পাইকগাছা পৌরসভার জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসনের লক্ষে সরকারি জমির অবৈধ দখল ও স্থাপনা চিহ্নিত করতে জরিপ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ হেলাল হোসেন এর নির্দেশনায় শনিবার থেকে জরিপ কার্যক্রম শুরু করেছেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মাদ আরাফাতুল আলম। পৌরসভা, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জরিপ কাজে সহযোগিতা করছেন।
উল্লেখ্য, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক ও জনপদ বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরের পৌর এলাকার মধ্যে বিপুল পরিমান সরকারি জমি রয়েছে। এর মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠানের জমি বেদখল হয়ে গেছে। সরকারি খালগুলো বাঁধ ও নেটপাটা দিয়ে মৎস্য চাষ করা হচ্ছে।
অপরদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের জমিতে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। ফলে একদিকে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। অপরদিকে তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারি জমি বে-দখল হওয়ার পাশাপাশি জনভোগান্তি বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসনের একটি অনুষ্ঠানে খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ হেলাল হোসেন পৌর এলাকার সকল শ্রেণীর সরকারি জমি ও অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করার জন্য এসিল্যান্ডকে জরিপ করার জন্য নির্দেশনা দেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা মোতাবেক সহকারি কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মাদ আরাফাতুল আলম শনিবার থেকে জরিপ কাজ শুরু করেছেন। এদিন তিনি শিববাটি মৌজার জরিপের কাজ করেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার প্যানেল মেয়র এসএম ইমদাদুল হক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারি প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দীন ও সার্ভেয়ার কাওছার আহমেদ। দেরিতে হলেও সরকারি জমি চিহ্নিত করতে জরিপ কাজ শুরু করায় জেলা, উপজেলা ও ভুমি প্রশাসনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
খুলনা বাস মালিক সমিতির সদস্য সচিব মোঃ আব্দুল গফফার মোড়ল জানান, এলাকায় কোন টার্মিনাল না থাকায় আমরা অনেকটাই নিরুপায় হয়ে সড়কের উপর বাস রেখে থাকি। যার কারনে প্রধান সড়কে মাঝে মধ্যে যানজট সৃষ্টি হয়। অথচ জিরো পয়েন্ট থেকে শিববাটি ব্রিজ অভিমূখে সড়ক ও জনপদ বিভাগের সড়কের দু’পাশে প্রচুর সরকারি জমি রয়েছে যেখানে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। জরিপের মাধ্যমে এসব সরকারি জমি চিহ্নিত করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা গেলে পৌর এলাকার যানজট অনেকাংশে কমে আসবে।
পাইকগাছা নাগরিক কমিটির সভাপতি মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর জানান, প্রশাসন নিঃসন্দেহে এটি একটি ভালো উদ্যোগ নিয়েছে আমরা নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে এ উদ্যোগের সফলতা কামনা করছি। জরিপের সাথে সাথে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও সরকারি জমি উদ্ধার করতে পারলে সাধারণ মানুষ এর সুফল পাবে।
সহকারি কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মাদ আরাফাতুল আলম জানান, এক মাসের মধ্যেই জরিপ কাজ শেষ করার জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশনা রয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জরিপ কাজ শেষ করতে পারবো বলে আশা করছি। জরিপ কাজ শেষ হলে এটি প্রতিবেদন আকারে জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবর পাঠানো হবে। এরপর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও সরকারি খাল দখলমুক্ত করতে পারলে পৌর এলাকার জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ভূমি প্রশাসনের এ কর্মকর্তা।
খুলনা গেজেট/এনএম
