আবারও পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি জেলায় হামলা চালিয়েছে ‘সন্ত্রাসীরা’। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন। পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে বৃহস্পতিবার একাধিক যাত্রীবাহী গাড়িতে এলোপাতাড়ি গুলি চালালে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ খবর দিয়েছে ভয়েস অব আমেরিকা। এতে বলা হয়, এই হামাল আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী কুররম অঞ্চলে হয়েছে বলে সংবাদদাতাদের নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী মহসিন নকভি। জেলা পুলিশ ও হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে নিরাপত্তা কর্মকর্তা, নারী ও শিশুরা রয়েছে এবং তাদের আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। তারা আরও বলেছেন, আততায়ীদের খুঁজে বের করতে পুলিশ এই অঞ্চলে অভিযান শুরু করেছে। পাকিস্তানের এই জেলা প্রবলভাবে সশস্ত্র শিয়া ও সুন্নি মুসলিমদের মধ্যে সম্প্রদায়গত সহিংসতার জন্য পরিচিত হলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো গোষ্ঠী এই হত্যাকাণ্ডের দায় নেয়নি।
কুররমের কর্মকর্তারা সর্বশেষ গোষ্ঠীগত অস্থিরতার জন্য জমি নিয়ে বিবাদ ও বিতর্ককে দায়ী করেছেন; আগস্ট ও অক্টোবরের মধ্যে এই বিবাদের ফলে কয়েক সপ্তাহ ধরে সশস্ত্র সংঘর্ষ চলে এবং এতে ১০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়। খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি জেলায় গত কয়েক সপ্তাহে একাধিক সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ২০ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়েছেন। এমনই এক আবহে বৃহস্পতিবারের এই সহিংসতার ঘটনাটি ঘটলো।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, শুধু চলতি মাসেই দেশজুড়ে একাধিক সন্ত্রাসী হামলায় ৬০ জনের বেশি নিরাপত্তা কর্মী হারিয়েছে পাকিস্তান।
সাম্প্রতিক কয়েক বছরে অধিকাংশ সহিংসতার দায় স্বীকার করেছে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপি। অনেক ক্ষেত্রে এই গোষ্ঠীকে দায়ী করা হয়েছে। জাতিসংঘ এই গোষ্ঠীকে বৈশ্বিক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে এবং ইসলামাবাদ বলছে, আফগান ‘অভয়াঞ্চল’ থেকে তাদের দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালাচ্ছে টিটিপি।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুমতাজ বালোচ বৃহস্পতিবার তার সরকারের দীর্ঘদিনের অভিযোগের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং পুনরায় জোর দিয়ে বলেছেন, আফগান ভূখণ্ড থেকে যে সব ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ কার্যকলাপ চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের তালেবান কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ নেওয়া একান্ত জরুরি। তালেবান নেতাদের দাবি, তারা টিটিপি-সহ কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আশ্রয় দিচ্ছেন না বা আফগান মাটি থেকে প্রতিবেশী দেশগুলোকে হুমকি দেওয়ার জন্য কাউকে সুযোগ দিচ্ছেন না।
খুলনা গেজেট/এনএম