ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহসভাপতি আতিকুর রহমান রাসেল পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ। পরিবারের সদস্যরা জানান, গত সোমবার রাজধানীর আজিমপুর অগ্রণী স্কুলের সামনে থেকে তাঁকে উঠিয়ে নেয় সাদা পোশাকের লোকজন। এরপর থেকে পরিবার, আত্মীয়স্বজন এমনকি ছাত্রদল ও বিএনপির বিভিন্ন পর্যায় থেকে দৌড়ঝাপ করেও আতিকের সন্ধান পাননি।
বৃহস্পতিবার আতিকের বাবা আবুল হোসেন সরদার লালবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করলেও কোনো প্রতিকার মিলছে না। আবুল হোসেন বিভিন্ন দপ্তরে ছোটাছুটি করেও কোনো কূলকিনারা করতে পারেননি। তিনি বলেন, সন্তানকে খুঁজে পেতে অনেক চেষ্টা করছেন। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো কিছু বলা হচ্ছে না।
আতিকের বড় ভাই ইটালী প্রবাসী সরদার মেহেদী হাসান পলাশ জানান, তারা মাকে হারানোর পর বাবার কাছেই আতিক বড় হয়েছে। পাঁচ দিন ধরে ছোট ছেলেকে কাছে না পেয়ে তাঁর বাবা এখন শয্যাশায়ী। সারাদিন শুধু জায়নামাজে বসে কান্নাকাটি করছেন। খাওয়াদাওয়া বন্ধ। এখন মনে হচ্ছে, এ দেশে বিএনপি করাটাই অপরাধ।
তিনি বলেন, আতিকের নামে ছয় বছর আগের একটি রাজনৈতিক মামলা আছে। সেই মামলায় তিনি জামিনে আছেন। তাহলে কোন কারণে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা নিয়ে তারা অন্ধকারে আছেন। আতিকের হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার এখনও খোলা আছে। সেখানে কল করলে রিসিভ করা হয় না, তবে মেসেজ দিয়ে বলা হয়েছে কল দিবেন না।
বিএনপির অভিযোগ, গত মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে শ্যামলীর ঢাকা শিশু হাসপাতাল থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মারজুক আহমেদ আল আমিনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে যায়। মারজুক তাঁর ভাইয়ের অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। একই দিন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের সামনে থেকে গোয়েন্দা পুলিশ কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জহির হাসান মোহনকে তুলে নিয়ে যায়। দুই দিন পর গত বৃহস্পতিবার তাদের দু’জনকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে গত ২৫ জুন নয়াপল্টনে ককটেল হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এদিকে গত রোববার সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক কামরুজ্জামানকে তাঁর নিজ বাড়ি থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে যায়। পাঁচ দিন পর বৃহস্পতিবার তাঁকে একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তাঁর স্ত্রী ফাতেমা বেগম।
খুলনা গেজেট/এএজে