খুলনা, বাংলাদেশ | ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৪ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  চট্টগ্রাম বন্দর অর্থনীতির হৃদপিন্ড, চট্টগ্রাম বন্দরকে সত্যিকার বন্দরে পরিণত করার কাজ চলছে : প্রধান উপদেষ্টা
  ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্য হত্যার ঘটনার রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার ৩

পাক-ভারত সংঘাত : প্রথাগত যুদ্ধের বদলে নতুন অস্ত্র ও কৌশল দেখলো বিশ্ব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

উপমহাদেশের মানুষ নতুন এক যুদ্ধের রূপ দেখল। এবারের পাক-ভারত সংঘাতে প্রথাগত যুদ্ধের বদলে ব্যবহার হয়েছে নতুন অস্ত্র ও কৌশল। মাত্র তিন দিনের সীমিত আকারের যুদ্ধে ধুলায় মিশে গেছে ভারতের অহংকার।

ভারতের তিন অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র রাফালে ফাইটার জেট, ইসরাইলের হারপ কামিকাজি ড্রোন এবং এস-৪০০ মিসাইল ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে।

দ্য ইকোনমিস্ট এক বিশ্লেষণে বলছে, লড়াইয়ে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ইসরাইলি ড্রোন থেকে শুরু করে চীনা যুদ্ধবিমান পর্যন্ত অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার হয়েছে। সীমিত আকারের এই যুদ্ধ এসব অস্ত্রের পরীক্ষাগারে পরিণত হয়। যুদ্ধে নতুন চমক সৃষ্টি করে চীনা জে-১০সি যুদ্ধবিমান। এই যুদ্ধবিমানে পিএল-১৫ দূরপাল্লার আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যা ভারতের দুটি রাফালে যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে।

৬ ও ৭ মে ভারত-পাকিস্তানের ১০০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান এই আকাশ যুদ্ধে অংশ নেয়, যা সাম্প্রতিক বিমানযুদ্ধের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ডগফাইট। সিএনএন এক রিপোর্টে বলছে, ১৬০ মাইল পর্যন্ত দূরত্বে ক্ষেপণাস্ত্র বিনিময় হয়। কিন্তু কোনো দেশ আকাশসীমা লঙ্ঘন করেনি। পাকিস্তান বিমানবাহিনী ডগফাইটের সময় বিধ্বস্ত ভারতীয় রাফালে জেটগুলোর অডিও রেকর্ডও প্রকাশ করে। নিউজ উইক জানিয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সবচেয়ে বড় বিমানযুদ্ধগুলোর মধ্যে একটি ছিল এই যুদ্ধ।

ব্রিটিশ নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অধ্যাপক মাইকেল ক্লার্ক স্কাই নিউজকে বলেছেন, পাকিস্তান তার সামরিক হার্ডওয়্যার ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার শক্তি দিয়ে ভারতকে অপ্রস্তুত করে ফেলে। পাকিস্তান বিভিন্ন ধরনের অত্যাধুনিক চীনা প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে, যা ভারতের কল্পনার মধ্যে ছিল না। এই প্রযুক্তিগত দক্ষতা ভারতকে অবাক করেছে।

এর মধ্যে ভারতের আরেকটি বিপর্যয় ছিল এস-৪০০ মিসাইল ব্যবস্থা ধ্বংস। পাকিস্তানের জিও নিউজ তাদের এক বিশ্লেষণে বলছে, পাকিস্তান বিমানবাহিনীর জন্য একটি বড় সাফল্য, জেএফ-১৭ থান্ডারের ছোড়া হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উধমপুরের বিমানঘাঁটিতে ভারতের এস-৪০০ সিস্টেম ধ্বংস করে দিয়েছে। এই হামলায় ভারতের বিমানঘাঁটিটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাশিয়া থেকে কেনা এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মূল্য প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার।

ভারত এখনো রাফালে বিমান হারানোর কথা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি। ফরেন পলিসির এডিটর ইন চিফ রবি আগারওয়াল মনে করেন, ২০১৯ সালে বিমান সংঘাতে পাকিস্তানিদের হাতে বন্দি হয়েছিলেন এক ভারতীয় পাইলট। এরপর মুখরক্ষার জন্য ভারত পাকিস্তানি এফ-১৬ বিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছিল। কিন্তু পাকিস্তান তা অস্বীকার করে। যুক্তরাষ্ট্র পরে তদন্ত করে জানিয়েছিল, কোনো এফ-১৬ বিমান ধ্বংস হয়নি। ভারতের দাবি ছিল মিথ্যা। কিন্তু ভারতে তখন নির্বাচন আসন্ন। সেখানকার মিডিয়া এই সত্য আর সামনে আনেনি। মোদি বড় ব্যবধানে তখন জয়ী হন। এবার পাকিস্তান পাঁচটি ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করার কথা জানিয়েছে। এরই মধ্যে ফ্রান্স খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। বিবিসি ও আলজাজিরার মতো সংবাদমাধ্যমও তাদের অনুসন্ধানে এ দাবির সত্যতার কথা জানিয়েছে। কিন্তু ভারত এটা নিয়ে চুপ করে আছে। সেখানকার মিডিয়া এই তথ্য চেপে গিয়ে হামলার সাফল্য প্রচার করছে। কিন্তু দিন যত যাবে, তত সত্য উন্মোচিত হবে, তাতে মোদি আরো বিপর্যয়ের মধ্য পড়বে।

হামলার শুরুতেই পাকিস্তানের মিসাইল আঘাত করে পাঞ্জাবের ব্রহ্মস মিসাইল গুদামে। এ ছাড়া সাইবার হামলা চালানো হয়েছে ভারতের পাওয়ার গ্রিড বা বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায়।

সিএনএনসহ পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ভারতের বিপর্যয়ের পর তৎপর হয়ে ওঠে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই যুদ্ধের ওপর নজর রাখছিলেন হোয়াইট হাউসের শীর্ষ তিন কর্মকর্তা ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও আর হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ সুসি ওয়াইলস। তারা এমন কিছু গোয়েন্দা তথ্য জানতে পারেন, যাতে এই যুদ্ধে ভারতের পরাজয় শুধু নয়, পুরো এশিয়ার গতিপথ বদলে দেবে। এরপর দ্রুত তৎপর হয়ে ওঠে হোয়াইট হাউস। যুদ্ধ বন্ধ করতে মোদির সঙ্গে তাৎক্ষণিক কথা বলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স।

সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পুরোমাত্রায় যুদ্ধ হলে তার রূপ কেমন হতে পারে, তার একটি মহড়া ছিল এই যুদ্ধ। রিয়েল টাইম তথ্য, আধুনিক সমর প্রযুক্তির কাছে অনেক বড় দেশ নাস্তানাবুদ হয়ে যেতে পারে। ভারত তার সামরিক সক্ষমতা নিয়ে যে গর্ব করত, এই যুদ্ধের পর তাদের নতুন করে ভাবতে হবে।

সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রথাগত সামরিক সক্ষমতা দিয়ে এখন আর পাকিস্তান ও ভারতের সামরিক শক্তির বিশ্লেষণ করার সুযোগ নেই।

বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসেবে ভারতের বৃহত্তম সামরিক বাহিনী রয়েছে, যার সংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ। সেনাবাহিনীতে ১২ লাখ। নৌবাহিনীতে ৬০ হাজার এবং বিমানবাহিনীতে এক লাখ ২৭ হাজার সৈন্য রয়েছে। দেশটির প্রতিরক্ষা ব্যয়ও অনেক বেশি। ২০২৪ সালে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যয় ছিল ৭৭ বিলিয়ন ডলার, যা চীনের পর এশিয়ার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয়।

পাকিস্তানের জনসংখ্যা আয়তনে ভারতের এক-পঞ্চমাংশ এবং দেশটি বছরের পর বছর ধরে অর্থনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত। গত বছর পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল ভারতের তুলনায় ১০ ভাগের এক ভাগ। পাকিস্তানে বিভিন্ন বাহিনীতে প্রায় ৬ লাখ ৬০ হাজার সদস্য রয়েছেন। যার মধ্যে ৫ লাখ ৬০ হাজার সেনাবাহিনীতে, ২৩ হাজার ৮০০ নৌবাহিনীতে এবং ৭০ হাজার বিমানবাহিনীতে।

যুদ্ধক্ষেত্রে ভারতের কাছে প্রায় ৩ হাজার ৭০০ প্রধান যুদ্ধ ট্যাংক রয়েছে বলে মনে করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে অর্জুন, টি-৭২ এবং টি-৯০ মডেল। পাকিস্তানে প্রায় ২ হাজার ৫০০টি আছে, যার মধ্যে রয়েছে আল-খালিদ, টি-৮০, টি-৫৪-৫৫, টাইপ-৫৯/আল জারার, টাইপ-৬৯ এবং টাইপ ৮৫ মডেল।

ভারতের কাছে ডাসল্ট রাফালে যুদ্ধবিমান, সুখোই এসইউ-৩০ এবং মিগ-২৯, মিগ-২৭ এবং মিগ-২১ যুদ্ধবিমান রয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের কাছে জে-১০ এবং জেএফ-১৭ রয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের এফ-১৬, মিরেজ থ্রি এস, মিরেজ-৫ এস রয়েছে। এ ছাড়া দুই দেশ পারমাণবিক অস্ত্রের ক্ষেত্রে কাছাকাছি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের প্রথাগত সামরিক সক্ষমতা যা-ই থাকুক না কেন, আকাশ নিয়ন্ত্রণে অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে পাকিস্তান। সে তুলনায় অনেক পিছিয়ে ভারত। ড্রোন ও মিসাইলের আকাশযুদ্ধের ওপর এখন যে কোনো যুদ্ধের সাফল্য নির্ভর করে। সামরিক শক্তি হিসেবে পাকিস্তানের এই উত্থান দক্ষিণ এশিয়ায় ভারসাম্য আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

 

খুলনা গেজেট/এইচ

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!