খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬

প্রাথমিক বৃত্তির ফল ভজকটে দায়ী ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে মন্ত্রণালয়

গেজেট ডেস্ক

পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ফল তৈরিতে অবহেলা ও গাফিলতির দায়ে ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাদের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মহাপরিচালক ও তিন পরিচালককে শোকজ করা হচ্ছে। আর সংস্থাটির কম্পিউটার সেলের প্রধান প্রকৌশলী অনুজ কুমার রায়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হবে। বুধবার (১৫ মার্চ) এসব ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, বৃত্তি পরীক্ষার ফল নিয়ে ভজকটের দুটি প্রতিবেদন সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে জমা পড়ে। ৫ জনকে চিহ্নিত করে কমিটি। এই ফল তৈরিতে তাদের গাফিলতি প্রমাণিত হয়েছে বলে উভয় কমিটি মনে করছে। ওই ৫ জনের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মহাপরিচালক নিজে আছেন।

এছাড়া প্রশাসন, প্রশিক্ষণ এবং তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের (আইএমডি) পরিচালক ও কম্পিউটার সেলের প্রধান বা আইএমডির প্রকৌশলী আছেন। এদের মধ্যে ৪ জন সরাসরি জড়িত। আর দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসাবে মহাপরিচালক জড়িত। চিহ্নিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে প্রথম ৪ জনকে শোকজ আর শেষের জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হচ্ছে। তদন্ত কমিটিও এমন ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এ সংক্রান্ত ফাইল বুধবার দুপুরের দিকে মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন অনুমোদন করেছেন। এরপরই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অনুমোদিত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

এর আগে এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ  বলেন, দুই তদন্ত কমিটি কিছু পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ দিয়েছে। তারা এই ঘটনায় গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছে। পাশাপাশি গাফিলতিতে জড়িতদের সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করেছে। তাদের বিরুদ্ধে সেই অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে মন্ত্রণালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এই বৃত্তির ফল ঘোষণা করেন। এর ৪ ঘণ্টার মধ্যে কারিগরি ত্রুটির কারণ উল্লেখ করে ফল স্থগিত করে ডিপিই। ফল নিয়ে দেশব্যাপী বিতর্ক ও সমালোচনা শুরু হলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরে ১ মার্চ রাত ১০টার পর সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হয়। প্রায় সাড়ে ৮২ হাজার শিক্ষার্থী এবার বৃত্তি পেয়েছে। আর পরীক্ষা দিয়েছে ৪ লাখ ৮২ হাজার ৯০৪ শিক্ষার্থী।

সূত্র জানায়, কমিটি বৃত্তির ফল তৈরির সঙ্গে জড়িত কারিগরি দলের অন্তত তিনটি ক্ষেত্রে গাফিলতি পেয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, জেলা থেকে পাঠানো ফল সমন্বয়ের আগে সতর্কতার সঙ্গে কোড যাচাই করেনি। যেহেতু কম্পিউটারের যে কোনো প্রোগ্রাম কোড তৈরির মাধ্যমে চালাতে হয়। তাই কোডগুলোর দিকে নজর রাখলে সমস্যা এড়ানো যেত।

এছাড়া ফল তৈরির ক্ষেত্রে খাতার কোডিং এবং ডি-কোডিং প্রক্রিয়া থাকে। যেহেতু সারা দেশে জেলায় জেলায় আলাদা কাজ হয়েছে, তাই একই কোড কম্পিউটার সৃষ্টি করতে পারে, যা ম্যানুয়ালি ধরে ধরে যাচাই করা সম্ভব ছিল। আর এবারই প্রথম ‘ডিপিএমআইএস’ নামে একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে বৃত্তির ফল প্রস্তুত ও প্রকাশ করা হয়েছে। সেই সফটওয়্যারে কোডিং বিষয়টি মাথায় না থাকার কারণে এমনটা ঘটেছে। তবে সফটওয়্যারে কোনো কারিগরি ত্রুটি ছিল না।

যদিও তদন্ত কমিটির কাছে কারিগরি দলের সদস্যরা দাবি করেন, ২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ও সরকারি কর্মকমিশনের ফলেও এমন সমস্যা হয়েছিল। আর দীর্ঘদিন পর ফল তৈরির সফটওয়্যার ব্যবহারে এ ভুল হয়েছে। বিশেষ করে সময় স্বল্পতা বড় সমস্যা তৈরি করেছে।

সূত্র আরও জানায়, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের অঘটন আর না ঘটে সেজন্য সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে কয়েকটি সুপারিশও করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা যুগান্তরকে জানান, তদন্ত কমিটির সব সুপারিশ তারা বাস্তবায়ন করবেন।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!