মাঝে কেটেছে ক্লাসবিহীন ৫৪৪ দিন। সরকারি ফরমান অনুযায়ী আজ থেকে বিদ্যাপীঠে ঘন্টা বেজেছে। কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ছুটে আসে শিশু শিক্ষার্থীরা। আজকের প্রথম দিনে শিক্ষার সময়কাল ছিল তিন ঘন্টা পাঁচ মিনিট। পাঠদান হয়েছে তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির। শিক্ষার্থীরা পড়েছে গণিত, বাংলা ও ইংরেজী বিষয়ে। খুলনা জেলায় প্রথম দিনে ৭০ শতাংশ শিশু শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়েছে।
মহামাড়ি করোনার কারণে প্রাথমিক শিক্ষা বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলেছে। এসময়ের মধ্যে অনলাইনে ক্লাস হয়েছে। তাতে কোন পরিপূর্ণতা আসেনি। শিক্ষার্থীদের অভিমত স্কুলে না আসতে পারলে শিক্ষা জীবনের অসম্পূর্ণতা থাকলেও গৃহে পাঠাভ্যাস করেছে। যদিও তা বার্ষিক পরীক্ষার প্রস্তুতির যথেষ্ট নয়।
রূপসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানষ কুমার রায় বলেছেন ১৬জন শিক্ষকের সবাই উপস্থিত ছিল। পঞ্চম শ্রেণির ১৪৫ জন বিদ্যার্থীর মধ্যে ৭৫ জন এবং তৃতীয় শ্রেণির ১৪৮ জনের মধ্যে ৬৭জন উপস্থিত ছিল। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা ৫ মিনিট পর্যন্ত ৪৫ মিনিট করে বাংলা, ইংরেজী ও গণিত বিষয়ে পাঠদান হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ক্লাসের সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করেছে।
প্রথম দিনের ক্লাস শুরুর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে যেয়ে তিনি বলেন ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়ের মধ্যে ছিল হাসির বন্যা। বহুদিন পড়ে যেন হারানো কোন বিষয়ের ফিরে পাওয়ার আনন্দ।’
এবিদ্যাপীঠের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ ও রাজিয়া আক্তার সোহাগীর গণমাধ্যমের কাছে অভিমত ছিল,‘ অনেকদিন পর চিরচেনা বিদ্যাপীঠে এসেছি। চেনামুখ, শিক্ষক ও সহপাঠীদের পেয়ে যেন ঈদের আনন্দ ভোগ করছি। বিগত দিনগুলোতে অনলাইনে ক্লাশ করেছি কিন্তু পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য তা যথেষ্ট নয়।’
ভিক্টোরিয়া ইনফ্যান্টস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেব প্রষাদ বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘পঞ্চম শ্রেণিতে ৪১ জনের মধ্যে ৩০ জন এবং তৃতীয় শ্রেণিতে ৫১ জনের মধ্যে ৩৪ জন পাঠ গ্রহণের জন্য এসেছে। ৯জন শিক্ষকই পাঠ দান করেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাত ধোয়া, মাস্ক পড়ানো ও জেড পদ্ধতিতে ক্লাস করানো হয়েছে।’ তার দেয়া তথ্য মতে জেলার শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলে রহমান ও উপ পরিচালক মাহাবুব ই এলাহী প্রথম দিনের শিক্ষা কার্যক্রম দেখতে এ বিদ্যাপীঠ পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন দীর্ঘদিন পরে বিদ্যাপীঠ যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
বটিয়াঘাটা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আলমগীর হোসেন তথ্য দিয়েছেন ১১৫টি স্কুলে শিক্ষকের উপস্থিতি ১শ শতাংশ। শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ৭০ শতাংশ। তিনি টেংরাখালিসহ আরেকটি বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিরাজোদ্দোহা এ প্রতিনিধিকে জানান, জেলার ১০৫৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু হয়েছে। শতভাগ শিক্ষক পাঠদান করেছেন। জেলায় গড়ে ৭০শতাংশ শিক্ষার্থী ১ম দিন পাঠ গ্রহণ করেছে। তিনি জানান আগামীকাল প্রথম ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস চলবে। তৃতীয় শ্রেণির ক্লাস আগামী রোববার।
খুলনা গেজেট/ এস আই