পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় অবস্থিত ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেট খুলে দেওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। সোমবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি করতে ফারাক্কা ব্যারেজের গেট খুলে দেওয়ার বিষয়ে ভুয়া ভিডিও, গুজব এবং ভীতি ছড়ানো হচ্ছে।
ফারাক্কা ব্যারেজের গেট খুলে দেওয়ার বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র বলেছেন, আমরা ফারাক্কা ব্যারেজের গেট খুলে দেওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখেছি। গেট খোলায় স্বাভাবিক গতিপথে নদীর ভাটিতে গঙ্গা/পদ্মায় ১১ লাখ কিউসেক পানি প্রবাহিত হবে।
গঙ্গা নদীর অববাহিকার ক্যাচমেন্ট এলাকার উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই পানি প্রবাহিত হওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনা। বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, এটা বুঝতে হবে যে, ফারাক্কা কেবল একটি ব্যারেজ। এটা বাঁধ নয়। পানির স্তর ব্যারেজের সীমায় পৌঁছালে তা প্রবাহিত হয়।
জয়সওয়াল বলেছেন, ফারাক্কা ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক পানির সরিয়ে ফেলার একটি কাঠামো এই ফারাক্কা ব্যারেজ। যা গঙ্গা/পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত গেটগুলোর একটি সিস্টেম ব্যবহার করে সাবধানে করা হয়। সেই সময় বাংলাদেশের প্রধান নদী পদ্মায় পানি ভারসাম্যপূর্ণভাবে প্রবাহিত হয়।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র বলেছেন, ফারাক্কা ব্যারেজের গেট খুলে দেওয়ার বিষয়ে প্রোটোকল অনুযায়ী বাংলাদেশে সংশ্লিষ্ট যৌথ নদী কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত ও সময়মত তথ্য শেয়ার করা হয়। এবারও গেট খুলে দেওয়ার বিষয়ে সেটি করা হয়েছে।
রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘‘ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি করতে আমরা ভুয়া ভিডিও, গুজব এবং ভয়ভীতি ছড়াতে দেখছি। তবে সঠিক তথ্যের মাধ্যমে দৃঢ়ভাবে এই ধরনের গুজব প্রতিহত করা উচিত।’’
এর আগে, সোমবার বিকেলের দিকে ভারতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮ এক প্রতিবেদনে ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেটের সবগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানায়। এতে বলা হয়, প্রবল বৃষ্টির কারণে দেশটির বিহার ও ঝাড়খণ্ড রাজ্যে বন্যা ও পানির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ফারাক্কা ব্যারেজের সব গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের মুর্শিদাবাদসহ বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্প সূত্রের বরাত দিয়ে নিউজ১৮ জানায়, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বিপুল বৃষ্টি হওয়ায় ফারাক্কা ব্যারেজ প্রকল্পের পানির স্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে পানির চাপ সামলাতে ব্যারেজের সব গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে একদিনে বাংলাদেশে ১১ লাখ কিউসেক পানি প্রবেশ করবে।
খুলনা গেজেট/কেডি