বিশ্বজুড়ে অসংখ্য খেলা প্রচলিত আছে। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় দুই খেলা হচ্ছে ফুটবল ও ক্রিকেট। কখনো কী মনে হয়েছে, এই দুটি খেলা একসঙ্গে খেলা গেলে কেমন হতো? সেই উত্তর খুঁজতে গিয়েই উৎপত্তি হয়েছে নতুন ধরণের এক খেলা, যার নাম দেয়া হয়েছে লেগ ক্রিকেট।
দুই খেলার সংমিশ্রণে তৈরি হওয়া লেগ ক্রিকেটে রয়েছে দারুণ সব নিয়ম। এখানে ক্রিকেট বলের জায়গায় ব্যবহার করা হয় ফুটবল। আর ব্যাটের বদলে পা দিয়েই শট করেন ব্যাটসম্যান তথা লেগসম্যান।
খেলার শুরুতেই জানিয়ে দিতে হয় কোন পা দিয়ে লেগসম্যান খেলবেন। যদি ভুল করে অন্য পা দিয়ে শট করেন তাহলেই তিনি আউট। এছাড়া স্ট্যাম্পে লাগলেও সাজঘরে ফিরতে হবে ব্যাটসম্যানকে।
এমন অদ্ভুত খেলার চর্চা শুরু হয়েছে খোদ ভারতে। লেগ ক্রিকেটের মাঠের আকৃতি গোলাকার। ব্যাসার্ধ ৮০ থেকে ১২০ ফুট। এই খেলায় ক্রিকেট বা ফুটবলের মতোই প্রতি দলে থাকে ১১ জন খেলোয়াড়।
তবে ক্রিকেটের পাওয়ার প্লে, ফিল্ডিংয়ে ৩০ গজের মাঝে খেলোয়াড় রাখার বাধ্যবাধকতা, এলবিডব্লিউ এসব কোনো নিয়ম এখানে রাখা হয়নি। এছাড়া নেই ব্যাট, প্যাড কিংবা গ্লাভসের ঝামেলা। বোলার একটি ফুটবল দিয়ে বোলিং করেন। বল বাউন্স করলেই ডাকা হয় নো-বল।
ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ভারতের মহারাষ্ট্রের আওরঙ্গবাদে অবস্থিত সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলের মাঠে এই খেলা প্রথম চালু হয়। তবে সেসময় কোনো নির্দিষ্ট নিয়মকানুন ছিল না। মূলত মজার ছলেই কিছু মানুষ এই খেলা খেলতেন।
দিল্লির শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক যোগিন্দর প্রসাদ ভার্মা ২০১০ সালে লেগ ক্রিকেট নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। এক পর্যায়ে খেলাটির আনুষ্ঠানিক নিয়মবালী তৈরি করে ফেলেন তিনি। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভারত ছাপিয়ে পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, ফ্লোরিডা, ঘানা পর্যন্ত চলে গেছে লেগ ক্রিকেট! এছাড়া বাংলাদেশেও লেগ ক্রিকেট খেলা হয়ে থাকে।
ভারতের বেশ কিছু রাজ্য এরই মধ্যে ‘লেগ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন’ গঠিত হয়েছে! লেগ ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা হলো আইএলসিসি! ২০১৩ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক লেগ ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় যেখানে অংশ নিয়েছিল ভারত ও নেপাল। এরপর বিভিন্ন বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে অংশ নেয় আরো পাঁচটি দেশ।
খুলনা গেজেট/এএমআর