বাগেরহাটের চিতলমারীতে প্রতিপক্ষের হামলায় আওয়ামীলীগ নেতা মোজাফফর হোসেন খান (৬৬) নিহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার কাননচক বাজার এলাকায় দুইপক্ষের সংঘষ ঠেকাতে গিয়ে আহত হন এই আওয়ামীলীগ নেতা। পরে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ উপজেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেলেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। নিহত মোজাফফর হোসেন খান কাননচক গ্রামের বাসিন্দা ও চিতলমারি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
স্থানীয় তানভীর আহম্মেদ মাটি বলেন, হিজলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের শীর্ষ এক নেতার বিবাহিত মেয়ের সাথে পরকিয়া রয়েছে এমন অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে কাননচক গ্রামের সজিব খান নামের এক যুবককে তুলে নিতে আসেন হিজলা এলাকার কাজী শাহেদসহ কয়েকজন। এ সময় কাননচক গ্রামের লোকজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজী শাহেদসহ তুলে নিতে আশা লোকজনকে বেধড়ক মারপিট করে। কাজী শাহেদের নেতৃত্বে তারা হিজলা এলাকায় ফিরে যায়। পরবর্তীতে হিজলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আবু শাহীন ও আওয়ামী লীগ নেতা লিটন কাজীর নেতৃত্বে দেড় থেকে দুইশ জন লোক কাননচক গ্রামে আসেন। তখন কলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ বাদশা মিয়া শেখের নেতৃত্বে কাননচক এলাকার লোকজন এক হয়। তখন দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল ছোড়াছুড়ি হয়। এতে কয়েকজন আহত হয়। গুরুতর আহত আওয়ামী লীগ নেতা মোজাফফর খানকে টুংগীপাড়া হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আওয়ামীলীগ নেতা মোজাফফর হোসেন খানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও পথ সভা হয়।
এদিকে খবর শুনে বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রাসেলুর রহমানসহ পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
নিহতের জামাতা স্বাধীন শেখ বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। পারিবারিকভাবে আলোচনা করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হবে।
কলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ বাদশা মিয়া শেখ বলেন, হিজলার লোকজন ঝামেলা করার জন্য ঢাল-শর্কি নিয়ে এসেছিল। পুলিশের সামনেই ঘটনা ঘটেছে। আমি উত্তেজনা থেমে যাওয়ার পরে আসছি।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই আওয়ামী লীগ নেতা লিটন কাজী ও হিজলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আবু শাহীনের মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে।
চিতলমারী থানার ওসি মোঃ ইকরাম হোসেন বলেন, মেয়েলি ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ দুই পক্ষকে শান্ত করে। পরে দুই পক্ষ যার যার স্থানে চলে যাওয়ার সময়, এক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়ে।পরে তাকে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন নিহত ব্যক্তিকে চড় থাপ্পর মারা হয়েছিল। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে নিহতের মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ কোনো অভিযোগ করেনি। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেডি