বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার উপর নেতারা গুরুত্বারোপ করলেও খুলনায় দিবসটি পলিত হয়েছে দু’গ্রুপের পৃথক কর্মসূচিতে।
বুধবার বেলা ১১টায় কেডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, “মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এদেশের মানুষের বাক স্বাধীনতা, মৌলিক স্বাধীনতা, কথা বলার অধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়ে়ছিলেন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতাও ফিরিয়ে দিয়ে়ছিলেন তিনি। বহুদলীয় গণতন্ত্রের যে কাঠামো সেই কাঠামো নির্মাণ করেছিলেন। একই সাথে তিনি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মৌলিক পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলেন। তথাকথিত সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা থেকে একটি মুক্ত অর্থ বাজার সৃষ্টি করেছেন। বাংলাদেশের যত রকম অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে তার মূল ভিত্তি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এর হাত ধরে হয়েছে।”
সাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জু আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নির্যাতন, খুন, গুম মানবাধিকার লঙ্ঘন বাংলাদেশের সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। দেশ বাঁচাতে-গণতন্ত্র ফিরে পেতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নামার প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য তিনি আহবান জানান।
সভায় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনা, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমির এজাজ খান, মোশারফ হোসেন, জাফরুল্লাহ খান সাচ্চু, শেখ ইকবাল হোসেন, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান মন্টু, শেখ আব্দুল রশিদ, রেহেনা আক্তার, এড. তসলিমা খাতুন ছন্দা, সাইফুর রহমান মিন্টু, অধ্যাপক মনিরুল হক বাবুল, আব্দুল রকিব মল্লিক, আরিফুজ্জামান অপু, সিরাজুল হক নান্নু, মাহবুব কায়সার, নজরুল ইসলাম বাবু, আশরাফুল আলম নান্নু, শামসুল আলম পিন্টু, মহিবুজ্জামান কচি, মেহেদি হাসান দিপু, ইকবাল হোসেন খোকন, মুজিবুর রহমান, জালু মিয়া, এস এম শাহজাহান, সাদিকুর রহমান সবুজ, নিজামুর রহমান লালু, ইউসুফ হারুন মজনু, সাজ্জাদ হোসেন পরাগ, কাজী মিজানুর রহমান মিজান, মোর্শেদুর রহমান লিটন, হাসানুর রশীদ মিরাজ, মিজানুর রহমান মিলটন, শামসুজ্জামান চঞ্চল, খাইরুল ইসলাম জনি, কামরুল ইসলাম শিপার, মশিউর রহমান যাদু, জাফরিন নেওয়াজ চন্দন, কাজী শফিকুল ইসলাম শফি, আবু সাইদ সেখ, ম শ আলম, শরিফুল ইসলাম বাবু, গোলাম কিবরিয়া আশা, হেমায়েত হোসেন, নাজির উদ্দিন নান্নু, হাসান মেহেদি রিজভী, শেখ জামিরুল ইসলাম, আবুল কালাম শিকদার, আফসার উদ্দিন মাস্টার প্রমূখ। আসাদুজ্জামান মুরাদ ও ওয়াহেদুজ্জামান রানা আলোচনা সভা পরিচালনা করেন।
দলের প্রতিষ্ঠা ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সকালে সুর্য্যদয়ের সাথে দলীয় পতাকা উত্তোলন, বেলা ১১টায় শান্তির প্রতীক পায়রা, বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে কর্মসূচির সুচনা করা হয়। আলোচনা সভার আগে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানসহ দলের নিহত, গুম খুনের শিকার নেতাকর্মী, মৃত্যুবরণকারী নেতা কর্মীদের স্মরণ করা হয় এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া পরিচালনা করেন আবু হোসেন বাবু এবং পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত করেন মাওলানা আব্দুল গফ্ফার। এছাড়া নগরীতে প্রতিষ্ঠাবাষিকী উপলক্ষে পোষ্টারিং ও দলীয় কার্যালয়ে সামনে তোরন নির্মাণ করা হয়।
অন্যদিকে বুধবার বিকেল সাড়ে ৩ টায় খুলনা প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে মহানগর ও জেলা বিএনপির (একাংশ) যৌথ উদ্যোগে পৃথক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল।
তিনি বলেন, “২০২৩ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হতে হবে এবং সেই নির্বাচন হতে হবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে। সেই নির্বাচন হবে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে নির্বাচনে অংশ নেয়ার পথ উন্মুক্ত করে। যারা জনগনের ভোট ছাড়া পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখল করে তারাই সব কিছুতে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আবিষ্কার করে।”
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি শেখ মুজিবর রহমান। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ প্রচার সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম। আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন মংলা পৌরসভার সাবেক মেয়র জুলফিকার আলী।
আজিজুল বারী হেলাল আরও বলেন, “আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ গণতন্ত্র মুক্ত করার। আর একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের। সে লক্ষ্য পূরণে সব ভেদাভেদ ভুলে বিএনপির নেতাকর্মীদের ভেতরে ইস্পাত ঢালা ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।”
আলোচনায় আরও অংশ নেন বিএনপি নেতা শফিকুল আলম তুহিন, মনিরুর হাসান বাপ্পী, খান জুলফিকার আলী জুলু, আজিজুল হাসান দুলু, মেজবাউল আলম, এহতেশামুল হক শাওন, মাহবুব হাসান পিয়ারু, তৈয়েবুর রহমান, আজিজা খানম এলিজা, সাইফুর রহমান মিন্টু, মোল্লা সাইফুর রহমান, হাফিজুর রহমান, একরামুল হক হেলাল, শামীম কবির, সুলতান মাহমুদ, আব্দুল আজিজ সুমন, আব্দুর রকিব মল্লিক, রফিকুল ইসলাম বাবু, সরদার আব্দুল মালেক, সাইদুজ্জামান খান, ইবাদুল হক রুবায়েদ, আতাউর রহমান রনু, অ্যাডভোকেট সেতারা সুলতানা, খান ইসমাইল হোসেন, কাজী নেহিবুল হাসান নেহিম, রিয়াজ শাহেদ, আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি, সজীব তালুকদার, ইসতিয়াক আহমেদ ইস্তি, গোলাম মোস্তফা তুহিন, মোঃ তাজিম বিশ্বাস, শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
বিএনপি নেতা মাসুদ পারভেজ বাবুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন জেলা বিএনপি নেতা হাফেজ মোঃ জাহিদুল ইসলাম। এরপর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, আরাফাত রহমান কোকো সহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা, বেগম খালেদা জিয়া সহ অসুস্থ সকল নেতাকর্মীর সুস্থতা কামনা এবং মহামারি করোনার কবল থেকে দেশ জাতি ও বিশ্বকে মুক্ত করার জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে বিশেষ দোয়া মোনাজাত করা হয়।
খুলনা গেজেট/ কেএম