পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র বের হয়ে আসার পর অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সব অনুসন্ধানে বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। কয়েকটি ব্যাংক হিসাবে তাদের অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পায় সংস্থাটি।
এ ঘটনায় দেশব্যাপী শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। তখন আত্মগোপনে চলে যান বেনজীর। গত ৪ মে অত্যন্ত গোপনীয়তায় পুলিশের সহযোগিতায় দেশ ছেড়ে চলে যান তিনি।
বিষয়টি তখন গোপন থাকলেও সরকার তাকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে বলে মন্তব্য করেছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সেই অভিযোগের সত্যতা মেলে সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি সিসিটিভি ফুটেজে। তাতে দেখা যায়, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ দেশ থেকে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেতে পেরেছেন পুলিশেরই এক নারী কর্মকর্তার সহযোগিতায়।
ওই নারী কর্মকর্তা হলেন, সিনিয়র সহকারী পরিচালক (অপস) অ্যাডিশনাল এসপি শাহেদা সুলতানা। বর্তমানে তিনি র্যাবে কর্মরত।
৪ মে রাত পৌনে ১২টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বেনজীরকে তুলে দেন শাহেদা সুলতানা। সিসিটিভিতে বেনজীরের কাগজপত্রসহ আগে আগে হাঁটতে দেখা যায় তাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শাহেদা সুলতানা অনেকদিন ধরেই বেনজীর পরিবারের ঘনিষ্ঠ। বেনজীর র্যাব মহাপরিচালক থাকাকালে শাহেদাও কর্মরত ছিলেন র্যাবে। বেনজীর আইজিপি হলে শাহেদার পোস্টিং হয় আইজিপি সেকশনে। সেখানে তিনি আইজিপির স্ত্রীর প্রটোকল অফিসার হিসেবে যোগদান করেন।
অবসরে যাওয়ার পর আবার র্যাব সদর দপ্তরের অপারেশন উইংয়ে সিনিয়র সহকারী পরিচালক (অপস) হিসেবে পোস্টিং পান শাহেদা সুলতানা। বেনজীর যখন দেশ ছেড়ে চলে যান, তখন তিনি র্যাবে কাজ করা সত্ত্বেও প্রভাব খাটিয়ে তাকে ইমিগ্রেশন পার হতে সাহায্য করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে র্যাবের সদ্য যোগদান করা মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম শহীদুর রহমান বলেন, আমরা বিষয়টি জেনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।
কোনো তদন্ত কমিটি করা হয়েছে কি না— জানতে চাইলে তিনি বলেন, না কোনো তদন্ত কমিটি করা হয়নি। আমরা এটা খতিয়ে দেখছি।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা এসপি শাহেদা সুলতানার সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
একই সঙ্গে একাধিকবার বেনজীর আহমেদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে যোগাযোগ করা হয়। রিং হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
খুলনা গেজেট/কেডি