ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনার গ্রুপের অগ্রসরের খবরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিমানে করে মস্কো থেকে পালিয়েছেন বলে দ্য নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ফ্লাইট রাডারের তথ্যমতে, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের একটি বিমান মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গে উড়ে যাওয়ার পর তা রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। এরপর থেকেই পুতিনের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দাবি করা হচ্ছে- ভাগনার গ্রুপের অগ্রসরের খবরে পুতিন মস্কো থেকে পালিয়েছেন।
তবে পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ পুতিনের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ক্রেমলিনে কাজ করছেন।’
এদিকে চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ বলেছেন, তার বাহিনী ভাগনার গ্রুপকে দমন করতে রাশিয়ায় সাহায্য করছে আসছে। ভাগনার গ্রুপ রাশিয়ার দুটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তাতে পুতিনের সমগ্র কর্মজীবনের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে এটি।
এদিকে মস্কোর প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণে লিপেটস্ক অঞ্চলে রাশিয়ান ভাড়াটে ওয়াগনার সেনাদের অবস্থান করার কথা জানিয়েছেন একজন রুশ গভর্নর। রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে উৎখাত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা মস্কো যাওয়ার পথে রয়েছে।
অধিকৃত ইউক্রেন থেকে ওয়াগনারের লোকদের রাতারাতি রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার এবং রাশিয়ার শীর্ষস্থানীয়দের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করার পর ওয়াগনারপ্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন মস্কোতে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ওয়াগনার ভাড়াটেরা দক্ষিণের শহর রোস্তভ-অন-ডনে একটি সেনা সদর দপ্তর দখল করেছে।
এ ছাড়া তারা ভোরোনেজ অঞ্চলেও ছিল বলে জানা গেছে। তবে লিপেটস্ক অঞ্চলটি এখন পর্যন্ত মস্কোর সবচেয়ে কাছের অবস্থান, যেখানে ওয়াগনার সেনাদের দেখা গেছে।
গভর্নর ইগর আর্টামনভ টেলিগ্রামে বলেছেন, ‘ওয়াগনার ভাড়াটে গোষ্ঠীর সেনাদের যান লিপেটস্ক অঞ্চলজুড়ে চলছে।’ এ ছাড়াও বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে বের হতে বা কোনো প্রকার পরিবহন ব্যবহার না করার সুপারিশ করেছেন তিনি। তবে ঠিক কোন অঞ্চলে ওয়াগনার সেনাদের দেখা গেছে তিনি তা বলেননি।
অন্যদিকে ইউক্রেনের সংঘাতকে ঘনিষ্ঠভাবে বিশ্লেষণ করা ক্রেমলিনপন্থী টেলিগ্রাম চ্যানেল রাইবার বলেছে, মস্কো থেকে ৩৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইয়েলেটসের কাছে ওয়াগনার সেনাদের দেখা গেছে। তবে এ প্রতিবেদনটি যাচাই করা যায়নি।
এ ছাড়া মস্কোর আরো উত্তরে কালুগা অঞ্চলেও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা চালু করা হয়, যখন ওয়াগনার বাহিনী রাজধানীতে অগ্রসর হয়েছিল।
গভর্নর ভ্লাদিস্লাভ শাপশা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘অনুগ্রহ করে এই রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়িতে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন, যদি না একেবারে প্রয়োজন হয়।’ রাশিয়া মস্কোতে একটি ‘সন্ত্রাসবিরোধী শাসন’ চালু করেছে।
আরো পড়ুন : ওয়াগনার বিদ্রোহের পর মিত্রদের সঙ্গে কথা বললেন পুতিন
দক্ষিণ ভরোনেজ অঞ্চলে কর্তৃপক্ষ বলেছে, সামরিক বাহিনী ‘যুদ্ধ’ অভিযান চালাচ্ছে। একটি বিশাল তেল ডিপোতে আগুন লাগার খবরও দিয়েছে তারা।
অপরদিকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিদ্রোহীদের শাস্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে অভিহিত করেছেন।
প্রিগোজিন তার দীর্ঘদিনের নেতার প্রতি পাল্টা উত্তরে বলেছেন, তিনি ‘অত্যন্ত ভুল’ ছিলেন এবং মস্কোকে চাপ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ওয়াগনারপ্রধান বলেছেন, তার লোকেরা রাশিয়ায় প্রবেশ করে ‘একটি গুলিও’ না চালিয়ে রোস্তভ-অন-ডনে সেনা ভবন দখল করেছে। তিনি স্থানীয়দের সমর্থন পাওয়ার দাবিও করেন।
খুলনা গেজেট/এমএম