খুলনার বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও নেই আশানুরূপ বিক্রি। লোকসান এড়াতে কম মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রিতেও মিলছে না ক্রেতাদের সাড়া। ফলে পঁচনশীল এ পণ্যটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খুলনার ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজানে দাম বৃদ্ধির আশঙ্কায় অধিকাংশ ক্রেতা এ পণ্যটি কিনে ঘরে মজুদ করে রেখেছেন। ফলে এখন বিক্রি কমেছে।
সোনাডাঙ্গাস্থ ট্রাক টার্মিনাল কাঁচা বাজারের মেসার্স বাণিজ্য ভান্ডারের মালিক আব্দুল মালেক খুলনা গেজেটকে বলেন, এ বছর পেঁয়াজের ভাল ফলন হয়েছে। ফরিদপুর ও কুষ্টিয়ায় মোকামগুলোতে এ পণ্যটির আমদানি ব্যাপক। সেখানে এর দর পতন হয়েছে। তাছাড়া প্রতিদিন এ বাজারে আগের তুলনায় অনেক পরিমাণ পেঁয়াজ ঢুকছে। রমজানের আগে ক্রেতারা মাত্রাতিরিক্ত পেঁয়াজ কিনেছে। বিক্রি নেই তার ঘরে। তাছাড়া দর পতনে এটি বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় আছেন তিনি।
ওই বাজারের ব্যবসায়ী চান ফারাজী বলেন, রোজার শুরু থেকে পেঁয়াজের দর পতন হয়েছে। বাজারে ব্যাপক আমদানি হচ্ছে। ক্রেতারা কম আসছেন। যা আসছেন তার বেশীর ভাগ ফাটা পেঁয়াজ ক্রয় করছেন। কারণ এটির দাম খুবই কম। প্রতিকেজি ১০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। ভালমানের এ পণ্যটির ক্রেতার সংখ্যা কম।
ব্যাপারী মো: সোবহান হোসেন খুলনা গেজেটকে বলেন, ফরিদপুর ও কুষ্টিয়ার বিভিন্ন মোকাম ঘুরে পেঁয়াজ ক্রয় করে এ বাজারের ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করেন। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তিনি এ ব্যবসার সাথে জাড়িত। গত পাঁচ বছরেও তিনি এ পণ্যটির দাম এত নিচে নামতে দেখেনি। এক মণ রাখি পেঁয়াজ কিনতে তার ৮৫০ টাকা খরচ হয়েছে। প্রতিকেজি এ বাজারে আনতে ৪ টাকা খরচ হয়। সব মিলিয়ে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম পড়ে তার ২৪ টাকা ৫০ পয়সা। ক্রয় করে বাজারে এসে দেখেন ২০ থেকে ২২ টাকা চলছে এ পণ্যটির দাম। পেঁয়াজ ক্রয় করে তিনি বিপদে পড়েছেন। গত দু’সপ্তাহে তার এ ব্যবসায়ে অনেক লোকসান হয়েছে। বাজার দর এ অবস্থায় থাকলে অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে পারেন বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে কথা হয় ওই বাজারের অপর ব্যাপারী মো: আক্তারের সাথে। তিনি খুলনা গেজেটকে বলেন, ফরিদপুর ও কুষ্টিয়ার মোকামগুলাতে ফাটা পেয়াজের আমদানি বেশী। ভালমানেরটা খুব কম আসছে। ফাঁটা পেয়াজের প্রভাবে বাজার দর কমে গেছে। এ কারণে খুলনার অনেক ব্যবসায়ী শঙ্কায় রয়েছেন।
বড় বাজারের ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে যেটি পাওয়া যাচ্ছে তার অধিকাংশ ভেজা। এ পণ্যটি সংরক্ষণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে কৃষকরা। তাই উৎপাদন খরচ বাঁচাতে তারা কম দামে বিক্রি করছে। তবে পেঁয়াজের বাজার এরকম থাকবেনা।
সান্ধ্য বাজারের ব্যবসায়ী পরিতোষ খুলনা গেজেটকে বলেন, আধা পচা পেঁয়াজে ভরে গেছে বাজার। হকাররা হাক দিয়ে চার কেজি একশ’ টাকায় বিক্রি করছে। আর জনগণ হুমড়ি খেয়ে তা কিনছেন। তিনি বড় বাজার পাইকারী ঘর থেকে ২৬ টাকা দরে প্রতিকেজি পেঁয়াজ কিনেছেন। লেবার ও পরিবহন খরচসহ আরও বাড়তি ৪০ টাকা খরচ হয়েছে। ৩০ টাকার নিচে এ পণ্যটি বিক্রি করলে তার লস হবে বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।