গত দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যকে করায়ত্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপি; আর এক্ষেত্রে রণকৌশল হিসেবে রাজ্যের বিধানসভা ও লোকসভা আসনগুলো দখলে বিশেষ মনযোগী দলটির হাইকমান্ড।
তবে বিজেপির গত দেড় যুগের এই নিবিড় প্রচেষ্টায় কাজের কাজ তেমন হচ্ছে না। গত ১০ বছরে রাজ্যে যত নির্বাচন হয়েছে, প্রত্যেকটিতেই ভূমিধস জয়ের ঘোষণা দিয়েছে বিজেপি; কিন্তু ভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা গেছে, একের পর এক প্রার্থীর হেরে যাওয়ার কারণে লক্ষ্যের ধারে কাছেও যেতে পারেনি দলটি।
এবারের নির্বাচনেও সম্ভবত তেমনই ঘটতে যাচ্ছে, অর্থাৎ অতীতের পুনরাবৃত্তি। নির্বাচন কমিশনের প্রাথমিক ফলাফলে জানা গেছে, রাজ্যের ৪২টি সংসদীয় আসনের ৩১টিতেই জিততে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস, ১০টিতে বিজেপি এবং একটিতে কংগ্রেস।
বিজেপির এই ফলাফল বিগত ২০১৯ সালের নির্বাচনী ফলাফলের চেয়ে খারাপ। ওই নির্বাচনে ২২টি আসনে জিতেছিল তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি জিতেছিল ১৮টি আসনে।
আজ বুধবার নির্বাচন কমিশন এ পর্যন্ত যে ফলাফল প্রকাশ করেছে, তা বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের অনেক নতুন প্রার্থীর সামনে পিছিয়ে পড়ছেন বিজেপির অভিজ্ঞ প্রার্থীরা। জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’খ্যাত সাবেক চলচ্চিত্র নায়িকা রচনা ব্যানার্জি এই প্রথম নির্বাচনে প্রার্থিতা করছেন। তার প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী আরেক সাবেক চলচ্চিত্র অভিনেত্রী লকেট চ্যাটার্জি। হুগলিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা।
রচনার জন্য এটি প্রথম নির্বাচন হলেও লকেট চ্যাটার্জি এই নিয়ে তৃতীয়বার ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন। নির্বাচন কমিশনের প্রাথমিক ফলাফল বলছে, এখন পর্যন্ত হুগলিতে লকেটেরে চেয়ে ৫ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন রচনা।
মালদা দক্ষিণে কংগ্রেসের প্রার্থী ইশা খান চৌধুরীর চেয়ে ১১ হাজার ৭৩৩ ভোটের ব্যবধানে পিছিয়ে আছেন বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। যাদবপুর আসনের তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষ প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গাঙ্গুলীর চেয়ে ৮ হাজার ৪৮ ভোটে এগিয়ে আছেন।
মালদা উত্তরে অবশ্য বিজেপি প্রার্থ খগেন মুর্মু প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন ব্যানার্জীর চেয়ে ১১ হাজার ১১৯ ভোটে এগিয়ে আছেন। তবে কুচবিহারের এমপি নিশীথ প্রামাণিক তার প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনয়িার থেকে ৫ হাজার ৫২৯ ভোটে পিছিয়ে আছেন এখনও।
কৃষ্ণনগর আসনের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র তার বিজেপি প্রতিদ্বন্দ্বী অমৃতা রায়ের থেকে ১২ হাজার ভোটে পিছিয়ে আছেন। আবার বশিরহাটে বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের চেয়ে ৮ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে আছেন তৃণমূল পার্থী শেখ নুরুল ইসলাম।
খুলনা গেজেট/এএজে