খুলনার পাইকগাছায় জোনাকী গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের আদায়কারীর বিরুদ্ধে গ্রাহকের দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন একই সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী গাজী। বৃহস্পতিবার পাইকগাছা থানায় অভিযোগটি দায়ের করেন তিনি।
তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে পৌরসভার (৪,৫ ও ৬ সংরক্ষিত) কাউন্সিলর ও জোনাকী গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির আদায়কারী কবিতা রানী উল্টো সমিতির সভাপতি ও পরিচালককে দায়ী করছেন।
জোনাকী গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির সভাপতি লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০১০ সালে সমিতির আদায়কারী হিসেবে কবিতা রানী দাসকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি সঠিকভাবে হিসাব প্রদান করলেও তার পরে আর সঠিকভাবে কোন হিসাব দেননি।
এদিকে গ্রাহকরা পাওনা টাকা আদায়ে জোর চাপ সৃষ্টি করায় আদায়কারীর কাছে বার বার হিসেব চাইলেও তা না দেওয়ায় গ্রাহকদের পাওনা কোটি কোটি টাকাও পরিশোধ করতে পারছেনা সমিতি কতৃপক্ষ বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি সমিতির অপর এক আদায়কারী মোছাঃ ছালমা বেগমের বাড়িতে গিয়েও কবিতা রানী আত্মসাৎকৃত অর্থের বিবরণ সম্বলিত কাগজপত্র সরাতে তাকে সহায়তার প্রস্তাবও দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কবিতা রানী তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে উল্টো অভিযোগ করে বলেন, তিনি প্রতিদিনের হিসেব যথা সময়ে সভাপতি ও পরিচালকের নিকট বুঝিয়ে দিয়েছেন। বরং তারা নিজেরা টাকা আত্মসাৎ করে দোষ তার উপর চাপানোর অপচেষ্টা করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
পাইকগাছা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, আমরা টাকা আত্মসাৎ অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক বিস্তারিত জানানো হবে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার জামানতের টাকা তুলতে না পেরে পাওনা টাকা ফিরে পেতে পৌরসদরের সরল বাজারস্থ জোনাকী গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির অস্থায়ী কার্যালয় ঘেরাও করে সমিতির সদস্যরা। ওই দিন সকাল থেকে জামানতের টাকার দাবীতে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় সমিতির নির্বাহী মোঃ আলাউদ্দীন গাজী ও সভাপতি মোহাম্মাদ আলীকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল বলেও জানান ভুক্তভোগী সমিতির সদস্যরা। যদিও দু’ মাস পর থেকে গ্রাহকদের টাকা পর্যায়ক্রমে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়ায় তাদেরকে মুক্ত করা হয়।
তবে সর্বশেষ সমিতি সংশ্লিষ্টদের গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে জামানতের পাওনা টাকা ফিরে পাওয়া না পাওয়া নিয়ে গ্রাহকদের মাঝে চরম উত্তেজনা অপর দিকে ভীতিও কাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে জামানতের পাওনা টাকার দাবিতে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকগণ।
খুলনা গেজেট/ টিএ