খুলনা, বাংলাদেশ | ১৯ মাঘ, ১৪৩১ | ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  জয়পুরহাটে ঘন কুয়াশায় দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত
  রাজধানীর হাতিরঝিলের ফুলনপুরায় দুর্বৃত্তের গুলিতে আহত ২

প্রধানমন্ত্রী ভারত যাচ্ছেন আজ

গেজেট ডেস্ক

চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আজ সোমবার ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বরের এই সরকারি সফরের সময় তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। এছাড়া ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীশ ধনকড়ের সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ হবে। দুই দেশের প্রতিনিধি পর্যায়ে আলোচনা শেষে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তুতি চলছে।

দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলোর পাশাপাশি আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে দুই দেশের সহযোগিতার প্রসঙ্গগুলো আসতে পারে। পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধির পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে পারে- এমন বেশকিছু ইস্যু থাকবে আলোচনার টেবিলে।

এছাড়া জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকে অনেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন। সফরে দুই দেশের মধ্যে বিস্তৃত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব বিষয়ক চুক্তি থেকে মুলতবি হয়ে থাকা ইস্যুগুলোর সমাধান আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে আছে অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টনের বিষয়ও। শেখ হাসিনার সফরের সময় উভয় পক্ষই এসব ইস্যু তুলতে পারেন বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে।

বিশেষ করে, শেখ হাসিনা এ সফরে ভারত থেকে কী অর্জন করেন, তার দিকে নিবিড়ভাবে চোখ রাখবে বিরোধীরা। সফরসূচিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের বিষয় না থাকায় তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে অগ্রগতি হচ্ছে না বলে ধরে নিচ্ছে ভারতের গণমাধ্যমগুলো।

তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন আশা প্রকাশ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে অনিষ্পন্ন বিষয়গুলো নিয়ে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা অর্জন করা যাবে। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, এই সফর বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি ও বিদ্যমান গতিশীল সম্পর্ককে আরও সুসংহত করবে। গতকাল সেগুনবাগিচায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সফরের খুঁটিনাটি তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

জানানো হয়, চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার সকালে নয়াদিল্লির উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, রেলপথ মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গরা।

সফরকালে প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতায় অংশগ্রহণ করবেন। ৬ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি ভবনে গার্ড অব অনারের আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী রাজঘাট গান্ধী সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা অর্পণ করবেন।

এরপর দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন হায়দ্রাবাদ হাউজে। বৈঠকে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সকল বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। বৈঠকে দু’দেশের পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি যেমন: দ্বিপক্ষীয় সমপ্রসারণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, জনযোগাযোগ, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, নদীর অববাহিকাভিত্তিক পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত সুরক্ষা, নিরাপত্তা সহযোগিতা, মাদক চোরাচালান ও মানব পাচার রোধ গুরুত্ব পাবে।

বৈঠক শেষে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব চুক্তি সমঝোতা স্মারকের মধ্যে রয়েছে পানি ব্যবস্থাপনা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, আইন, প্রতিরক্ষা তথ্য ও সমপ্রচার। অনুষ্ঠান শেষে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করবেন।

দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের রাষ্ট্রপতি, উপ-রাষ্ট্রপতি, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হবে। এবারের সফরে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে যেসব ভারতীয় সেনাসদস্য শহীদ হয়েছেন বা আহত হয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্টুডেন্ট স্কলারশিপ’ প্রদান করা হবে। মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর- এ তিনটি পর্যায়ে স্কলারশিপ প্রদান করা হবে। প্রধানমন্ত্রী এ অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত থেকে শহীদ ও আহত ভারতীয় সেনাসদস্যদের পরিবারের মাঝে এ স্কলারশিপ নিজ হাতে তুলে দেবেন।

এর মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় সেনাসদস্যদের মহান আত্মত্যাগকে যথাযথ সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করা হবে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে একটি বিজনেস ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। ভারত ও বাংলাদেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এই ইভেন্টে উপস্থিত থাকবেন।

বিজনেস ইভেন্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের চিত্র ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছে তুলে ধরা হবে। ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করা হবে। সফর শেষে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!