রপ্তানিকারক, প্রক্রিয়াজাতকারণ কারখানায় ঋণ দেওয়া হলেও যুগের পর যুগ ধরে ব্যাংক ঋণ থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছিলেন উপকূলের মাছ চাষীরা। মাঠ পর্যায়ের মাছ চাষীদের ব্যাংক ঋণের আওতায় আনতে খুলনা অঞ্চলে ক্লাস্টারভিত্তিক (গুচ্ছভাবে) সিএমএসএমই ঋণ প্রদান কার্যক্রম শুরু করেছে বিভিন্ন ব্যাংক। মঙ্গলবার খুলনার একটি হোটেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এস এম হাসান রেজা ৪৭ জন উদ্যোক্তার মাঝে ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকার ঋণের চেক তুলে দেন।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, এতোদিন বিভিন্ন সেক্টরের উদ্যোক্তাদের মাঝে ক্লাস্টারভিত্তিক সিএমএসএমই ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু মৎস সেক্টর বরাবরই উপেক্ষিত থেকে গেছে। যার কারণে এবার মৎস খাতের প্রকৃত চাষীদের খুঁজে বের করে ক্লাস্টার ঋণ দেওয়া হচ্ছে। প্রথম ধাপে খুলনা জেলার ৬৯ জন মাছ চাষী ৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। তফসিলি ব্যাংকগুলো তাদের বিভিন্ন শাখার মাধ্যমে এই ঋণ বিতরণ করবে।
ঋণ পাওয়া কয়রা উপজেলার চাষী মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আগে বেশিরভাগ ব্যাংকই মৎস খাতে ঋণ দিতে চাইতেন না। স্থানীয় সমিতি থেকে মোটা সুদে ঋণ নিয়ে চাষীরা ঘের ও সাদা মাছ চাষ করতো। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই ঋণ কার্যক্রমে ক্ষুদ্র চাষীরা ঘুরে দাড়াবে।
এদিকে সিএমএসএমই ক্লাস্টারে অর্থায়ন বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে কর্মশালার আয়োজন করে অগ্রণী ব্যাংক খুলনা অঞ্চল। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন অগ্রণী ব্যাংকের খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ও উপ-মহাব্যবস্থাপক শেখ দীন মহম্মদ।
প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক খুলনার নির্বাহী পরিচালক এস এম হাসান রেজা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক আবু সাঈদ মো. আরিফ-উল ইসলাম, অতিরিক্ত পরিচালক মো. মনজুর রহমান, সোনালী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম, অগ্রণী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মো. নূরুল হুদা, জনতা ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মো. আবদুর রাজ্জাক ও রুপালী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক তাজ উদ্দীন আহম্মদ এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম। সার্বিক আয়োজনে ছিলেন অগ্রণী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. মশিউল ইসলাম।
কর্মশালায় খুলনা জেলার বিভিন্ন ব্যাংকের নির্বাহী, ব্যবস্থাপক, সিএমএসএমই উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এস এম হাসান রেজা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় সিএমএসএমই খাতের গুরুত্ব অপরিসীম। গুরুত্বপূর্ণ এ খাতকে এগিয়ে নিতে গুচ্ছভিত্তিক অর্থায়ন জনপ্রিয় একটি ধারণা। এতোদিন মাছ চাষীরা এই বাইরে ছিল। এখন থেকে তারাও গুচ্ছ ঋণ পাবেন। এতে করে খুলনা অঞ্চলের তরুণ উদ্যোক্তা ও নারী উদ্যেক্তারা ঘুরে দাড়াবে এবং দেশের উন্নয়নে অবদান রাখবে।
খুলনা গেজেট/এইচ