বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, আজ সন্ধ্যার মধ্যে পদত্যাগ করবো।
শনিবার (১০ আগস্ট) দুপুর ১টার ৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি পদত্যাগের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সন্ধ্যার মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেবো।’
এর আগে সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্যদের পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেন। পরে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে এসে জড়ো হতে থাকে। সেখানে তারা বিভিন্ন রকম স্লোগান দেওয়া শুরু করে।
এসময় শিক্ষার্থীদের ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’, ‘দফা এক দাবি এক, বিচারপতির পদত্যাগ’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘শেখ হাসিনার দালালি, চলবে না চলবে না’ স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিরা দুপুর ১টার মধ্যে পদত্যাগ না করলে তার পরিণতি হবে শেখ হাসিনার মতো। আমরা প্রধান বিচারপতিসহ দলবাজ বিচারপতিদের বাসভবন ঘেরাও করে পদত্যাগে বাধ্য করবো। দলবাজ বিচারপতিদের সরিয়ে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে ফ্যাসিবাদের মূল উৎপাটন করা হবে।
হাসনাত বলেন, ছাত্র-জনতার যে গণবিপ্লব সংঘটিত হয়েছে সেটাকে বিতর্কিত করার নানা প্রচেষ্টা চলছে। আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ক্যু করার প্রচেষ্টা দেখেছি। মিলিটারি ক্যু, এডমিনিস্ট্রেটিভ ক্যু এবং আজকে জুডিশিয়ারি ক্যু করার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। আমরা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ চেয়ে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম, সেই বিচারপতি অন্যান্য বিচারপতিদের নিয়ে এক ধরনের ডিজিটাল ক্যু করার চেষ্টা করেছে। ছাত্র-জনতা এই প্রচেষ্টাকে শক্ত হাতে প্রতিহত করবে।
ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা রাজপথ দখল করুন। আপনাদের পার্শ্ববর্তী জেলা কোর্ট, হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট ঘেরাও করুন। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতিরা পদত্যাগ না করছে, জুডিশিয়ারি ক্যু করার ষড়যন্ত্র যতক্ষণ না তারা প্রত্যাহার করছেন ততক্ষণ পর্যন্ত ছাত্র-জনতা রাজপথে থাকবে।
এদিকে সকালে সব বিচারপতির অংশগ্রহণে প্রধান বিচারপতির ডাকা সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভা স্থগিত ঘোষণা করা হয়। জানা যায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে কীভাবে আদালত পরিচালনা করা যায় ও বিবিধ বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য সকাল সাড়ে ১০ টায় ফুলকোর্ট সভা ডেকেছিলেন প্রধান বিচারপতি।
এর আগে বিচারপতিকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যায়িত করে তার পদত্যাগ দাবি ও ফুলকোর্ট সভা বন্ধের আল্টিমেটাম দেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।
সূত্র : ঢাকা পোস্ট।
খুলনা গেজেট/এনএম