্যপট রচনা করে।
হাড়িতে ফুটন্ত সেদ্ধ ভাতের মতো চারিদিকে এক মাদকতা জড়ানো, ময় ময় রূপময় বৈচিত্র্য! সবাই কি যেন খোঁজে, কাকে যেন খোঁজে!
উদাস প্রকৃতি, নম্র কোমল মৃদুমন্দ দক্ষিণা- মলয়,
রূপসী যুবতীর অন্তরে অনুরাগের দোলা দিয়ে যায়।
সকল যুব প্রাণ হয় দিশেহারা। এভাবেই রূপময় বাংলাদেশে জাগ্রত হয় বসন্ত।
হয়তো মাঘের শেষ বিকেলে মেঘলা গুমোট হাওয়া, রাত্রে শীতের কনকনে হাড় কাঁপানো অনুভূতির মধ্যে উষ্ণ শিহরণ প্রভাতের তরুণ অরুণোদয়, ঝরা পাতার শব্দের মধ্যে বসন্ত চির জাগ্রত হয়, নতুন রূপ নিয়ে আবির্ভূত হয়। কখনো এর ব্যতিক্রমও হতে পারে! তবুও কবির ভাষায় বলতে হয় —
ফুল ফুটুক না ফুটুক,
আজ বসন্ত!
………………………………
পান্থসখা, ডুমুরিয়া, খুলনা।
১৪.০২.২০২৪খ্রিস্টাব্দ /পহেলা ফাল্গুন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ।