খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৫৮

প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ইবি ছাত্রীকে হেনস্তা

ইবি প্রতিনিধি

সিনিয়র ভাইয়ের প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রী। অভিযুক্ত ফারুক হোসেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার (১১ মে) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী ছাত্রী।

অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী বলেন, ফারুক হোসেন নামের (আইডি নাম: Faruk Hossain বিপ্লবী) একজন ছাত্র নিজেকে মার্কেটিং বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে আমাকে ইনবক্সে প্রপোজসহ নানা বাজে টেক্সট দিয়ে এবং ক্যাম্পাসে সরাসরি বিরক্ত করে আসছেন। আমি তার কু–প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় প্রায়ই আমার পিছু নিয়ে বাজে মন্তব্য করতেন। বিষয়টি আমি আমার বন্ধু বান্ধবীদের জানাই। এরপরই ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যায়।

সম্প্রতি তিনি আবারো এমন কাজ করেন। আমি তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় উনি আমার ক্ষতি করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। এবং আমার ক্ষতি করার হুমকি ধামকি দেন। ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক নেতা এবং বড় ভাইদের ভয় দেখিয়েছেন। এরপরে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আমার ছবি দিয়ে ফেক আইডি খুলেছেন এবং ফটোশপে আমার ছবি বিকৃতি করে আমার পরিচিত বন্ধু-বান্ধব, ভাইয়া আপুদের রিকুয়েষ্ট দিচ্ছেন। আমাকে অশ্লীল ছবি এবং ভিডিও পাঠিয়েছেন। এই কর্মকাণ্ডে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি এবং একইসাথে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি উক্ত ব্যক্তির কুপ্রস্তাব, হুমকি এবং মানসিক ও সামাজিকভাবে লাঞ্ছিতের ঘটনার প্রতিকার চাচ্ছি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত ফারুকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সিনিয়র ও জুনিয়র মেয়েদের নানা ভাবে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে। ২০১৯ সালে বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে ম্যাসেঞ্জারে হেনস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০২০ সালে ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ও উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের এক ছাত্রীকে ম্যসেঞ্জারে উত্তক্ত করেন ফারুক। এর আগে কয়েকজন ভুক্তভোগী ছাত্রী অভিযুক্ত ফারুকের হেনস্তার বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন। এছাড়াও বাংলা, ইংরেজি, আরবি ভাষা ও সাহিত্য, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, সোশ্যাল ওয়ার্কসহ বিভিন্ন বিভাগের অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থীর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এর আগে আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ফেসবুক গ্রুপে (IUian-ইবিয়ান) হেনস্তার বিষয়ে স্ট্যাটাস দেন। মুহুর্তেই সেটি ভাইরাল হয়। পরে ওই স্ট্যাটাস মুছে ফেলার জন্য ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলেন, দীর্ঘদিন থেকে ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ছাত্রীদের নানা ভাবে উত্যক্ত করে আসছে। বিভাগের বড় আপু থেকে শুরু করে জুনিয়র মেয়েদের নানা ভাবে হেনস্তা করে সে। তার ছাত্রত্ব বাতিল করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে একাধিকবার কল করেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। কাল ভিসি স্যারের সাথে এ নিয়ে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

 

খুলনা গেজেট/এমএইচবি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!