ফেসবুকে পরিচয়, বন্ধুত্ব; এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে খুলনা পলিটেকনিক কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী (১৭)কে ধর্ষণ! এমন ঘটনার বিচার চেয়ে আদালতে মামলা দায়েরের পর উল্টো বিপাকে পড়েছে ভুক্তভোগী পরিবার। অভিযুক্ত ব্যক্তি পুলিশের সদস্য হওয়ায় কিশোরীর পরিবারকে নানাভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।
এমন অবস্থায় ওই কিশোরীর গ্রামের বাড়ি, ঘটনাস্থল পরির্শন করেছেন মামলার পিবিআই’র তদন্ত কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন। শনিবার (১৯ আগস্ট) তিনি কিশোরীর পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে কিশোরী ধর্ষণকাণ্ডের অভিযুক্তদের ক্ষমতার দাপট।
ভুক্তোভোগী পরিবার জানিয়েছে, অভিযুক্তের পরিবার মামলা তুলে নিতে ও এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি করলে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল মো. হাফিজুরের ভাই মো. আব্দুর রহিম এর আইডি থেকে পাঠানো মেসেজে লেখা ছিল ‘‘তোর কপাল এ দু:খ আছে, সয্য করতে পারবি নাহ’’। এছাড়াও মামলার স্বাক্ষীদেরকে স্বাক্ষর না দেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।
বরগুনা পুলিশ লাইনে কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল হাফিজুর(কনস্টেবল নং বিপি-৯৮১৮২১৮৪৮২) বিরুদ্ধে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে-২‘ এর আদালতে করা মামলার কার্যক্রম শুরু করেছে পিবিআই। ভিকটিম কিশোরীর মেডিকেল সম্পন্ন করার পর পিবিআই এর তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন শনিবার সকালে ভিকটিমের তেলিগাতী বাড়ীতে আসেন। এ সময় তারা ভিকটিম, ভিকটিমের পরিবার, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মামলার স্বাক্ষিদের সাথে কথা বলেন। পরে তারা ঘটনাস্থল বিলডাকাতিয়ার এরশাদের মাছের ঘেরের টোং ঘর পরিদর্শন করেন। এ সময় উপস্থিত সকলে পিবিআইকে ঘটনার বিবারণ তুলে ধরে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য হাফিজুরের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করেন।
এলাকাবাসী জানায়, হাফিজুর বিরুদ্ধে মেয়েদেরকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত। আর তাঁর এ সকল অপকর্মের অস্ত্র হিসাবে পুলিশের পেশাককে ব্যবহার করছে। যা এই মহান পেশাকে সে কলুষিত করছে।
স্থানীয়রা জানান, ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে উঠা সকল অভিযোগের তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে আগামীতে তাঁর দ্বারা এ ধরণের অপকর্ম আরো বাড়তে থাকবে।
ভুক্তভোগী কিশোরী বলেন, আমাকে ও আমার পরিবারকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমার পক্ষে যারা স্বাক্ষ্য দিতে চায় তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। সম্প্রতি আমার মোবাইলে হাফিজুরের ভাই আব্দুর রহিম একটি মেসেজ পাঠিয়েছে যাতে লেখা ছিল ‘‘তোর কপাল এ দু:খ আছে, সয্য করতে পারবি নাহ’’।
তিনি বলেন, মামলা করে বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
উল্লেখ্য, দৌলতপুর থানাধিন কার্ত্তিককুল এলাকার কাশেম শেখের পুত্র বরগুনা পুলিশ লাইনের পুলিশ কনস্টেবল মো. হাফিজুরের বিরুদ্ধে খুলনা পলিটেকনিক কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ এনে আদালতে দুটি মামলা করেছেন। মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে। তাছাড়া পুশিল প্রধানের কাছে করা অভিযোগের তদন্ত কার্যক্রম ও চলমান রয়েছে।
খুলনা গেজেট/ বিএম শহিদুল