গোটা বাড়িতে সাজ সাজ রব। চলছে গান-বাজনা, আর ডেকোরেশন কাজ। বাড়ির সকলের মাঝে আনন্দের ছাপ। সকলেই নানা কাজে ব্যস্ত। আর একদিন পরেই এই বাড়িতে নয়নের বোনের বিয়ে। বাড়িঘর সাজাতে হবে, আনন্দ করতে হবে। ঘর সাজিয়ে গেট সাজিয়ে বর পক্ষ থেকে নিতে হবে নগদ টাকা। এসব ভাবনাই কাজ করছিলো ২০ বছরের তরুণ নয়নের ভেতরে।
ঘর সাজাতে ফুল কিনতে ঝিকরগাছার গদখালিতে দুই বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে রওনা দেয় নয়ন। কিন্তু ফুল নিয়ে বাড়ি ফেরা হলো না তাদের। সড়ক দূর্ঘটনায় ঝরে গেলো ফুলের মত তিনটি তাজা প্রাণ।ফুলের পরিবর্বিতে বিয়ে বাড়িতে ফিরে এলো তিনবন্ধু লাশ। যশোর-বেনাপোল সড়কের বেনেয়ালীতে মোটরসাইকেল-ইজিবাইকের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় তারা।
নিহত তিনজনের মধ্যে নয়ন ও তহিদুরের বাড়ি মণিরামপুর উপজেলার রোহিতা নোয়াপাড়া গ্রামে। অপর যুবক জীবন হোসেনের বাড়ি যশোর শহরের শংকরপুরে। পাত্রী মিতু হচ্ছেন নয়নের খালাতো এবং জীবনের মামাতো বোন। তাদের তিনজনেরই বয়স ১৮-১৯ বছরের মধ্যে। দুর্ঘটনার শিকার মোটরসাইকেলটি নিহত জীবনের। সে নিজে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলো। তিন তরুণের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে বিয়ে বাড়িতে। আনন্দের বদলে সেখানে চলেছে কান্নার রোল।
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বেনেয়ালীতে ইজিবাইকের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে যশোর-বেনাপোল সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে যশোর-বেনাপোল সড়কের বেনেয়ালীতে একটি ইজিবাইক ও একটি মোটরসাইকেলের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই জীবন নামের এক যুবক প্রাণ হারান। গুরুতর আহত মোটরসাইকেলের অপর দুই আরোহী নয়ন ও তৌহিদকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর দেড়টার দিকে মারা যান নয়ন ও তৌহিদ। তিনজনের মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহাদাত হোসেন বলেন, শুক্রবার গ্রামের মগরবের মেয়ে মিতুর বিয়ে। সেই আনন্দে বাড়ি সাজাতে গদখালিতে ফুল আনতে যায় ওই তিন যুবক। যাওয়ার পথে ঝিকরগাছার বেনেয়ালী এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজনই মারা যায়।
নাভারন হাইওয়ে পুলিশের ওসি এএসএম আসাদুজ্জামান বলেন, মোটরসাইকেলটি তিন যুবক দ্রুতগতিতে চালাচ্ছিল। বেনেয়ালী এলাকায় একটি ভ্যানের সাথে ধাক্কা লেগে বিপরীত দিক থেকে আসা ইজিবাইকের সাথে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে মারা যায় জীবন। গুরুতর আহত অপর দু’জনকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। এসময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার এম আব্দুর রশিদ দুপুর ১২টায় তহিদকে মৃত ঘোষণা করেন ও অপরজন নয়ন ভর্তির কিছুক্ষণ পরই মারা যায়।
খুলনা গেজেট/ এস আই
