খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সোনারগাঁওয়ে টিস্যু গোডাউনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১২ ইউনিট
  আগামীতে সরকারের মেয়াদ হতে পারে চার বছর : আলজাজিরাকে ড. ইউনূস

পাবনায় নির্বাচনী স‌হিংসতায় স্বতন্ত্র চেয়ারম‌্যান প্রার্থী নিহত, গু‌লি‌বিদ্ধসহ আহত ১২

গেজেট ডেস্ক

পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকা ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইয়াসিন আলম (৪০) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও ১২ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শনিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে ইউনিয়নের চারা বটতলার ইন্দারা মোড় কালুরপাগা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন কলেজ শিক্ষার্থী ভাড়ারা গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে রিয়াদ হোসেন (২২), ভাড়ারা গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে তুহিন আহমেদ (২৩), আব্দুর রহিম (৩৩), হোসেন আলী (৫০), রুবেল (৩০), নলদহ গ্রামের হিরা শেখের ছেলে আল্রেক শেখ (৪০), জসিম উদ্দিন (৩৫), আবু তালেব (৩২), তুহিন হোসেন (২৭), আব্দুল্লাহ (৩৫), লালু শেখ (৩৩), মোস্তফা (৪০) এবং আল আমিন (২৮)। বাকিদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়রা জানান, সকালে বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী (ঘোড়া মার্কা) সুলতান মাহমুদের ১৫-২০ জন সমর্থক নির্বাচনী প্রচারণায় বের হন। এ সময় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খানের লোকজনের সঙ্গে ব্যাপক গোলাগুলি হয়। এতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইয়াসিন আলীসহ দুই পক্ষের অন্তত ২০ জন গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে ছয়জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

ভাঁড়ারা ইউনিয়নের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী সুলতান মাহমুদ বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যানের লোকজন আমার কর্মীদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এতে ১২ জন গুলিবিদ্ধসহ ২০ জনের মতো আহত হয়েছে। ভোট শুরু হওয়ার আগে থেকেই বর্তমান চেয়ারম্যানের লোকজন হামলা ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। এই ঘটনায় অনেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছে। যেকোনো সময় দুই একজন মারা যেতে পারে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনে হেরে যাওয়ার আশঙ্কায় প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই নৌকার লোকজন ভোট চাইতে দিচ্ছে না। নির্বাচনী পোস্টার ছেঁড়া থেকে শুরু করে অফিস ভাঙচুরসহ আমাকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। সুষ্ঠু ভোট নিয়ে আমি শঙ্কার মধ্যে আছি।

তবে নৌকার প্রার্থী আবু সাঈদ খান বলেন, রাতে আমার লোকজন ভোট চাইতে গেলে কালাম মেম্বারকে সুলতানের লোকজন হাতুড়ি পেটা করলে সকালে আমি তাকে দেখতে যাই। ফিরে আসার পথে কোলাদী ইন্দ্রারা মোড়ে আসলে সিএনজিতে করে এসে জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে সুলতানের লোকজন আমাদের ওপর বৃষ্টির মতো গুলি করে। এ সময় আমাকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরলে আমার ছোট ভাইয়ের পায়ে গুলি লাগে। এ সময় আমি পাশের ড্রেনে লাফিয়ে না পড়লে আমাকে তারা হত্যা করত। এ ঘটনায় আমার ১০-১২ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের অর্থোপেডিকস কনসালটেন্ট ডা. রাশেদুল ইসলাম বলেন, আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে। কয়েকজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ১০-১২ জনের এই হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।

সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, ভাড়ারা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। অন্তত ১২ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। কয়েকজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

পাবনা জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান বলেন, নির্বাচনে সহিংসতা না করতে সব প্রার্থীকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারপরও যদি কোনো প্রার্থীর লোকজন হামলা চালায় তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, আগামী ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে পাবনা সদর উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!