খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  চট্টগ্রামে পটিয়ায় বাস-সিএনজি অটো রিকশা সংঘর্ষে নিহত ২
  রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত
  জাতীয় পতাকার নকশাকার, জাসদ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন

পদ্মা সেতু স্বর্ণ দুয়ার খুলে দিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

গেজেট ডেস্ক

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বর্ণ দুয়ার উন্মোচন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) রাতে একাদশ জাতীয় সংসদের ১৮তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে সংসদ নেতা বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু শুধু দক্ষিণ অঞ্চলের যোগাযোগ নয়; অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ যাতে আরও উন্নতি করতে পারে তার স্বর্ণ দুয়ার খুলে দিয়েছে। এই যোগাযোগ ব্যবস্থা দেশে আমদানি-রপ্তানি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে।’

প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়েছে। এই টাকা সেতু কর্তৃপক্ষ অর্থ বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করে ঋণ নিয়েছে। এক শতাংশ সুদের এই ঋণ সেতু কর্তৃপক্ষ ২৫ বছরে সরকারকে ফেরত দেবে।

তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর ফিজিবিলিটি স্টাডিতে টোল আদায়ের যে প্রজেকশন ছিল সে অনুসারে ২৫ থেকে ২৬ বছরে সেতু নির্মাণ ব্যয় উঠে আসার প্রস্তাব ছিল। এই সেতুর যোগাযোগ আরও বিস্তৃত হবে। সে কারণে নির্মাণে ব্যয় হওয়া টাকা আরও অনেক আগেই আমরা তুলে ফেলতে পারব। আশা করি ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এই টাকা উঠে আসবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের সফল সমাপ্তিতে আমাদের বেশকিছু প্রাপ্তি যোগ হবে। এই সেতুর কারণে জিডিপি প্রবৃদ্ধি আরও বাড়বে বলে বিশ্বাস করি। জাতিকে মতপার্থক্য ভুলে একতাবদ্ধ হওয়ার অনুপ্রেরণা যোগাবে। আত্মসম্মানবোধে সচেতন করে তুলবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে আমাদের মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনা ও চুক্তি সম্পাদনে স্বকীয়তা বজায় রাখতে উদ্বুদ্ধ করবে। যে কোনো মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়নে আমাদের ব্যবস্থাগত ত্রুটি ও অভিজ্ঞতার ঘাটতি পূরণ করবে।

‘এশিয়ান হাইওয়ে বাস্তবায়নে যে মিসিং লিংক ছিল পদ্মা সেতু সেই ঘাটতি পূরণ করে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে। একটু অবকাঠামোয় এতো বেশি ফরওয়ার্ড লিংকেজ সত্যি বিষ্ময়কর।

‘এশিয়ান হাইওয়ে এবং ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে বাস্তবায়নে পদ্মা সেতু একমাত্র মিসিং লিংক ছিল। এই সেতুর মাধ্যমে হাইওয়ে ও রেল লিংকের ক্ষেত্রে পূর্ব দিকে ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া থেকে সিঙ্গাপুর পর্যন্ত সংযুক্ত হওয়া যাবে। অন্যদিকে ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরান, তুরস্কসহ ইউরোপের সঙ্গেও সংযুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রেও কোনো বাধা থাকবে না। নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগ আরও বাড়বে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় বড় বাধা ছিল প্রমত্তা পদ্মা। কৃষক, ব্যবসায়ী কেউ নিজ নিজ পণ্য বাজারজাত করা বা সঠিক মূল্য পেত না। পদ্মা সেতু সেই অবস্থায় আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসবে। বাংলাদেশ বিশ্বে নতুন উচ্চতায় নিজেদের স্থান করে নিয়েছে এই সেতু নির্মাণের মাধ্যমে। আগে যারা অবহেলার চোখে দেখত এখন দেখে না, দেখবে না। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাবে দেশ।’

বন্যাদুর্গত সিলেট অঞ্চলে ত্রাণ ও পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, ‘সিলেট বিভাগ ও নেত্রকোনা জেলায় বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় ত্রাণ দেয়া হয়েছে। চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুনর্বাসন কাজও চলছে।’

আগামীতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বন্যার আশংকা রয়েছে উল্লেখ করে দক্ষিণাঞ্চলে সরকার সেই বন্যা মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বলেও জানান তিনি। পদ্মা সেতু এই বন্যা মোকাবিলায় সহায়তা করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সম্প্রতি লঞ্চ ও ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডসহ নানা বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে সরকার। এসব ঘটনায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তদন্তও চলছে।’

সমাপনী বক্তব্যে সংসদের এবারের অধিবেশন বেশ প্রাণবন্ত ছিল বলে উল্লেখ করেন সংসদ নেতা।

স্পিকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলকে যথেষ্ট সুযোগ দিয়েছেন। বিশেষ করে বিএনপি নেতারা যথেষ্ট সময় বক্তব্য রাখার সুযোগ পেয়েছেন। আমাদের যারা অফিসিয়াল বিরোধী দল তারাও আলোচনা করেছেন।

‘আমাদের বিরোধী দলের নেতা সংসদে বক্তব্য দিয়ে গেছেন। তিনি একইসঙ্গে বাজেট ‌ও অধিবেশনের সমাপনী ভাষণ দিয়েছেন।

‘২২৮ জন সংসদ সদস্য বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। ৩৮ ঘণ্টা ৫৭ মিনিট আলোচনা হয়েছে। আমাদের টার্গেট ছিল ৪০ ঘণ্টা। তার প্রায় কাছাকাছি সম্পন্ন হয়েছে। সংসদে বাজেট আলোচনায় যারা অংশ নিয়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ।’




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!