দেড় বছর ধরে দেশে বিভিন্ন সময় ‘লকডাউন’, ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনার পাশাপাশি সাধারন মানুষকে মাস্ক ব্যবহার, জীবাণুনাশক টানেল, স্যানিটাইজারসহ সব ধরনের স্বাস্থ্য সুরক্ষার নির্দেশ দেয়া হলেও তেমন কার্যকর হয়নি। সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার পরও এর মধ্যেই করোনার ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সারাদেশে বিশেষ করে খুলনা জেলাতে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ অবস্থায় বছর ঘুরে আসছে মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। চলতি মাসের ২১ তারিখে ঈদ উল আযহা উদযাপিত হবে। প্রতিবারের মতো এবার ও ফুলবাড়ীগেট মিরেরডাঙ্গা পেট্রোলপাম্প সংলগ্ন বালুরমাঠে কোরবানির পশুর হাট বসছে। এতে করে নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে এই এলাকার সাধারন মানুষদের। তবে শেষমেষ যদি এবার হাট বসে ওই পশুর হাট কার্যত হয়ে যাবে, করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টা ছড়িয়ে পড়ার চারণভূমি। খানজাহান আলী থানার ফুলবাড়ীগেট মিরেরডাঙ্গা পেট্রোলপাম্প সংলগ্ন বালুর মাঠে কোরবানির পশুর হাট বসানোর অর্থই হবে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে থানা এলাকায় ছড়িয়ে দেয়ার ভয়াবহ প্লাটফর্ম।
খানজাহান আলী থানা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শেখ আনিছুর রহমান মঙ্গলবার গরুর হাট বন্ধের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান এমপি, খুলনা জেলা প্রশাসক, খুলনা মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ।
লিখিত অভিযোগে শেখ আনিছুর রহমান বলেন, মীরেরডাঙ্গা পেট্রোলপাম্প সংলগ্ন বালুর মাঠে অস্থায়ী পশুর হাট বসে, যার চারপাশে আবাসিক এলাকা, নিকটে কেডিএ আবাসিক, আর আর এফ, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার, খুলনা প্রকৌশলী ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), ফুলবাড়ীগেট বাজারসহ একাধিক এতিমখানা ও মাদ্রাসা রয়েছে। প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার লোকের সমাগম ঘটে মিরেরডাঙ্গা গরুর হাটে। কেসিসি নির্ধারিত জোড়াগেট, ফুলতলা ও শাহপুরে স্থায়ী হাট বসে। করোনা ভাইরাস যেহেতু খুলনা জেলা রেড জোন গুলোর মধ্যে অন্যতম তাই এই করোনা ভাইরাস থেকে ফুলবাড়ীগেট এলাকাসহ যোগিপোল ইউনিয়ন ও এর আশপাশের এলাকার সুরক্ষা রাখার কারনে পশুর হাট না হওয়ার জোর দাবি জানান তিনি।
ফুলবাড়ীগেট বাজার বনিক সমিতির সভাপতি বেগ লিয়াকত আলী বলেন, সীমান্তবর্তী জেলা তো আছেই খুলনা জেলার খানজাহান আলী থানা এলাকা এখন করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বেশি। ফলে এসব এলাকার গরুর ব্যাপারীরা যখন হাটে গরু নিয়ে আসবেন, তখন তারা সত্যিকার ঝুঁকি নিয়ে আসবেন। এ বছর ঝুঁকির ধরনটা বেশি। এবারে তারা এমন একটা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আসবেন, যেটার নাম ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এবং এটা আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
এলাকার সচেতন মহলের আশংকা ফুলবাড়ীগেটে কোরবানির পশুর হাট বসানো হলে, সেখান থেকেই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট থানা এলাকার সব জায়গাতে ছড়িয়ে পড়বে। কারণ স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলা হলেও কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানবে না, আর পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব নয়। পশুর সঙ্গে আসবে শত শত ব্যাপারী (মানুষ)। ফুলবাড়ীগেট পশুর হাটেই হবে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়ানোর মেলা।
বিশেষজ্ঞরা ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুর হাট না বসিয়ে বিকল্পভাবে পশু কেনাবেচার পরামর্শ দিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি